গ্রাফিক— শৌভিক দেবনাথ।
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ যে আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের দামকেই আকাশে তুলেছে তাই নয়। তার প্রভাব আরও সুদূরপ্রসারী এবং ধ্বংসাত্মক। অবিলম্বে বাকি বিশ্বের সঙ্গে আলোচনায় বসে মিটমাটের পথে হাঁটুক মস্কো, না হলে পরিস্থিতি হাতের বাইরে চলে যাবে। তার ফল ভুগতে হবে গোটা বিশ্বকেই। দুবাইয়ে ‘ওয়ার্ল্ড গভর্নমেন্ট সামিট ২০২২’-এ আলাপচারিতায় এমনই আশঙ্কার কথা জানালেন আন্তর্জাতিক অর্থ ভাণ্ডারের (আইএমএফ) ম্যানেজিং ডিরেক্টর ক্রিস্টালিনা জর্জিয়েভা।
২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে রুশ হামলা শুরুর সঙ্গে সঙ্গেই আমেরিকা ও পশ্চিমের বিভিন্ন দেশ মস্কোর উপর একের পর এক অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা চাপাতে শুরু করে। তার পর কেটে গিয়েছে এক মাসেরও বেশি সময়। মঙ্গলবার দুবাইয়ে ‘ওয়ার্ল্ড গভর্নমেন্ট সামিট ২০২২’-এর মঞ্চে দুবাইয়ের শাসক তথা সংযুক্ত আরব আমিরশাহির প্রধানমন্ত্রী শেখ মহম্মদ বিন রশিদ অল মকদুমের সঙ্গে আলাপচারিতায় আইএমএফ-এর এমডি বললেন, এখনও আলোচনার রাস্তা পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায়নি। তিনি বললেন, ‘‘রাশিয়াকে এখনও আইএমএফ থেকে সাসপেন্ড করা হয়নি। কারণ সঙ্কটমোচনে আলোচনার কোনও বিকল্প নেই।’’
আমেরিকা-সহ পশ্চিমী বিশ্ব যখন একযোগে রাশিয়াকে ‘বয়কট’ করে বসে আছে, তখন আন্তর্জাতিক অর্থ ভাণ্ডারের প্রধানের গলায় আলোচনার সুর কেন? ওয়াকিবহাল মহলের ধারণা, রাশিয়াকে আলোচনার টেবিলে আহ্বান জানানোর মূল কারণ সেই দেশের অর্থনীতির ব্যাপ্তি। ক্রিস্টালিনা বলেন, ‘‘করোনার ধাক্কায় এমনিতেই গোটা বিশ্বের অর্থনীতি দুর্বল অবস্থার মধ্যে দিয়ে চলছে। এই পরিস্থিতিতে যুদ্ধ, আগুনে ঘৃতাহুতির সমতুল।’’ তিনি জানান, একে তো যুদ্ধের খরচ, তার উপর যে নিষেধাজ্ঞার বোঝা চেপেছে, তা সামলাতে গিয়ে এমনিতেই মন্দার কবলে পড়তে চলেছে রাশিয়া। কিন্তু তা কি কেবল রাশিয়ার অর্থনীতিতেই মন্দা হিসেবে সীমাবদ্ধ থাকবে? ক্রিস্টালিনার কথায়, ‘‘রাশিয়ার সীমা টপকে সেই মন্দার প্রভাব গোটা বিশ্বের অর্থনীতিকেও বড়সড় ঝাঁকুনি দেবে। করোনায় জর্জরিত বিশ্ব অর্থনীতি সেই ধাক্কা সইতে আদৌ সক্ষম হবে কি? তাই এই মুহূর্তে রাশিয়ার উচিত আলোচনার টেবিলে ফিরে যাওয়া। কারণ সঙ্কটমোচনে আলোচনাই একমাত্র বিকল্প।’’