এ-স্যাট উত্ক্ষেপণ। পিটিআইয়ের ফাইল চিত্র।
‘এ-স্যাট’ নিয়ে আবারও ভারতের পাশে দাঁড়াল পেন্টাগন। বলল, মহাকাশ থেকে বিপদ আসতে পারে বুঝেই উপগ্রহ বিধ্বংসী ক্ষেপণাস্ত্র উত্ক্ষেপণ করেছে ভারত।
বৃহস্পতিবার মার্কিন সেনেটে ভারতের ‘এ-স্যাট’ উত্ক্ষেপণের প্রয়োজনীয়তার প্রসঙ্গটি ওঠে। সেখানে বিষয়টি নিয়ে আশঙ্কা প্রকাশও করা হয়। তবে ভারতের পাশে দাঁড়িয়ে সেনেট আর্মড সার্ভিসেস কমিটির সদস্যদের মার্কিন স্ট্র্যাটেজিক কম্যান্ড কম্যান্ডার জেনারেল জন ই হাইটেন বলেন, “এ-স্যাট উত্ক্ষেপণের পর প্রথমেই যে সহজ প্রশ্নটি ওঠে, কেন ভারত এটা করল! সকলের মনেও, আশা করি, এই প্রশ্ন জাগছে।” এ প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে হাইটেন তাই বলেন, “আমার মনে হয়, মহাকাশ থেকেও বিপদ আসতে পারে এমনটা আঁচ করতে পেরেছে ভারত। প্রতিরক্ষার খাতিরেই তাই মহাকাশেও ‘রক্ষাকবচ’ তৈরি করে রাখল ভারত।” তবে একই সঙ্গে মহাকাশে আবর্জনা আর না বাড়ানোর পক্ষেও তিনি জোর সওয়াল করেন।
সেনেটর টিম কেন এ-স্যাট উত্ক্ষেপণের বিষয়টি উত্থাপন করে বলেন, উপ্রগ্রহ বিধ্বংসী ক্ষেপণাস্ত্রের সফল উত্ক্ষেপণের কথা গত মাসে ঘোষণা করেছিল ভারত। তাদের সেই পরীক্ষার ফলে চারশোরও বেশি টুকরো নীচের কক্ষপথে ছড়িয়ে পড়েছে। যার মধ্যে ২৪টি বড় টুকরো। যেগুলো আন্তর্জাতিক মহাকাশ কেন্দ্রের জন্য বিপজ্জনক।” ২০০৭-এ চিনের উপগ্রহ বিধ্বংসী ক্ষেপণাস্ত্রের উদাহরণও তুলে ধরেন কেন। সেই পরীক্ষার ফলে মহাকাশে এক লক্ষ টুকরো ছড়িয়ে পড়েছিল। যা এখনও রয়েছে এবং তাতে মহাকাশে প্রতি মুহূর্তেই বিপদের ঝুঁকি বাড়ছে বলে দাবি করেন তিনি। কেন আরও উদাহরণ দেন। বলেন, “২০০৯-এ সোভিয়েত জমানার একটি বিকল উপগ্রহের টুকরো আমেরিকার একটি সক্রিয় উপগ্রহকে ধ্বংস করে। আর সে কারণেই এই টুকরোগুলো বিপজ্জনক হয়ে দাঁড়াচ্ছে।” যদি মহাকাশে ক্রমশ ট্রাফিক জ্যাম বাড়তে থাকে, যদি আরও উপগ্রহ উত্ক্ষেপণ হতে থাকে, সেনেটকে তখন এ ব্যাপারে নতুন কোনও নিয়ম ভাবতে হবে। এমনটাই জানান কেন। তবে এই সমস্যা সমাধানের জন্যও যে এখনই তাদের ভাবা শুরু করা উচিত সেটাও জানান তিনি।
আরও পড়ুন: ‘ভিটেছাড়া করলে দাঁড়াব কোথায়’
দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
গত ২৭ মার্চ ‘এ-স্যাট’ উত্ক্ষেপণের পরই ত্রাহি ত্রাহি রব পড়ে গিয়েছিল নাসা-য়। ওই দিন পৃথিবী থেকে ৩০০ কিলোমিটার উপরে ‘এ-স্যাট’ দিয়ে নিজেদের মাইক্রোস্যাট ধ্বংস করেছিল ভারত। ফলে চারশোরও বেশি ধ্বংসাবশেষের টুকরো ছড়িয়ে পড়েছিল নীচের কক্ষপথে। আর তার পরই নাসা আশঙ্কা প্রকাশ করে দাবি করে, এই টুকরোগুলিই আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনের ক্ষতির সম্ভাবনা বহু গুণ বাড়িয়ে দিয়েছে। বিষয়টিকে নাসা ‘ভয়ানক, ভয়ঙ্কর’ বলেও সমালোচনা করেছিল।
নাসা যে আশঙ্কাটা প্রকাশ করেছিল পরবর্তীকালে সেই আশঙ্কাকে কিছুটা উড়িয়ে দিয়ে ভারতের পাশেই দাঁড়িয়েছিল পেন্টাগন। তারা পাল্টা দাবি করেছিল, মাইক্রোস্যাটের যে টুকরোগুলো কক্ষপথে ঘুরছে সেগুলো ৪৫ দিনের মধ্যে বায়ুমণ্ডলেই জ্বলে যাবে। ভারতের শীর্ষস্তরের বিজ্ঞানীরাও এমনটাই দাবি করেছে। সেই ঘটনার পর এ-স্যাট নিয়ে আবারও ভারতের পাশে দাঁড়াল পেন্টাগন।
(সারাবিশ্বের সেরা সব খবরবাংলায় পড়তে চোখ রাখতে পড়ুন আমাদের আন্তর্জাতিক বিভাগে।)