Train Attack in Balochistan

লাইনে বিস্ফোরণ, তার পর গুলি! সুড়ঙ্গের মুখে কী ছক কষে ট্রেন অপহরণ পাকিস্তানের দুর্গম পাহাড়ি এলাকায়

জাফর এক্সপ্রেসকে যে এলাকায় কব্জা করা হয়েছে, সেই এলাকা পেরোতে হয় ১৭টি সুড়ঙ্গের মধ্যে দিয়ে। সেগুলির মধ্যে একটি হল মাশকাফ সুড়ঙ্গ। কোয়েটা থেকে ১৬০ কিলোমিটার দূরে এই সুড়ঙ্গ।

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ১২ মার্চ ২০২৫ ১৩:৫৫
Share:

গ্রাফিক: আনন্দবাজার ডট কম।

মাশকাফ সুড়ঙ্গের মধ্যে দিয়ে ধীর গতিতে চলছিল জাফর এক্সপ্রেস! দুপুরে ট্রেনের মধ্যে কেউ তখন খাচ্ছিলেন, কেউ আবার গল্পগুজবে ব্যস্ত ছিলেন, আবার কেউ কেউ ঘুমে আচ্ছন্ন। আচমকাই বিকট শব্দ, তার পর মুহুর্মুহু গুলি! মাত্র কয়েক মিনিটের অভিযান, পুরো ট্রেন কব্জা করে নেন বিএলএ-র (বালুচ লিবারেশন আর্মি) বিদ্রোহীরা!

Advertisement

বালুচিস্তানের রাজধানী কোয়েটা থেকে খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশের রাজধানী পেশোয়ার রেলপথে প্রায় ১৬০০ কিলোমিটার। পাকিস্তানের পঞ্জাব প্রদেশের মধ্যে দিয়ে জাফর এক্সপ্রেস প্রতি দিনই যাতায়াত করে। ওই ট্রেনে কোয়েটা থেকে পেশোয়ার যেতে সময় লাগে প্রায় ৩০ ঘণ্টা! মঙ্গলবার সেই ট্রেনটিই দখল করে নেন বিদ্রোহীরা।

জাফর এক্সপ্রেসকে যে এলাকায় কব্জা করা হয়, সেই এলাকা পেরোতে হয় ১৭টি সুড়ঙ্গের মধ্যে দিয়ে। এর মধ্যে একটি হল মাশকাফ সুড়ঙ্গ। কোয়েটা থেকে ১৬০ কিলোমিটার দূরে সিবি শহরের কাছে এই সুড়ঙ্গ। এই দুর্গম পাহাড়ি এলাকায় রয়েছে বোলান পাস। সামরিক বিশেষজ্ঞদের মতে, বিদ্রোহীরা হামলার জন্য এমন এক জায়গা বেছে নিয়েছিলেন যেখানে নিরাপত্তাবাহিনী সহজে পৌঁছোতে পারবে না। তা ছাড়াও ওই এলাকা বিদ্রোহীদের হাতের তালুর মতো চেনা। ফলে অভিযানে সেনা নামলেও সহজে তাঁরা পালিয়ে নিজেদের বাঁচাতে পারবেন।

Advertisement

মঙ্গলবার পেহরোকুনরি স্টেশন ছেড়ে ট্রেনটা সবেমাত্র মাশকাফ সুড়ঙ্গে ঢুকেছিল। আচমকাই জাফর এক্সপ্রেসের সামনে রেলপথে বিস্ফোরণ। তার পর একটি বুলেট এসে লাগে চালকের বুকে। সুড়ঙ্গের মধ্যেই থেমে যায় ট্রেনটি। কেবিনের মধ্যে লুটিয়ে পড়েন চালক। ট্রেনে তখন ৪০০ জনের বেশি যাত্রী। তাঁদের মধ্যে রয়েছেন পাক সেনাবাহিনীর কর্মীরাও।

মঙ্গলবার দুপুর থেকে বিদ্রোহীদের সঙ্গে গুলির লড়াই চলছে নিরাপত্তাবাহিনীর। আকাশপথে সেনা নামানো হয়েছে। রাতেই বিদ্রোহীদের হাতে অপহৃত ট্রেনের কাছে পৌঁছে গিয়েছিল পাক নিরাপত্তাবাহিনীর উদ্ধারকারী দল। তাঁদের মধ্যে ছিলেন পাক সেনার ‘স্পেশ্যাল সার্ভিস গ্রুপ’-এর কমান্ডোরা। ২৪ ঘণ্টারও বেশি সময় কেটে গিয়েছে। এখনও সব পণবন্দিকে উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি। অপহৃত জাফর এক্সপ্রেস থেকে এখনও পর্যন্ত উদ্ধার করা গিয়েছে অন্তত ১৫৫ জন যাত্রীকে। পাক সেনা সূত্রে তেমনই দাবি করা হয়েছে। তাদের আরও দাবি, এই অভিযানে এখনও পর্যন্ত অন্তত ২৭ জন বালুচ বিদ্রোহী নিহত হয়েছেন।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement