— ছবি সংগৃহীত
করোনাভাইরাসের ডেল্টা রূপের হানায় যেখানে বিশ্বের অধিকাংশ দেশই কাবু, সেখানে মাসখানেকের মধ্যেই প্রতিরোধ গড়ে তুলতে সক্ষম চিন। জুলাই মাসের পর গত সোমবার এই প্রথম একজন চিনা নাগরিকও কোভিডে সংক্রমিত হননি। রিপোর্ট দিয়ে এমনটাই জানাল সে দেশের জাতীয় স্বাস্থ্য কমিশন (এনএইচসি)। কিন্তু কী ভাবে ডেল্টার বিরুদ্ধে ‘চিনের প্রাচীর’ গড়ল বেজিং?
ডেল্টা সংক্রমণ ছড়ানো মাত্রই নজরে থাকা বিভিন্ন প্রদেশে ছোট ছোট কন্টেনমেন্ট জোন তৈরি করে প্রায় ১ কোটি মানুষ লকডাউবিধির আওতায় নিয়ে আসা হয়। তার পরই শুরু হয় কোভিড পরীক্ষা এবং সংক্রমিতদের চিহ্নিতকরণের প্রক্রিয়া। সেই সঙ্গে যাতায়াতে নিষেধাজ্ঞা। আর তাতেই কার্যসিদ্ধি। অগস্টের শেষ সপ্তাহে দেশকে ‘কোভিড-শূন্য’ ঘোষণা করল চিনের স্বাস্থ্য কমিশন।
গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
চলতি বছরের এপ্রিল থেকে ভারতে, তার পর ধীরে ধীরে গোটা বিশ্বে ছড়িয়ে প়ড়েছিল ডেল্টা রূপ। অতি-সংক্রামক এই রূপের হানাতেই ভারতে কোভিডের দ্বিতীয় ঢেউ আছড়ে পড়েছিল। পরবর্তী কালে আমেরিকাতেও ভয়াবহ আকার নিয়েছে। ২০২০ সালের পর গত জুলাই মাসে প্রথম বার চিনে স্থানীয় সংক্রমণ ১,২০০ ছাড়িয়েছিল। ৩১টি প্রদেশের মধ্যে অর্ধেকের বেশি প্রদেশে মিলেছিল ডেল্টা রূপের হদিশ। পূর্ব প্রান্তের নানজিং শহরের একটি বিমানবন্দরে একাধিক সাফাইকর্মীর শরীরে ডেল্টার উপস্থিতি প্রকাশ্যে আসতেই বিষয়টি নিয়ে তৎক্ষণাৎ উদ্বেগ প্রকাশ করে আঞ্চলিক স্তরে কড়া লকডাউন নীতি প্রয়োগ করে চিনা সরকার। এর পর ডেল্টার হানা বাড়তেই কঠোর হাতে তার মোকাবিলা করে প্রশাসন। যারই ফল মিলল।
বিশ্বের মধ্যে করোনা মোকাবিলায় যে সব দেশ সক্ষম হয়েছে, তাদের মধ্যে প্রথম সারিতেই রয়েছে চিন। তালিকায় রয়েছে সিঙ্গাপুর, অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড। সম্প্রতি অস্ট্রেলিয়া এবং সিঙ্গাপুরেও বহু সংক্রমিতের শরীরে ডেল্টার হদিশ পাওয়ায় তা উদ্বেগ দেখা দিয়েছে সে দেশের বিশেষজ্ঞ মহলে। অস্ট্রেলিয়াতেও কড়া লকডাউনবিধি জারি রয়েছে ডেল্টার মোকাবিলায়। দেশ ‘কোভিড-শূন্য’ হলেও চিনের সাধারণ নাগরিকদের উদ্দেশে সরকারের তরফে সতর্ক বার্তা জারি করে জানানো হয়েছে, অতিমারি-পর্ব এখনও শেষ হয়নি।