দীর্ঘদিন ধরে জেল হেফাজতে থাকা মোট সাত জনকে মুক্তি দিয়ে চর্চার কেন্দ্রবিন্দুতে ইরান সরকার। প্রতীকী ছবি।
হিজাব বিতর্ক দানা বাঁধার পর থেকে আন্দোলনকারীদের উপর নির্বিচারে গুলি চালানোর পাশাপাশি ব্যাপক ধরপাকড় এবং মৃত্যুদণ্ডের জন্য বার বার শিরোনাম উঠে এসেছে ইরান সরকার। সেই বিতর্কের মাঝে দীর্ঘদিন ধরে জেল হেফাজতে থাকা দুই মানবাধিকার কর্মীর পাশাপাশি বেশ কয়েক জন মহিলা আন্দোলনকারী এবং সাংবাদিক মিলিয়ে মোট সাত জনকে মুক্তি দিয়ে চর্চার কেন্দ্রবিন্দুতে ইরান সরকার।
স্থানীয় এক সংবাদপত্রের প্রতিবেদন অনুযায়ী, শুক্রবার যাঁরা মুক্তি পেয়েছেন তাঁদের মধ্যে রয়েছেন চিকিৎসক তথা মানবাধিকার কর্মী ফারহাদ মেসামি। ইরানের কট্টরপন্থী প্রশাসনিক নীতির বিরোধিতা করায় ২০১৮ সালের জুলাইয়ে গ্রেফতার করা হয়েছিল তাঁকে। মেসামির আইনজীবী জানান, হিজাব আন্দোলন দমন করতে প্রশাসনের কড়া পদক্ষেপের বিরোধিতা করে গত কয়েক সপ্তাহ ধরে খাওয়াদাওয়া বন্ধ করে দিয়েছিলেন তিনি। তবে সে কারণেই তাঁকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে কি না, তা স্পষ্ট নয়।
অন্য দিকে, গত বছর ৫ ডিসেম্বর গ্রেফতার করা হয়েছিল রাজনৈতিক আন্দোলনকারী তথা সাংবাদিক হোসেনি ইয়াজ়ডিকে। এক বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয় তাঁকে। সঙ্গে মুক্তির পরেও দু’বছর দেশ ছাড়ার উপরেও নিষেধাজ্ঞা চাপানো হয় ‘মোবিন ২৪’ নামক এক ওয়েবসাইট এবং ইরান টাইমস নিউজ় চ্যানেলের ম্যানেজার ইয়াজ়ডির উপরে। শুক্রবার মুক্তি পেয়েছেন তিনিও।
এ ছাড়াও ছাড়া পেয়েছেন ২০১৯ সাল থেকে জেলবন্দি থাকা আন্দোলনকারী সাবা কোরদাফশারি। বাধ্যতামূলক হিজাব পরার বিরুদ্ধে সুর চড়ানোর জেরে প্রশাসনের রোষের মুখে পড়তে হয় তাঁকে। মুক্তি দেওয়া হয়েছে পরিচিত আলোকচিত্রী আলিয়ে মোতালেবজ়াদেকেও। চলতি মাসে ইরানের শীর্ষ নেতা আয়াতোল্লা আলি খামেনেই বলেছিলেন, বড় সংখ্যক কয়েদিদের ‘ক্ষমা’ করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তিনি। তালিকায় হিজাব আন্দোলনের সঙ্গে জড়িত বেশ কয়েক জনেরও থাকার সম্ভাবনা রয়েছে। সেই প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়িত করতেই এই মুক্তির হিড়িক কি না, তা অবশ্য স্পষ্ট করা হয়নি প্রশাসনের তরফে।