ছবি: এএফপি।
সীমান্ত পেরিয়ে সিরিয়ায় তুরস্কের একতরফা সেনা অভিযান নিয়ে ভারত যে ‘চরম উদ্বিগ্ন’, আজ তা স্পষ্ট করল ভারতীয় বিদেশ মন্ত্রক। এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, এতে শুধু এলাকায় শান্তি ও স্থিতিশীলতা ভঙ্গ নয়, সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে লড়াইও কমজোরি হয়ে পড়তে পারে। এখনই অভিযান বন্ধ না-হলে, আগামী দিনে সিরিয়ায় আরও বড়সড় মানবাধিকার সঙ্কট নেমে আসতে পারে বলেও আশঙ্কা নয়াদিল্লির। সিরিয়ার সার্বভৌমত্ব এবং আঞ্চলিক অখণ্ডতা বজায় রাখতে তুরস্ককে সংযত হওয়ার আর্জি জানিয়েছে বিদেশ মন্ত্রক। প্রয়োজনে সব পক্ষকে আলোচনার টেবিলে বসার দাবিও তুলেছে নয়াদিল্লি।
কিন্তু এই সময়ে ভারত হঠাৎ তুরস্কের বিরুদ্ধে সুর চড়াল কেন, তা নিয়েও প্রশ্ন উঠল কূটনৈতিক শিবিরের একাংশ থেকে। তাঁদের দাবি, এর পিছনেও রয়েছে ‘কাশ্মীর’। সেপ্টেম্বরের শেষে নিউ ইয়র্কে রাষ্ট্রপুঞ্জের সাধারণ অধিবেশনে এই তুরস্কই কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা বাতিল নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিল। বলেছিল, ‘‘ভারতের এই পদক্ষেপ অন্যায়।’’ ভারত পাল্টা বিবৃতি দিয়ে জানিয়েছিল, কাশ্মীর একেবারেই ভারতের অভ্যন্তরীণ বিষয়। এ ব্যাপারে কোনও তৃতীয় পক্ষের হস্তক্ষেপ যে বরদাস্ত করা হবে না, সেটাও বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছিল আঙ্কারাকে।
এর আগেও ২০১৭-য় ‘উদ্বেগ’ প্রকাশ করে কাশ্মীর নিয়ে মধ্যস্থতার প্রস্তাব দিয়েছিলেন তুর্কি প্রেসিডেন্ট রিচেপ তায়িপ এর্ডোয়ান। তখনও তা নাকচ করেছিল ভারত। এখন পরিস্থিতি অনেকটাই অন্য রকম। বিশেষত নয়াদিল্লি যখন ওআইসি-ভুক্ত মুসলিম দেশগুলিকে বাণিজ্যিক ভাবে কাছে টানতে চাইছে। সেখানে রাষ্ট্রপুঞ্জের মতো মঞ্চে দাঁড়িয়ে তুরস্কের বেসুরো গাওয়াটা কিছুটা হলেও ভারতের অস্বস্তি বাড়িয়েছে বলে অভিমত রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের। তাই কাশ্মীরের সঙ্গে সিরিয়ার সরাসরি যোগ না-থাকলেও, সুযোগ পেয়ে দিল্লি তাই এ বার আঙ্কারাকে বিঁধতে ছাড়ল না বলে মনে করছেন তাঁরা।