পাক রেলমন্ত্রী শেখ রশিদ আহমেদ। —ফাইল চিত্র
৩৭০ অনুচ্ছেদ বিলোপের পর তিনি বলেছিলেন, ‘‘আমি রেলমন্ত্রী থাকতে ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে কোনও ট্রেন চলবে না।’’ তিনি পাকিস্তানের রেলমন্ত্রী শেখ রশিদ আহমেদ। এ বার সেই পাক রেলমন্ত্রীই কার্যত ভারত-পাক যুদ্ধের দামামা বাজিয়ে দিলেন। ‘‘অক্টোবর-নভেম্বরে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে যুদ্ধ হবে’’— বুধবার রাওয়ালপিন্ডিতে সাংবাদিকদের বলেছেন শেখ রশিদ। এখানেই না থেমে তিনি যোগ করেন, ‘‘এটাই হবে দু’দেশের মধ্যে শেষ যুদ্ধ’’।
৩৭০ অনুচ্ছেদ রদ করে জম্মু-কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা তুলে নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছিল ৫ অগস্ট। তার পরে পরেই বন্ধ হয়ে যায় ওয়াঘা-আটারি সীমান্ত দিয়ে যাতায়াত করা দিল্লি-লাহৌর সমঝোতা এক্সপ্রেস। মুনাবো খোকরাপাড় সীমান্ত দিয়ে যাতায়াতকারী যোধপুর-করাচি থর এক্সপ্রেসও বাতিল ঘোষণা করে ইসলামাবাদ। আর সেই সময়ই পাক রেলমন্ত্রী শেখ রশিদ ঘোষণা করেছিলেন তিনি রেলমন্ত্রী থাকলে দু’দেশের মধ্যে কোনও ট্রেন চলবে না। কিন্তু এ বার সরাসরি যুদ্ধের ভবিষ্যদ্বাণীই করে বসলেন সেই রশিদ।
ঠিক কী বলেছেন তিনি? রাওয়ালপিন্ডিতে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে তিনি বলেন, ‘‘অক্টোবরের শেষে এবং নভেম্বর-ডিসেম্বরে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে যুদ্ধ দেখতে পাচ্ছি। তার জন্য দেশকে তৈরি করছি। মোদীকে চিনতে অনেক বড় বড় নেতা ভুল করেছেন, কিন্তু আমি ভুল করিনি।’’ এখানেই না থেমে তিনি বলেন, ‘‘বর্বর ও ফ্যাসিস্ত নরেন্দ্র মোদীর জন্যই পাকিস্তান ধ্বংসের কিনারায় এসে দাঁড়িয়েছে। মোদীর সামনে পাকিস্তানই একমাত্র বাধা।’’ ধর্মীয় ভাবাবেগ উস্কে দিয়ে রশিদের প্রশ্ন, ‘‘সারা বিশ্বের মুসলমানরা এই ইস্যুতে চুপ কেন?’’
৩৭০ অনুচ্ছেদ রদের পর থেকে মাঝে মধ্যেই গরম গরম মন্তব্য করে দু’দেশের পরিস্থিতিকে উত্তপ্ত করে তুলতে চাইছেন। যুদ্ধের উস্কানিও দিয়ে যাচ্ছেন। সোমবারও তিনি বলেছেন, ‘‘পাক অধিকৃত কাশ্মীরে ভারত হামলা চালালে সেটা হবে সরাসরি যুদ্ধের ঘোষণা। সেই যুদ্ধ শুধু ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকবে না। পাক অধিকৃত কাশ্মীরে হামলা হলে গোটা উপমহাদেশের মানচিত্রই বদলে যাবে।’’
বুধবার আরও এক কয়েক কদম এগিয়ে রশিদ বুধবার বলেন, ২৫ কোটি মুসলমান সম্প্রদায়ের মানুষ পাকিস্তানের দিকে তাকিয়ে রয়েছেন। তাই সমস্ত দ্বিধা-দ্বন্দ্ব সরিয়ে কাশ্মীরের দিকে হাত বাড়াতে হবে আমাদের, কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে লড়তে হবে। না হলে ইতিহাস আমাদের ক্ষমা করবে না।’’
আরও পড়ুন: ‘আমরা জানি কী করতে হবে’, ৩৭০ বিলোপ নিয়ে মন্তব্য সুপ্রিম কোর্টের, মামলা সাংবিধানিক বেঞ্চে
আরও পড়ুন: উর্দি পরে মমতাকে পা ছুঁয়ে প্রণাম, বিতর্কে আইজি রাজীব মিশ্র
৩৭০ অনুচ্ছেদ রদ নিয়ে রাষ্ট্রপুঞ্জের দ্বারস্থ হয়েছে পাকিস্তান। কিন্তু সেখানে কার্যত আমল পাননি ইমরান খান। সেই বিষয় টেনেও রশিদ প্রশ্ন তুলেছেন, রাষ্টপুঞ্জ এ নিয়ে চুপ কেন? কিন্তু কূটনৈতিক মহলে প্রশ্ন উঠেছে, দুই পরমাণু শক্তিধর দেশের মধ্যে এ ভাবে বার বার যুদ্ধের উস্কানি দেওয়া কতটা যুক্তিযুক্ত। পাক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানই বা রশিদকে সতর্ক করছেন না কেন, সেই প্রশ্নও তুলেছেন অনেকে।