শিল্পপতি গৌতম আদানি। ফাইল চিত্র।
দ্বীপরাষ্ট্র শ্রীলঙ্কার উপকূলে বিদ্যুৎকেন্দ্র তৈরি করতে চলেছেন শিল্পপতি গৌতম আদানি। বর্তমানে রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক ডামাডোল চলা ভারত মহাসাগরের এই দ্বীপটির উত্তরে পুনেরিনের কাছে এই বিদ্যুৎকেন্দ্রটি তৈরি হচ্ছে বলে জানা গিয়েছে।
উপকূলবর্তী যে অঞ্চলে এই প্রকল্পটি তৈরি করা হচ্ছে, সেখানে মূলত মৎস্যজীবীরা বসবাস করেন। প্রায় পরিত্যক্ত এই জায়গাতে বিদ্যুৎকেন্দ্র তৈরি করেই শ্রীলঙ্কায় নিজের বাণিজ্যিক অভিযান শুরু করতে চলেছেন গুজরাতের এই শিল্পপতি। জানা গিয়েছে পুনর্নবীকরণযোগ্য এই বিদ্যুৎকেন্দ্রটি তৈরি করার জন্য ইতিমধ্যেই বিপুল টাকা বিনিয়োগ করেছে আদানি গোষ্ঠী।
আদানি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ‘ঘনিষ্ঠ’ শিল্পপতি হিসাবেই পরিচিত। এই প্রেক্ষিতে রাজনৈতিক এবং অর্থনৈতিক ভাবে অস্থির এই দ্বীপরাষ্ট্রে আদানির এই পদক্ষেপের মধ্যে অন্য তাৎপর্য খুঁজে পাচ্ছেন কেউ। স্মরণাতীত কালের মধ্যে এমন সার্বিক সঙ্কটে আগে কখনও পড়েনি শ্রীলঙ্কা। সে দেশের একটা বড় অংশ এবং দেশ-বিদেশের বহু বিশেষজ্ঞের দাবি, চিনের ঋণের ফাঁদে পা দিয়েই বিপদে পড়েছে শ্রীলঙ্কা। সে দেশের অর্থনীতির উপর বেজিংয়ের প্রভাবের কথা সুবিদিত।
আবার এ-ও সত্য যে, শ্রীলঙ্কার সঙ্কটের পর ভারত যে তাদের পাশে থেকেছে, তা মুক্তকণ্ঠে স্বীকার করেছেন সে দেশের রাষ্ট্রপ্রধান রণিল বিক্রমসিঙ্ঘে। অর্থনীতি এবং কূটনীতির মাধ্যমে কিস্তিমাত করে শ্রীলঙ্কার উপর চিনের প্রভাব কমানোই ভারতের অন্যতম প্রধান লক্ষ্য।
ভারত মহাসাগরের উপরে থাকা শ্রীলঙ্কা ভূ-কৌশলগত কারণেই ভারতের কাছে গুরুত্বপূর্ণ একটা দেশ। নয়াদিল্লির জাতীয় স্বার্থের প্রেক্ষিতে মহাসাগরে অবাধে জাহাজ চলাচলের জন্য শ্রীলঙ্কাকে নিজেদের দিকে আনার যেমন প্রয়োজন রয়েছে, আবার ভারত মহাসাগরে চিনের আগ্রাসন রোখার জন্যও শ্রীলঙ্কাকে দরকার রয়েছে নয়াদিল্লির।
আদানি সংস্থার বার্ষিক সম্মেলনে আগেই স্পষ্ট করেছিলেন যে বিদ্যুৎ, সমুদ্রবন্দর ইত্যাদি ক্ষেত্রে শুধু দেশে নয়, বিদেশেও বিনিয়োগ করবে তারা। তাই আদানির ভিন্দেশে বাণিজ্য সম্প্রসারণ এবং ভারতের কূটনৈতিক স্বার্থ— এই দুইয়ের সম্মিলনে আদানির এই প্রকল্প নয়া কৌতূহল তৈরি করেছে।