(বাঁ দিকে) বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু এবং আয়াতোল্লা আলি খোমেইনি (ডান দিকে)। — ফাইল চিত্র।
ক্রমশ জটিল হচ্ছে পশ্চিম এশিয়ার পরিস্থিতি। ইজ়রায়েলের উপর প্রত্যাঘাতের হুঁশিয়ারি আগেই দিয়ে রেখেছে ইরান। তার পর থেকেই ইরান-ইজ়রায়েল যুদ্ধের আবহ তৈরি হয়েছে। সোমবারই হয়তো ইজ়রায়েলের উপর হামলা করতে পারে ইরান। এমনই সম্ভাবনার কথা শোনালেন আমেরিকার বিদেশমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন। সংবাদমাধ্যম ‘অ্যাক্সিওস’ এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, অ্যান্টনি জি৭ গোষ্ঠীর সমস্ত সদস্যকে এই হামলার বিষয়ে সতর্ক করেছেন।
ইজ়রায়েলের প্রথম সারির সংবাদপত্র ‘টাইমস অফ ইজ়রায়েল’-এর একটি প্রতিবেদন অনুযায়ী, ইজ়রায়েল সরকার পাল্টা হামলা চালাতে পারে ইরানের উপর। সেই নিয়ে পরিকল্পনাও চলছে। ইজ়রায়েলের মাটিতে ইরানি হামলা প্রতিরোধ করতেই পাল্টা হামলার পরিকল্পনায় অনুমোদন দিতে পারেন প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু। ওই প্রতিবেদনে আরও জানানো হয়েছে, সম্প্রতি নেতানিয়াহু একটি উচ্চপর্যায়ের বৈঠক করেছেন। সেই বৈঠকে ছিলেন ইজ়রায়েলের দুই গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদ এবং শিন বেটের প্রধানেরা। এ ছাড়াও দেশের প্রতিরক্ষামন্ত্রীও উপস্থিত ছিলেন সেই বৈঠকে। সেখানেই পাল্টা হামলার ব্যাপারে আলোচনা হয়েছে।
হামাস গোষ্ঠীর শীর্ষনেতা ইসমাইল হানিয়ার মৃত্যুর পর থেকেই পশ্চিম এশিয়ার কূটনৈতিক পরিস্থিতি পাল্টাতে শুরু করে। তার আগে হিজ়বুল্লার অন্যতম নেতা ফুয়াদ শুক্রের মৃত্যু হয়। দুই গোষ্ঠীর দুই শীর্ষনেতার মৃত্যুর নেপথ্যে ইজ়রায়েলি সেনার হাত রয়েছে বলে দাবি করে ইরান। তার পরই তারা ইজ়রায়েলে ঢুকে হামলা চালানোর হুঁশিয়ারি দিয়ে রেখেছে। ইতিমধ্যেই ইজ়রায়েলের উপর নতুন করে রকেট হামলা শুরু করেছে লেবাননের সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজ়বুল্লা।
ইজ়রায়েল এবং প্যালেস্টাইনি সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাসের মধ্যে যুদ্ধ চলছিলই। তাতে অন্যান্য গোষ্ঠীর ইন্ধনও ছিল। কখনও কখনও সক্রিয় ভাবেও হামাসের পাশে দাঁড়িয়ে ইজ়রায়েলকে আক্রমণ করেছে লেবাননের হিজ়বুল্লা বা ইয়েমেনের হুথিরা। কিন্তু সাম্প্রতিক ঘটনাবলি পশ্চিম এশিয়ার যুদ্ধ পরিস্থিতির চরিত্র বদলে দিয়েছে।
ইরানের সমর্থন নিয়েই আশির দশকে তৈরি হয়েছিল লেবাননের হিজ়বুল্লা সংগঠন। পশ্চিম এশিয়ায় ইরানের প্রথম উল্লেখযোগ্য ‘ছদ্ম প্রতিনিধি’ ছিল এই হিজবুল্লা গোষ্ঠীই। কূটনৈতিক মহলে চর্চা, এদের অর্থবল ও অস্ত্রবল উভয়ই জোগান দেয় ইরানের সামরিক বাহিনী। শুধু হিজ়বুল্লা নয়, গাজ়া, সিরিয়া, ইয়েমেন-সহ একাধিক দেশে এমন বেশ কিছু সশস্ত্র গোষ্ঠী রয়েছে, যারা বকলমে ইরানের হয়েই কাজ চালাচ্ছে। ফলে ইরান যদি সত্যি সত্যি ইজ়রায়েলের উপর হামলা চালায়, সে ক্ষেত্রে পশ্চিম এশিয়ায় ইরানের বন্ধু রয়েছে অনেক। ইজ়রায়েলও তাই নিজের মতো করে ঘুঁটি সাজানোর কাজ শুরু করে দিয়েছে। তাদের সঙ্গে রয়েছে আমেরিকার সমর্থনও।