Hinduja Group

চার হিন্দুজার চার থেকে সাড়ে চার বছরের কারাদণ্ডকে চ্যালেঞ্জ করে উচ্চ আদালতে আবেদন

অভিযোগ, কর্মচারীদের শুধু যে কম বেতন দেওয়া হত, তা নয়। একই সঙ্গে দুর্ব্যবহারও করা হত। কর্মচারীদের প্রাসাদের বাইরে পা রাখার অধিকার ছিল না। পাসপোর্টও কেড়ে নেওয়া হত তাঁদের।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক

শেষ আপডেট: ২২ জুন ২০২৪ ১৯:০৮
Share:
Hindujas ‘appalled’ by Swiss court’s jail term order, file appeal

হিন্দুজা পরিবার। — ফাইল চিত্র।

নিম্ন আদালতের রায়কে চ্যালেঞ্জ করে উচ্চ আদালতে গেলেন ব্রিটেনের ধনীতম পরিবার হিন্দুজা পরিবারের চার সদস্য। মানব পাচারের অভিযোগ থেকে নিষ্কৃতি মিললেও ভারতীয় গৃহকর্মীদের ‘নির্যাতন এবং শোষণে’র অভিযোগে হিন্দুজা পরিবারের চার সদস্যকে দোষী সাব্যস্ত করল সুইৎ‌জ়ারল্যান্ডের একটি আদালত। তাঁদের কারাদণ্ডের সাজা শুনিয়েছেন বিচারক। সেই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে উচ্চ আদালতের দ্বারস্থ হলেন অভিযুক্তেরা।

Advertisement

অভিযোগ, তাঁরা ভারত থেকে ন্যূনতম বেতনে লোক নিয়ে এসে জেনিভায় তাঁদের প্রাসাদোপম বাড়িতে গৃহপরিচারকের কাজ করান। ব্রিটেনের ধনীতম পরিবারের চার সদস্য— প্রকাশ হিন্দুজা, কমল হিন্দুজা, অজয় হিন্দুজা এবং নম্রতা হিন্দুজার বিরুদ্ধে শাস্তি ঘোষণা করা হয়েছে। প্রকাশ হলেন হিন্দুজা গোষ্ঠীর প্রতিষ্ঠাতা পরমানন্দ দীপচাঁদ হিন্দুজার তৃতীয় পুত্র। ইউরোপে হিন্দুজা গোষ্ঠীর সমস্ত সংস্থার মাথায় রয়েছেন তিনি। কমল তাঁর স্ত্রী। অজয় তাঁদের পুত্র এবং নম্রতা পুত্রবধূ। আদালত জানিয়েছে, প্রকাশ এবং কমলকে সাড়ে চার বছর কারাবাসে থাকতে হবে। আর তাঁদের পুত্র এবং পুত্রবধূকে চার বছরের কারাদণ্ডের সাজা দেওয়া হয়েছিল।

অভিযোগ, কর্মচারীদের শুধু যে কম বেতন দেওয়া হত, তা নয়। একই সঙ্গে, দুর্ব্যবহারও করা হত। কর্মচারীদের প্রাসাদের বাইরে পা রাখার অধিকার ছিল না। পাসপোর্টও কেড়ে নেওয়া হত তাঁদের। সেই সঙ্গে নির্ধারিত সময়ের থেকেও অনেক বেশি সময় কাজ করতে তাঁদের বাধ্য করতেন হিন্দুজারা। এমনকি, কর্মচারীদের থাকতে দেওয়া হত প্রাসাদের বেসমেন্টে। যেখানে জানলা পর্যন্ত ছিল না।

Advertisement

বিচারক সাবিনা মাসাকোটা তাঁর রায়ে বলেছেন, ‘‘কর্মচারীদের অভিজ্ঞতার অভাবকে কাজে লাগানো হয়েছে। অনেক কর্মচারীই তাঁদের অধিকার সম্পর্কে সচেত ছিলেন না। কম টাকায় বেশি খাটিয়ে নেওয়াই উদ্দেশ্য ছিল অভিযুক্তদের।’’ মামলার শুনানি চলাকালীন সরকার পক্ষের আইনজীবী মনে করিয়ে দেন, হিন্দুজারা তাঁদের পোষ্য কুকুরের জন্য যে অর্থ ব্যয় করেন, তাঁদের পরিচারকেরা তার সিকিভাগও পান না।

আদালতের বাইরে বিষয়টি নিষ্পত্তি করতে চেয়েছিলেন, হিন্দুজা পরিবারের সদস্যেরা, এমন অভিযোগও উঠেছে। যদিও শুনানি চলাকালীন সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করা হয়েছে হিন্দুজা পরিবারের সদস্যদের পক্ষ থেকে। তাঁদের আইনজীবী আদালতে দাবি করেছেন, তাঁর মক্কেলদের বিরুদ্ধে ওঠা সব অভিযোগ ভিত্তিহীন। তিন জন কর্মচারী যথেষ্ট সুবিধা পেয়েছিলেন। কখনই তাঁদের বিচ্ছিন্ন করে রাখা হয়নি। এমনকি প্রাসাদ ছেড়ে যাওয়ার অনুমতিও ছিল। তবে সেই সব যুক্তি ধোপে টেকেনি বিচারকের সামনে। আদালতের এই রায়কে চ্যালেঞ্জ করে উচ্চ আদালতে যাওয়ার কথা জানিয়েছেন হিন্দুজা পরিবারের আইনজীবী।

কর্মী শোষণের পাশাপাশি মানবপাচারের অভিযোগও উঠেছিল প্রকাশদের বিরুদ্ধে। যদিও আদালত সেই মামলা খারিজ করে দেয়। আদালতের যুক্তি, যে হেতু কর্মীরা নিজের ইচ্ছায় ভারত থেকে কাজ করতে আসতেন, তাই এ ক্ষেত্রে 'মানবপাচার' বলা চলে না।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement