গ্রেফতারির পর জিমি লাই।—ছবি এএফপি।
বরাবর বেজিংয়ের দমন-নীতির বিরুদ্ধে লিখে এসেছে তাঁর কাগজ। স্বায়ত্তশাসিত হংকংয়ে গত জুনের শেষে চিন নতুন জাতীয় নিরাপত্তা আইন আরোপ করার পরে তাঁর প্রথম প্রতিক্রিয়াই ছিল, ‘আমি জেলে যেতে প্রস্তুত’। ঠিক সেটাই করা হল হংকংয়ের গণতন্ত্রকামী ‘মিডিয়া টাইকুন’ জিমি লাইয়ের সঙ্গে।
আজ সকালে জিমির দৈনিকের দফতরে তল্লাশি চালাতে আসে ২০০ জন পুলিশের একটি দল। তার কিছু ক্ষণের মধ্যেই গ্রেফতার করা হয় জিমিকে। গোটা ঘটনাটাই সোশ্যাল মিডিয়ায় সম্প্রচার করেছেন জিমির অফিসের কর্মীরা। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়েছে জিমির দুই ছেলেকেও। রাতে হংকং পুলিশ টুইটারে জানায়, নতুন নিরাপত্তা আইন লঙ্ঘনের জন্য ৩৯ থেকে ৭২ বছরের ৭ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
‘অ্যাপল ডেলি’ নামে সংবাদপত্র এবং ‘নেক্সট’ পত্রিকার মালিক জিমি (৭১)। নিয়মিত চিনকে আক্রমণ করার জন্য তেমন বিজ্ঞাপনও পেত না তাঁর কাগজ। তবু চিনের সমালোচনা থেকে কখনও সরে আসেননি জিমি।
ডিজিটাল মাধ্যমে একটি নতুন প্রকাশনার পরিকল্পনা ছিল জিমির সংস্থার। সেখানেই জালিয়াতির অভিযোগ আনা হয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে। সেই সঙ্গে বিদেশি শক্তির সঙ্গে ষড়যন্ত্র করে হংকংয়ের জাতীয় নিরাপত্তা বিঘ্নিত করার মতো গুরুতর অভিযোগও রয়েছে। অভিযোগ প্রমাণিত হলে যাবজ্জীবন জেল হতে পারে তাঁর। মাসখানেক আগে মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট মাইক পেন্স এবং মার্কিন বিদেশসচিব মাইক পম্পেয়োর সঙ্গে বৈঠক করেছিলেন জিমি। তখনই আঁচ করেছিলেন, তাঁর বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ আনতে চলেছে বেজিং।
বস্তুত হংকংয়ে গত এক বছর ধরে চলা চিন-বিরোধী গণতন্ত্রকামী আন্দোলনে জিমির প্রবল উস্কানি রয়েছে বলে অভিযোগ বেজিংয়ের। ফলে নতুন আইন আসার পরে তিনি যে গ্রেফতার হবেনই, তা খানিকটা আন্দাজ করাই গিয়েছিল। গ্রেফতারির সময়ও নিজের কর্মচারীদের কাগজ নিয়মিত প্রকাশ করার নির্দেশ দিয়ে গিয়েছেন জিমি।
তবে দু’মাস আগেও যে হংকংয়ে এমনটা ভাবা যেত না, তা স্বীকার করে নিয়েছেন ‘হংকং জার্নালিস্টস অ্যাসোসিয়েশন’-এর প্রেসিডেন্ট ক্রিস ইয়ুং। হংকং নিয়ে চিন-আমেরিকা টানাপড়েনও চলছে। গত সপ্তাহেই হংকংয়ের প্রশাসক ক্যারি ল্যাম-সহ ১১ জন শীর্ষ আধিকারিকের সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করার নির্দেশ দিয়েছিল মার্কিন রাজস্ব দফতর। পাল্টা ১১ জন মার্কিন নাগরিকের বিরুদ্ধে আর্থিক নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে চিন।