ইমরান খান। —ফাইল চিত্র।
পাকিস্তানের বর্তমান শাসকদের কথা মেনে চলতে রাজি হলেই তাঁর বিরুদ্ধে থাকা সব মামলা প্রত্যাহার করা হবে বলে মন্তব্য করলেন ইমরান খান। পাক রাজনীতিকদের মতে, শাসকদের তরফে তাঁকে এমন বার্তা দেওয়া হয়েছে বলে ইঙ্গিত দিয়েছেন ইমরান।
২০০টি মামলায় যুক্ত থাকার অভিযোগ রয়েছে ইমরানের বিরুদ্ধে। আপাতত রাওয়ালপিন্ডির আদিয়ালা জেলে বন্দি পাকিস্তান তেহরিক ই ইনসাফ দলের প্রধান। গত কাল তোশাখানা মামলার শুনানির আগে জেলে ইমরান বলেন, ‘‘আমি বড় ষড়যন্ত্র ফাঁস করেছি। দেশের বর্তমান তদারকি সরকার নিরপেক্ষ নয়। নির্বাচন কমিশনও কার্যত নখদন্তহীন।’’
পাক আইন অনুযায়ী প্রধানমন্ত্রী থাকার সময়ে বিদেশি রাষ্ট্রনেতাদের কাছ থেকে পাওয়া উপহার সরকারি কোষাগারে (তোশাখানা) জমা না দিয়ে বিক্রি করার অভিযোগ রয়েছে ইমরানের বিরুদ্ধে। ইমরান দাবি করেন, পিএমএল-এন নেতা নওয়াজ় শরিফ ও আসিফ আলি জ়ারদারির বিরুদ্ধে তোশাখানা মামলা বন্ধ করা হয়েছে। নওয়াজ়ের মেয়ে মরিয়ম তোশাখানা থেকে একটি বিএমডব্লিউ গাড়ি পেয়েছেন। কিন্তু সেই মামলাও বন্ধ করা হয়েছে। পাশাপাশি পানামার ল’ফার্ম থেকে ফাঁস হওয়া নানা দেশের ধনী ও প্রভাবশালী ব্যক্তিদের দেশ- বিদেশে লগ্নি সংক্রান্ত নথি অনুযায়ী, মরিয়মের চারটি ফ্ল্যাট আছে। সেগুলি নিয়ে মামলাও বন্ধ করেছে পাক দুর্নীতি দমন সংস্থা ন্যাশনাল অ্যাকাউন্টেবেলিটি বুরো।
প্রধানমন্ত্রীর মসনদ থেকে তাঁকে সরানোর পিছনে পাক সেনা ও আমেরিকার মদত রয়েছে বলে দাবি ইমরানের। সম্প্রতি ব্রিটেন থেকে পাকিস্তানে ফিরেছেন নওয়াজ় শরিফ। দেশের আগামী নির্বাচনে লড়বেন তিনি। ইমরানের বক্তব্য, ‘‘নওয়াজ় নিজের পছন্দের আম্পায়ার নিয়ে ম্যাচ খেলছেন। লন্ডনে বসে তৈরি পরিকল্পনা অনুযায়ী টাকা পাচারে দোষী সাব্যস্ত এক ব্যক্তিকে (নওয়াজ়) পাকিস্তানে নির্বিঘ্নে আসতে দেওয়া হল।’’ তাঁর মতে, আদালতও তাঁর রাজনৈতিক বিরোধীদের ক্ষেত্রে কিছুটা নরম অবস্থান নিচ্ছে বলে অভিযোগ।
আগামী নির্বাচনের জন্য প্রার্থী বাছতে ইমরানের দলের অভ্যন্তরীণ নির্বাচন গত কালই বাতিল করেছে পাকিস্তানের সুপ্রিম কোর্ট। ‘ব্যাট’ প্রতীকও হারিয়েছে তাঁর দল। এই রায়ের আগেই আদিয়ালা জেলে তাঁর সঙ্গে দেখা করেন দলীয় সমর্থকদের একটি দল। সমর্থকেরা জানান, যোগ্য প্রার্থীদের বদলে আইনসভার প্রাক্তন সদস্য ও প্রভাবশালী ব্যক্তিদের টিকিট দেওয়া হয়েছে। ইমরান জানান, এ বার টিকিট বণ্টনের বিষয়ে তাঁর মতামত তেমন নেওয়া হয়নি। সমর্থকদের প্রশ্ন করেন, ৮৫০টি কেন্দ্রে প্রার্থী নির্বাচনের বিষয়ে তাঁর পক্ষে মৌখিক ভাবে সিদ্ধান্ত নেওয়া কী ভাবে সম্ভব?
ইমরানের দাবি, নির্বাচনের আগে তাঁর দলকে দুর্বল করতে প্রতীক চিহ্ন নিয়ে আইনি লড়াই চালানো হয়েছে। তবে তাঁর দল ‘শেষ বল’ পর্যন্ত লড়বে। প্রতীক হারানোর পরে ইমরানের দল জানিয়েছে, তাদের প্রার্থীরা নির্দল প্রার্থী হিসেবে লড়বেন। সংবাদ সংস্থা