প্রতীকী ছবি।
প্রায় এক দশক হল ভারত থেকে জার্মানিতে এসেছি উচ্চশিক্ষার জন্য। স্নাতকোত্তর ও পিএইচডি পর্ব মিটিয়ে এখন পোস্ট ডক্টরেটের পালা। কিন্তু গত তিন মাসে এ দেশের যে ছবি দেখলাম, দশ বছরে তা দেখিনি।
এ বছর ফেব্রুয়ারি মাসের শেষের দিকে কোভিড-১৯ সম্পর্কে জানতে পারি। তখন বেশির ভাগ জার্মান নাগরিকই ভেবেছিলেন যে, এটা একটা সাধারণ ফ্লু-র মতো। তাই এই পরিস্থিতিকে তেমন গুরুত্ব না-দিয়ে সকলেই তাঁদের স্বাভাবিক কর্মকাণ্ডের মধ্যে দিয়েই দিন অতিবাহিত করছিলেন। যেমন, প্রাতঃভ্রমণ, জিমে শারীরচর্চা, নিয়মিত অফিস যাওয়া, বন্ধুবান্ধব ও আত্মীয়স্বজনের সঙ্গে নৈশভোজন, জন্মদিন পালন, সপ্তাহান্তের বেড়ানো, কোনও কিছুতেই কোনও বাধা ছিল না।
কিন্তু পরিস্থিতি দ্রুত খারাপ হওয়ায় আঙ্গেলা ম্যার্কেল সরকার কয়েক দিনের মধ্যেই কিছু কিছু বিধিনিষেধ জারি করতে শুরু করে। পরিস্থিতি আরও খারাপ হওয়ার আগে অনির্দিষ্টকালের জন্য অফিস, পার্ক, দোকান, রেস্তরাঁ, স্কুল, কলেজ ও খেলাধুলো বন্ধ করে দেওয়া হয়। প্রথমে আমাদের এই নতুন জীবনযাত্রা মেনে নিতে অসু্বিধা হয়েছিল। আমরা ভাবতেও পারিনি যে, একটা ছোট গণ্ডির মধ্যে মাস্ক ও গ্লাভস পরে এবং এ ভাবে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে বেঁচে থাকতে হবে।
কিন্তু সে ভাবেই আমরা তিনটে কঠিন মাস পেরিয়ে এলাম। এখন অনেক বিধিনিষেধ হ্রাস করার কথা ঘোষণা করেছেন চ্যান্সেলর। জীবন ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হতে শুরু করেছে। দু’-তিন জন মিলে পার্কে ভ্রমণ,
বাইরে শিশুদের খেলাধুলো, এর-ওর বাড়ি যাওয়া-আসা ও কেনাকাটাও শুরু হয়েছে। তবে সবই নিজেকে ও অন্যকে সুরক্ষিত করে। অর্থাৎ মাস্ক পরে ও পারস্পরিক দূরত্ব বজায় রেখে।
কারণ নাগরিক সমাজের সতর্ক জীবনযাপনই স্থির করবে, ভবিষ্যতে সংক্রমণের ‘দ্বিতীয় ঢেউ’ এলে আমরা তার মোকাবিলা করতে পারব কি না!
(লুডউইগ ম্যাক্সিমিলিয়ন বিশ্ববিদ্যালয়ে পোস্ট ডক্টরাল ফেলো)