ইমরান খান। ফাইল চিত্র।
নভেম্বরে ইসলামাবাদে প্রস্তাবিত সার্ক সম্মেলনে আসার জন্য প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে আমন্ত্রণ জানাতে পারেন পাক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। এই উপলক্ষে পাক সরকার বা দলের কোনও বিশেষ দূতকে ভারতে পাঠানো হতে পারে বলে কূটনৈতিক সূত্রে জানা গিয়েছে।
সাউথ ব্লকের অলিন্দে এখন যে প্রশ্নটি ক্রমশ প্রাসঙ্গিক হয়ে উঠছে তা হল, এই আমন্ত্রণ রক্ষা করে লোকসভা ভোটের মুখে মোদী যাবেন কিনা। যেমন গিয়েছিলেন প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী অটলবিহারী বাজপেয়ী ২০০৪ সালের লোকসভা ভোটের কয়েক মাস আগে। তবে এখনও পর্যন্ত এই বিষয়ে স্থির সিদ্ধান্তে পৌঁছানো হয়নি। গোটা বিষয়টির বিভিন্ন দিক খতিয়ে দেখছে নয়াদিল্লি। বিবেচনা করে দেখা হচ্ছে সম্ভাব্য ঘরোয়া রাজনৈতিক পটভূমিও।
ইমরানের শপথগ্রহণের দিনই মোদী চিঠি লিখে জানিয়েছিলেন, উপমহাদেশের শান্তি এবং সমৃদ্ধির জন্য পাকিস্তানের সঙ্গে ইতিবাচক এবং অর্থবহ যোগাযোগ তৈরি করা এবং প্রতিবেশীসুলভ সম্পর্ক গঠনে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ ভারত। পাশাপাশি পঞ্জাবের মন্ত্রী নভজ্যোৎ সিংহ সিধুর পাক সফর নিয়ে যখন কংগ্রেস এবং বিজেপি একযোগে তাঁকে ধিক্কার জানাচ্ছে, সেই সময়ে সাংবাদিক বৈঠক করে সিধু বলেন যে বিদেশমন্ত্রী তথা মন্ত্রকের অনুমতি নিয়েই তিনি ইসলামাবাদে গিয়েছিলেন। বিদেশ মন্ত্রকের নীরবতাতেই স্পষ্ট, সিধুকে পাঠানোর পিছনে নির্দিষ্ট কৌশল কাজ করেছে সাউথ ব্লকের।
আরও পড়ুন: আলিঙ্গন নিয়ে সিধু অনড়ই
তবে ইতিবাচক বার্তা দেওয়া এক জিনিস আর ঝুঁকি নিয়ে ভোটের আগে পাকিস্তানে পৌঁছে যাওয়া অন্য। ইতিমধ্যেই বিনা আনুষ্ঠানিক আমন্ত্রণে লাহৌরে প্রাক্তন পাক প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ় শরিফের বাড়িতে গিয়ে এক বার মুখ পুড়েছে মোদীর। তার এক সপ্তাহের মধ্যে যখন পঠানকোটে হামলা করেছিল পাক মদতপ্রাপ্ত জঙ্গিরা, তখন চরম অস্বস্তিতে পড়ে মোদী সরকার। উনিশের ভোটের আগে সে রকম কিছু হলে তা কার্যত বুমেরাং হয়ে দাঁড়াবে মোদী-অমিত শাহ তথা বিজেপির কাছে। কিন্তু অন্য একটি দিকও বিবেচনার মধ্যে রাখা হচ্ছে। শীর্ষ রাজনৈতিক সূত্রের মতে, ‘‘ভোটের কয়েক মাস আগেই নতুন সরকারের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক আলোচনা শুরু করে দেওয়ার মতো রাজনৈতিক ঝুঁকি প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে নেওয়া কঠিন। তবে এ বার ঝুঁকি তুলনামূলক ভাবে কম। কারণ ইসলামাবাদে গেলেও সেটি দ্বিপাক্ষিক রাষ্ট্রীয় সফর হবে না। দক্ষিণ এশিয়ার রাষ্ট্রগুলির বহুপাক্ষিক সম্মেলনে যোগ দেওয়াটাই মুখ্য হিসাবে দেখানো হবে।’’ তা ছাড়া, ইমরানের সঙ্গে পাক সেনার ঘনিষ্ঠতা আছে। ফলে তাঁর সঙ্গে কথা বললে পাকিস্তানের বিভিন্ন শক্তিকেন্দ্রকে সামলানোর হ্যাপা কম পোয়াতে হবে।
তবে এতে বিজেপির আক্রমণের ধার কমেনি। এ দিন সাংবাদিক বৈঠক করে দলীয় মুখপাত্র সম্বিৎ পাত্র বলেন, ‘‘কংগ্রেস ভারতে পাকিস্তান ডেস্ক খুলেছে। ওই দলের কিছু লোক পাকিস্তানের স্বার্থ প্রচার করেন। সিধু কার হয়ে পাকিস্তান গিয়েছিলেন?’’