কাউন্সিল অব ফরেন রিলেশনের মঞ্চে ইমরান খান। ছবি: এপি
৯/১১ এর ঘটনার পরে বিশ্বব্যাপী সন্ত্রাসবিরোধী অভিযানে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে হাত মিলিয়ে ভুল করেছিল পাকিস্তান। সোমবার নিউইয়র্ক থেকে এমনটাই স্বীকারোক্তি পাকিস্তানের রাষ্ট্রপ্রধান ইমরান খানের। পারভেজ মুশারফের সরকারের ওই সিদ্ধান্তের সমোলচনায় মুখর ইমরান এদিন কাউন্সিল অব ফরেন রিলেশনের মঞ্চ থেকে বলেন, ‘যা করা সম্ভব নয়, সেই প্রতিশ্রুতি দেওয়া ঠিক হয়নি।’
মার্কিন আগ্রাসন শুরু হওয়ার আগে ২০০১ সাল পর্যন্ত আফগানিস্তানের তালিবান সরকার মাত্র তিনটি দেশের সমর্থন পেয়েছিল। তাদের একটি ছিল পাকিস্তান। ৯/১১ এর ঘটনা সেই সমীকরণ বদলে দেয়। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ নেয় পাকিস্তান। সোমবার এই সিদ্ধান্তকে ঐতিহাসিক ভুল বলে ব্যখ্যা করেন ইমরান। অতীত তুলে এনে তিনি বলেন,‘‘ ১৯৮০-র দশকে সোভিয়েত রাশিয়া আফগানিস্তান দখল করতে এসেছিল। এই সময়ে সোভিয়েতের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলা সম্ভব হয়েছিল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তায়। আইএসআই (ইন্টার সার্ভিস ইন্টালিজেন্স) সেবার সোভিয়েতের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ তৈরির জন্যে মুসলিম বিশ্বের জেহাদি গোষ্ঠীগুলিকে প্রশিক্ষণ দেয়।’’ইমরানের দাবি, সে সময়ে জেহাদিরা নায়কের মতো ছিল। তাঁদের চেষ্টাতেই ১৯৮৯ সালে আফগান মাটি ছেড়ে দেয় রাশিয়া।
২০০১ সালে মার্কিন আগ্রাসনের সিদ্ধান্তে পাকিস্তানের সমর্থনের ঘটনায় পাকিস্তানের দ্বিচারিতা দেখতে পাচ্ছেন ইমরান। তাঁর মতে, সোভিয়েতের ঘটনায় বিদেশি শক্তিকে রুখে দেওয়ায় যাদের উৎসাহ দেওয়া হয়েছিল, সেই গোষ্ঠীই মার্কিন আগ্রাসন বিরোধিতা করে জঙ্গি বলে চিহ্নিত হয়েছে। এখন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র আফগানিস্তান ছেড়ে গেলেও এই গোষ্ঠীগুলি রয়ে গিয়েছে। ইমরান মনে করেন কোনও ভাবেই সামরিক শক্তি দ্বারা আফগানিস্তানে শান্তিু ফেরানো সম্ভব নয়। শান্তি ফেরাতেতিনি ডোনাল্ড ট্রাম্পকে আলোচনার উদ্যোগ নিতে অনুরোধ করবেন বলে জানান।
আরও পড়ুন:‘হাউডি মোদী’র পর ইমরানের সঙ্গে বৈঠকেই সুর বদল! ফের মধ্যস্থতার প্রস্তাব ট্রাম্পের
আরও পড়ুন:পাকিস্তানে অপেক্ষায় ৫০০ জঙ্গি, বললেন সেনাপ্রধান
সংবাদমাধ্যমের সামনে ইমরানের এই বয়ানে নতুন করে বিতর্কও তৈরি হয়েছে। কূটনীতিবিদদের একাংশের দাবি, ইমরান এদিন স্বীকারই করে ফেলেছেন যে সন্ত্রাসীদের প্রশিক্ষণকেন্দ্র পাকিস্তান। পাকিস্তানি সেনাবাহিনী ও আইএসআই আল-কায়দা জঙ্গিগোষ্ঠীকে প্রশিক্ষণ দিয়েছে।