শাহবাজ শরিফ
পাকিস্তানের সুপ্রিম কোর্টে প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফ ও তাঁর পরিবারের বিরুদ্ধে আনা আর্থিক দুর্নীতির মামলায় শুনানি শেষ হয়েছে গত কালই। আদালতের রায়ে দোষী সাব্যস্ত হলে পদচ্যূত হবেন প্রধানমন্ত্রী। সেই ক্ষেত্রে ভাই শাহবাজ শরিফকেই তিনি গদিতে বসাতে চান বলে জোর জল্পনা পাক রাজনৈতিক মহলে।
সূত্রের খবর, রায় ঘোষণার আগে দলের অন্দরে ঘুঁটি সাজিয়ে রাখতে শুক্রবার রাতে একটি উচ্চ পর্যায়ের দলীয় বৈঠক তলব করেন প্রধানমন্ত্রী। শাসক দল পাকিস্তান মুসলিম লিগের সেই বৈঠকে অন্যান্য কেন্দ্রীয় মন্ত্রী, উপদেষ্টা মন্ত্রকের সচিব এবং আইনজীবীদের সঙ্গে হাজির ছিলেন শাহবাজও। সেখানেই নওয়াজ প্রয়োজনে ভাইকে প্রধানমন্ত্রীর পদে বসানোর ইচ্ছা প্রকাশ করেন বলে খবর। তবে দলের সায় থাকলেও বর্তমান পঞ্জাব প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী শাহবাজের প্রধানমন্ত্রী হয়ে ওঠার পথ ততটা সহজ নয় বলেই মনে করছেন পাক-রাজনীতিবিদরা।
আরও পড়ুন: চিনকে চাপে রাখতে নয়া ছক মার্কিন প্রেসিডেন্টের
শাহবাজ পাকিস্তানের আইনসভার নিম্নকক্ষের সদস্য নন। সে ক্ষেত্রে নিয়ম অনুযায়ী প্রধানমন্ত্রী হতে গেলে তাঁকে নির্বাচনে জিতে আসতে হবে। সূত্রের খবর, শুক্রবারের বৈঠকে সেই সমস্যা নিয়েও আলোচনা করেন শরিফ। বৈঠকে ঠিক হয়, নির্বাচনের পথেই হাঁটবেন শাহবাজ। সেই সময়টুকু অন্তর্বর্তীকালীন প্রধানমন্ত্রী হয়ে দায়িত্ব সামলাবেন দেশের প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা আসিফ। পাশাপাশি আদালতের রায়ে নওয়াজ ও তাঁর পরিবার দোষী সাব্যস্ত হলে আইনি পথে কী ভাবে পরিস্থিতির মোকাবিলা করা হবে সেই নিয়েও বৈঠকে আলোচনা হয়।
শনিবার এক সাক্ষাৎকারে এই বৈঠকের কথা মেনে নিলেও সমস্ত জল্পনা উড়িয়ে দিয়েছেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা আসিফ। তিনি বলেছেন, ‘‘এ দিনের বৈঠকে এমন কোনও আলোচনাই হয়নি। নওয়াজই দলের প্রধান। তাঁর নেতৃত্বেই দল চলবে। প্রধানমন্ত্রীর পদে অন্য কাউকে মনোনীত করার প্রশ্নই নেই।’’
পানামা নথি ফাঁসের পরে আর্থিক কেলেঙ্কারিতে নাম জড়িয়েছে শরিফ ও তাঁর পরিবারের। বিশেষ করে পরিবারের সদস্যদের বিদেশে প্রচুর সম্পত্তি ও আয়ের উৎস নিয়ে অস্বচ্ছতার অভিযোগ তুলেছে আদালতের নির্দেশে গঠিত যৌথ তদন্ত কমিটি। তার ভিত্তিতেই পাকিস্তানের শীর্ষ আদালতে গত চার দিন ধরে মামলার শুনানি চলেছে। সম্প্রতি সেই মামলায় তদন্ত কমিটি অভিযোগ এনেছিল, আর্থিক কেলেঙ্কারির অভিযোগ থেকে বাঁচতে জাল নথি পেশ করেছেন নওয়াজ পুত্র হুসেন নওয়াজ ও কন্যা মরিয়ম নওয়াজ। সেই পরিপ্রেক্ষিতে শুক্রবারই সুপ্রিম কোর্ট জানিয়েছে, আর্থিক কেলেঙ্কারি থেকে বাঁচতে জাল নথি দিলে সাত বছর কারাবাস করতে হবে নওয়াজ শরিফের ছেলেমেয়েকে। ছাড় পাবেন না শরিফও।