—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
বাংলাদেশের রাস্তায় ফেটে পড়া তুমুল জনরোষের পিছনে ‘বিদেশি শক্তি’র (পাকিস্তান) ইন্ধন রয়েছে বলে মনে করছে নয়াদিল্লি। পাশাপাশি অর্থনৈতিক হতাশার প্রতিফলনও রাস্তার হিংসায় ফুটে উঠেছে বলে তাদের ধারণা।
কোভিডের পর বাংলাদেশের অর্থনীতি যে বিপুল ধাক্কা খেয়েছিল, তা আর সোজা হতে পারেনি বলে মনে করছে নয়াদিল্লির একটি মহল। প্রাক্তন বিদেশসচিব হর্ষবর্ধন শ্রিংলার বক্তব্য, “কোভিডের ধাক্কার পাশাপাশি ইউক্রেন যুদ্ধের খেসারতও দিতে হয়েছে বাংলাদেশকে। নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্য আকাশ ছুঁয়েছে। বিদেশি মুদ্রার আয়-ব্যয়ের ঘাটতি মাত্রা ছাড়িয়েছে। মূল্যবৃদ্ধি কুড়ি শতাংশে পৌঁছেছে।”
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস)-এর ২০২৩ সালের সমীক্ষা অনুসারে, সে দেশে ১৫ থেকে ২৪ বছর বয়স্ক ৩৯ শতাংশেরও বেশি যুবকের চাকরি নেই, মূলস্রোতের শিক্ষা ব্যবস্থাতেও তারা শামিল নয়। অর্থাৎ প্রায় ১ কোটি ২২ লাখ মানুষ কিছুই করছেন না।
অথচ আওয়ামী লীগের দাবি ছিল, দেশে বেকারত্বের হার ৩.৩%। প্রসঙ্গত গত দু’বছরে হাসিনা সরকারের পক্ষ থেকে মূল্যবৃদ্ধি কমানোর চেষ্টা কার্যকর হয়নি। বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠান, বিশেষ করে বাংলাদেশ ব্যাঙ্ক, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতর, কৃষি মন্ত্রণালয়, এনবিআর—এ সবের মাঝে প্রয়োজনীয় সমন্বয় ঘটেনি।
পাশাপাশি হাসিনা সরকার ব্যাঙ্ক থেকে প্রচুর পরিমাণে ঋণ নিয়েছে, কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্ক টাকা ছাপিয়েছে, যা মূল্যবৃদ্ধিকে আরও দিয়েছে। দীর্ঘ সময় মুদ্রা বিনিময়ের হার কৃত্রিম ভাবে ধরে রেখে হঠাৎ বাড়িয়ে দেওয়ার ফলেও বিপদ বেড়েছে বলে মনে করছেন সে দেশের বিশেষজ্ঞরা। বাজারের ব্যবস্থাপনায় যে বড় ধরনের অনিয়ম আছে, তা নিয়ন্ত্রণে আনা যায়নি। বিভিন্ন সময়ে সুযোগসন্ধানী ব্যবসায়ীরা নানা কারণে জিনিসপত্রের দাম বাড়িয়েছে। সেগুলোর বিরুদ্ধেও বড় কোনও পদক্ষেপ হয়নি। পুঞ্জীভূত অর্থনৈতিক হতাশার বিস্ফোরণ রাজপথে ফেটে পড়েছে বলে সংশ্লিষ্ট মহলের মত।