জইশ-ই-মহম্মদ প্রধান মাসুদ আজ়হার। —ফাইল চিত্র।
পাকিস্তানের রাস্তায় প্রকাশ্যে ভাষণ দিচ্ছেন জইশ-ই-মহম্মদ প্রধান মাসুদ আজ়হার। সম্প্রতি এমনই কিছু রিপোর্ট প্রকাশ্যে এসেছে, যা নিয়ে ক্ষুব্ধ ভারত। মাসুদ আন্তর্জাতিক পর্যায়ের সন্ত্রাসবাদী। তাঁকে ‘সন্ত্রাসবাদী’ হিসাবে চিহ্নিত করেছে রাষ্ট্রপুঞ্জও। ভারতে একাধিক জঙ্গি হামলার নেপথ্যে মাসুদের হাত রয়েছে বলে অভিযোগ। ভারত বরাবরই অভিযোগ করেছে, মাসুদ গা ঢাকা দিয়ে আছেন পাকিস্তানে। কিন্তু পাকিস্তান অভিযোগ অস্বীকার করেছে বার বার। সম্প্রতি প্রকাশ্যে আসা রিপোর্ট যদি সত্য হয়, তবে তা আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে পাকিস্তানের ‘দ্বিচারিতা’ ফাঁস করল বলে মনে করছে নয়াদিল্লি। সেই সঙ্গে মাসুদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপের দাবিও জানিয়েছে তারা।
সম্প্রতি প্রকাশ্যে আসা একটি রিপোর্টে দাবি, পাকিস্তানের পঞ্জাব প্রদেশের বাহাওয়ালপুর শহরে প্রকাশ্যে ভাষণ দিয়েছেন জইশ প্রধান। বিশ্বের তাবড় তদন্তকারী সংস্থা তাঁকে খুঁজছে। এই অবস্থায় কী করে পাকিস্তানের রাস্তায় প্রশাসনের চোখ এড়িয়ে তিনি প্রকাশ্যে ভাষণ দিলেন, সেই প্রশ্ন তুলেছে ভারত। প্রশাসনের মদত ছাড়া তা সম্ভব কি না, তোলা হয়েছে সেই প্রশ্নও। শুক্রবার এ প্রসঙ্গে কড়া বিবৃতি দিয়েছে ভারতের বিদেশ মন্ত্রক। মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল বলেন, ‘‘আমরা ওঁর (মাসুদের) বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপের দাবি জানাচ্ছি। অবিলম্বে ওঁকে আইনের আওতায় এনে সাজা দেওয়া উচিত। মাসুদ যে পাকিস্তানে আছেন, তা বার বার অস্বীকার করেছে ইসলামাবাদ।’’
জয়সওয়াল আরও বলেন, ‘‘রিপোর্ট যদি সঠিক হয়, তবে তা নিঃসন্দেহে পাকিস্তানের দ্বিচারিতার পর্দাফাঁস করল। মাসুদ ভারতের সীমান্তে একাধিক জঙ্গিহানা ঘটিয়েছেন। আমরা তাঁর শাস্তি চাই।’’
রাষ্ট্রপুঞ্জের নিরাপত্তা পরিষদে ২০১৯ সালের মে মাসে মাসুদকে আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসবাদী হিসাবে চিহ্নিত এবং তালিকাভুক্ত করা হয়। ওই বছরের সেপ্টেম্বরে তাঁকে সন্ত্রাসবাদী হিসাবে তালিকাভুক্ত করে ভারত।
ভারতে ২০০১ সালের সংসদ হানা, ২০১৯ সালে পুলওয়ামায় জঙ্গিহানা, ২০১৬ সালের পাঠানকোট হামলা, ২০০১ সালে জম্মু ও কাশ্মীরের বিধানসভা চত্বরে জঙ্গি হামলার ঘটনার সঙ্গে জড়িত ছিলেন এই মাসুদ। ১৯৯৪ সালে ভারত তাঁকে গ্রেফতারও করেছিল। কিন্তু ১৯৯৯ সালে তাঁকে মুক্ত করতে ভারতের একটি বিমান অপহরণ করা হয়। সেই সময়ে বন্দিদের বাঁচাতে মাসুদকে মুক্তি দিতে বাধ্য হয়েছিল নয়াদিল্লি। জেল থেকে বেরিয়ে তিনি জইশ-ই-মহম্মদ নামের জঙ্গিগোষ্ঠী তৈরি করেন।