ছড়িয়ে রয়েছে বিমানের ধ্বংসাবশেষ। এএফপি-র তোলা ছবি।
বিমানে ছিল প্রায় ৫ লক্ষ ডলার। অক্সবিলের দরিদ্রদের সাহায্যার্থে সেই অর্থ নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল ট্রিগানা এয়ারের এ টি আর ৪২-৩০০ টার্বোপ্রপে। আজ এমনটাই জানিয়েছে জায়াপুরার ডাক বিভাগ।
রবিবার দুপুর আড়াইটে নাগাদ ইন্দোনেশিয়ার পাপুয়া প্রদেশের রাজধানী জায়াপুরা থেকে অক্সিবিলের উদ্দেশে রওনা দেয় বিমানটি। কিন্তু তার আধ ঘণ্টার মধ্যেই এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোলের সঙ্গে ৫৪ জন আরোহী-সহ সেই বিমানটির সব যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। গত বছর থেকে লাগাতার বিমান বিপর্যয়ের তালিকায় নাম জুড়ে যায় এই বিমানের।
ট্রিগানা এয়ারের ডিরেক্টর বেনি সুমারিন্তো জানিয়েছেন, ওই বিমানের সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হওয়ার আধ ঘণ্টার মধ্যেই তাঁরা আর একটি এ টি আর ৪২ পাঠিয়েছিলেন। কিন্তু নিখোঁজ বিমান রহস্যের কিনারা হয়নি। যদিও কয়েক ঘণ্টা পরে পাপুয়ার অক বেপ জেলার গ্রামবাসীরা দাবি করেন, সেখানেই বিনতাং পাহাড়ে ভেঙে পড়েছে বিমানটি।
উদ্ধারকারী বিমান থেকে এ টি আর ৪২-৩০০-র ধ্বংসাবশেষ আজ দেখতে পাওয়া গিয়েছে বলে জানিয়েছেন ট্রিগানা এয়ার কর্তৃপক্ষ। ধ্বংসস্তূপ থেকে ক্রমাগত ধোঁয়া উঠছে। তবে এলাকাটি বেশ দুর্গম। খাড়াই পাহাড়। আর ঘন জঙ্গল। তাই ২৫০ জনের উদ্ধারকারী দল রওনা দিলেও এখনও সেখানে পৌঁছতে পারেনি।
তবে ঠিক কী কারণে এই দুর্ঘটনা, তা নিয়ে এখনও ধোঁয়াশা রয়ে গিয়েছে। প্রাথমিক ভাবে মনে করা হচ্ছে, খারাপ আবহাওয়ার ফলেই এই বিমান বিপর্যয়। সেই আবহাওয়ার জন্যই এখনও উদ্ধারকাজ ঠিক ভাবে শুরু করা যায়নি বলে ট্রিগানা কর্তৃপক্ষের মন্তব্য। ইন্দোনেশিয়ার তদন্তকারী সংস্থা দ্য ন্যাশনাল সার্চ অ্যান্ড রেসকিউ এজেন্সির এক কর্তা বলেছেন, ‘‘এখানে আবহাওয়া সব সময় পাল্টাতে থাকে। হয়তো দেখবেন আকাশ পরিষ্কার, খুব গরম, কিন্তু পর মুহূর্তেই নেমে আসতে পারে বৃষ্টি।’’
জায়াপুরা ডাক বিভাগের প্রধান হারিওনো জানিয়েছেন, অক্সিবিলের দরিদ্রদের সাহায্যের জন্য চার জন কর্মী ওই বিমানে প্রায় ৪ লক্ষ ৬৮ হাজার ডলার নিয়ে যাচ্ছিলেন। তবে অক্সবিল থেকে ১২ কিলোমিটার দূরে যেখানে বিমানটি ভেঙে পড়েছে, সেখানে এখনও পৌঁছতে পারেনি উদ্ধারকারী দল। সে কারণেই সরকারি ভাবে মৃতের সংখ্যা নিয়েও কিছুই জানানো হয়নি।
তার ফলেই শুরু হয়েছে বিক্ষোভ। যাত্রীদের আত্মীয়রা আজ ধৈর্য হারিয়ে জায়াপুরা বিমানবন্দরে ট্রিগানা এয়ারের অফিসে ভিড় জমান। তাঁদের সবার এক কথা, ‘‘সুনিশ্চিত তথ্য চাই।’’ রিফান ওয়ে বলেছেন, ‘‘প্রায় বেশ কয়েক ঘণ্টা ধরে আমি এবং আমার পরিবার এখানে অপেক্ষা করছি। আমার ভাই, কেপি দিয়াল, যিনিও ওই বিমানে ছিলেন— তাঁর কী হয়েছে জানতে চাই।’’