কলকাতার চিনা কনসাল জেনারেল মা ঝানয়ু।
চিনের সঙ্গে বাণিজ্য ঘাটতি নিয়ে প্রায়ই সরব হয় ভারত। কিন্তু ভারতীয় ব্যবসায়ী এবং বৃহৎ সংস্থাগুলি কখনওই চিনে গিয়ে ব্যবসা করতে বা রফতানি করতে আগ্রহী হয় না। বৃহস্পতিবার অবজারভার রিসার্চ ফাউন্ডেশনের এক অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন কলকাতার চিনা কনসাল জেনারেল মা ঝানয়ু। তাঁর কথায়, ‘‘সাংহাইতে বিশাল বাণিজ্য সম্মেলন ও পণ্য প্রদর্শনীর আয়োজন হয়েছে। চিন চায়, ভারতের সংস্থাগুলি বেশি করে সেখানে অংশ নিক। সারা পৃথিবীর বিভিন্ন সংস্থা তাদের পণ্য সেখানে প্রদর্শন করে এবং তার পর চিনে তা রফতানি করতে শুরু করে। ভারত চাইলে চিনের বিদেশ ও বাণিজ্য মন্ত্রক ভারতীয় সংস্থাগুলির জন্য বিশেষ ব্যবস্থা নিতেও রাজি। কিন্তু তার পরেও ভারতীয় ব্যবসায়ীদের তাতে কোনও আগ্রহ দেখছি না।’’
চিনা কমিউনিস্ট পার্টির ১৯ তম পার্টি কংগ্রেসের সিদ্ধান্ত এবং বিশ্বব্যাপী তার প্রভাব নিয়ে বক্তৃতা করছিলেন ওই কূটনীতিক। তিনি জানান, এ বারের পার্টি কংগ্রেসে একগুচ্ছ সংস্কার কর্মসূচি হাতে নিয়েছে চিন। ৪০ বছর আগে চিন সংস্কার শুরু করেছিল। সেই সংস্কারই দেশকে এগিয়ে নিয়ে গিয়েছে। বর্তমান পরিস্থিতিতে পার্টির গৃহীত কর্মসূচির বেশ কিছু পরিবর্তন করা প্রয়োজন হয়ে পড়ে। এমন এক পরিস্থিতিতে পাঁচ বছর আগে শি চিন ফিং চিনের প্রেসিডেন্ট পদে বসেন। তিনি সংস্কারে হাত দেন। মা আরও জানান, চিন ফিং যখন দেশ ও দলের দায়িত্ব নিচ্ছেন, তখন কমিউনিস্ট পার্টির বহু সদস্যের মধ্যেও হতাশা জন্মেছিল। অনেকেই ভাবতে শুরু করেছিলেন, চিনা কমিউনিস্ট পার্টিরও সোভিয়েত ইউনিয়নের মতো দশা হবে না তো? কিন্তু সংস্কার কর্মসূচির হাত ধরে প্রেসিডেন্ট এমন কিছু কঠোর পদক্ষেপ করেছেন, যা চিনের মানুষের মধ্যে নতুন করে আশার স়ঞ্চার করেছে।
চিনা কূটনীতিক জানান, পার্টি কংগ্রেসের গৃহীত কর্মসূচির আসল লক্ষ্য— ২০৫০ সালে আধুনিক সমাজতান্ত্রিক দেশ গড়ে তোলা এবং তার আগে ২০২৫ সালের মধ্যে দেশের আধুনিকীকরণের কাজ শেষ করা। তার জন্য ২০২০ সালে তুলনামূলক ভাবে সমৃদ্ধ চিনের পথ প্রস্তুত করা। গত ৪০ বছরে ৭০ কোটি মানুষকে চিন দারিদ্র্যসীমার উপরে নিয়ে এসেছে। তাঁদের প্রতি দিন অন্তত ২ ডলার রোজগারের ব্যবস্থা হয়েছে। কিন্তু এখনও ৪ কোটি লোক দারিদ্র্যসীমার নিচে রয়েছেন। তাঁদের সেখান থেকে তুলে আনাই প্রথম কাজ।