বুধবার অবরোধ ছড়িয়ে পড়ল গোটা ঢাকায়। ছবি: এএফপি।
বেপরোয়া গতির বাসের নীচে মঙ্গলবার বিশ্ববিদ্যালয়ের এক মেধাবী ছাত্র চাপা পড়ার পরিপ্রেক্ষিতে গত কাল বিমানবন্দরগামী রাস্তা প্রায় সারা দিন অবরুদ্ধ ছিল। বুধবার সেই অবরোধ ছড়িয়ে পড়ল গোটা ঢাকায়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ও কয়েকটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়ারা বিভিন্ন জায়গায় অবরোধ করায় সারাদিন কার্যত অচল হয়ে রইল বাংলাদেশের রাজধানী শহর। বিকেলে ঢাকা উত্তর কর্পোরেশনের মেয়র এবং পুলিশ কমিশনার পথ নিরাপত্তায় কিছু সুনির্দিষ্ট আশ্বাস দেওয়ার পরে আন্দোলন এক সপ্তাহ স্থগিত রাখার ঘোষণা করেছেন পড়ুয়ারা।
বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালস (বিইউপি)-এর সামনে জেব্রা ক্রসিং দিয়ে সড়ক পারাপারের সময়ে কাল সকালে সুপ্রভাত পরিবহণের একটি বাস চাপা দেয় এক ছাত্রকে। সঙ্গে সঙ্গে তিনি মারা যান। তার পরে ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীরা প্রগতি সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন। বিকেলে মেয়র দোষী বাসচালকের শাস্তি এবং ঘটনাস্থলে রাস্তা পারাপারের একটি ওভারব্রিজ তৈরি করে দেওয়ার দাবি মেনে নিলে পড়ুয়ারা অবরোধ তুলে নেন। কিন্তু এ দিন সকাল থেকে নানা বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়ারা ঢাকার প্রাণকেন্দ্রের সড়কগুলি অবরোধ করে নিরাপদ সড়কের দাবিতে এবং বাসের বেপরোয়া গতি নিয়ন্ত্রণে সরকারের উদাসীনতার অভিযোগ তুলে বিক্ষোভ শুরু করেন। জনজীবন স্তব্ধ হয়ে যায়।
এর আগে ২৯ জুলাই একটি বেপরোয়া বাস দুই পড়ুয়াকে চাপা দেওয়ার পরে নিরাপদ সড়কের দাবিতে আন্দোলন শুরু হয় ঢাকায়। ক্রমশ তা গোটা দেশে ছড়িয়ে পড়ে। এর পরে সরকার কড়া আইন প্রণয়ন-সহ বেশ কিছু পদক্ষেপের আশ্বাস দেওয়ায় ৮ অগস্ট আন্দোলন তুলে নেওয়া হয়। কিন্তু সেই আশ্বাসের কোনও কিছুই বাস্তবায়ন করা হয়নি বলে অভিযোগ পড়ুয়াদের। এ দিন ফের আন্দোলন শুরু হলে সিটি কর্পোরেশন ও পুলিশের তরফে ছাত্রছাত্রীদের সঙ্গে আলোচনা শুরু হয়। হাইকোর্টের একটি বেঞ্চ স্বতঃপ্রণোদিত রায়ে বাসের মালিক পরিবহণ সংস্থাটিকে ১০ লক্ষ টাকা জরিমানা করে। বাসটির চালককেও গ্রেফতার করা হয়। মেয়র আতিকুল ইসলাম তাঁর দ্রুত বিচারের দাবি মেনে নেওয়ায় আন্দোলন এক সপ্তাহ স্থগিত রাখার ঘোষণা করা হয়।
দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
আন্দোলন দীর্ঘস্থায়ী হলে যে বিপাকে ফেলতে পারে, আগের অভিজ্ঞতায় তা বুঝেছে সরকার। এ দিন রাতেই তাই সুপ্রভাত পরিবহণের সব বাস ঢাকায় নিষিদ্ধ করা হয়েছে। আগের বারের ঘাতক বাসের মালিক জাবালে নুর পরিবহণ সংস্থাকেও এ দিন ঢাকায় নিষিদ্ধ করা হয়েছে।