হিজাব-বিরোধী আন্দোলনে যোগ দেওয়ার ‘অপরাধে’ অন্তত ৪০০ জন বিক্ষোভকারীকে দশ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড দিল তেহরানের আদালত। —ফাইল ছবি
হিজাব-বিরোধী আন্দোলনে যোগ দেওয়ার ‘অপরাধে’ অন্তত ৪০০ জন বিক্ষোভকারীকে দশ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড দিল তেহরানের আদালত। তেহরানের বিচারবিভাগীয় প্রধান আলি আলঘাসি-মেহর জানিয়েছেন এই কথা। তবে এর থেকেও বেশি আতঙ্ক তৈরি হয়েছে প্রাণদণ্ড নিয়ে। ২০ নভেম্বর ইরানের রেভলিউশনারি কোর্ট মহসেন শেকারি নামে এক যুবককে ফাঁসির সাজা দিয়েছিল। এ বার আর এক যুবক, মাজিদরেজা রাহনাভার্দকেকে প্রকাশ্য রাস্তায় ফাঁসিকাঠে ঝোলাল সরকার। এর পর কে? আর কত জন? সন্ত্রস্ত্র ইরানবাসী।
হিজাব ঠিক করে না পরায় গত ১৬ সেপ্টেম্বর এক কুর্দিশ তরুণী মাহসা আমিনিকে গ্রেফতার করেছিল ইরানের নীতি-পুলিশ। পুলিশি হেফাজতে তাঁর মৃত্যু হয়। এর পরেই ইরান জুড়ে শুরু হয় হিজাব-বিরোধী আন্দোলন। মহিলাদের পাশাপাশি পুরুষেরাও মিছিলে পা মেলান। ইরান সরকার গোড়া থেকেই কড়া হাতে আন্দোলন দমন করছে। তারই পদক্ষেপ হিসেবে ফাঁসি দেওয়া হয়েছিল মহসেনকে। সেটিই ছিল প্রথম ফাঁসি। তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ, তেহরানের রাস্তায় বিক্ষোভ দেখানোর সময়ে তিনি আধাসামরিক বাহিনীর এক জওয়ানকে হত্যা করেন।
সাম্প্রতিক ফাঁসির ঘটনাটিতে ২৩ বছরের যুবক মাজিদরেজাকে প্রকাশ্য রাস্তায় ক্রেন থেকে ঝুলিয়ে দেওয়া হয়েছে। গত মাসে গ্রেফতার করা হয়েছিল। ছেলের সঙ্গে দেখা করার জন্য তাঁর মাকে অনুমতি দেওয়া হলেও ফাঁসি হবে যে, তা জানানো হয়নি। ছেলেকে দেখে হাসিমুখেই ফেরেন তিনি। পরের সকালে ফাঁসি হয়ে যায়। সরকার-ঘনিষ্ঠ একটি সংবাদ সংস্থা জানিয়েছে, হাত-পা বেঁধে, মাথা কালো ব্যাগ দিয়ে ঢেকে ক্রেন থেকে ঝোলানো হয়েছিল মাজিদরেজাকে। ফাঁসির ছবিও প্রকাশ করে তারা।
আর কত জনকে এ ভাবে প্রাণদণ্ড দেওয়া হবে, তা জানানো হয়নি। তবে কারাদণ্ড নিয়ে ঘোষণা করা হয়েছে সরকারের পক্ষ থেকে। এটা শুধু তেহরানে সাজার সংখ্যা। মানবাধিকার সংগঠনগুলির আনুমানিক হিসেব, ১৪ হাজারেরও বেশি মানুষকে গ্রেফতার করা হয়েছে।