জেহাদের নামে সন্ত্রাস ছড়াচ্ছেন জামাত-উদ দাওয়া প্রধান হাফিজ সইদ। আর এই অপরাধেই মুম্বই হামলার মূল চক্রী ও তাঁর চার সহযোগীকে আটক করে রাখা হয়েছে বলে এ বার সরকারি ভাবে জানাল পাকিস্তান সরকার।
শনিবারেই আদালতের তিন সদস্যের একটি রিভিউ বোর্ডের সামনে পেশ করা হয়েছিল হাফিজ ও তাঁর চার সহযোগী— জাফর ইকবাল, আব্দুল রহমান আবিদ আবদুল্লা উবেইদ এবং কাজি কাশিফ নিয়াজ-কে। কেন তাঁকে আটক করা হল জানতে চাওয়া হয় পাক প্রশাসনের কাছে। পাকিস্তানের অভ্যন্তরীণ মন্ত্রক জানায়, হাফিজ ও তাঁর সঙ্গীরা জোহাদের নামে সন্ত্রাস ছড়াচ্ছেন। এর পরই বোর্ড হাফিজ ও তাঁর সঙ্গীদের আটকের পুরো ঘটনার বিবরণ আদালতে জমা করার নির্দেশ দেয় অভ্যন্তরীণ মন্ত্রককে।
আরও পড়ুন: ওসামার মৃত্যুর ‘প্রতিশোধ’ চান ছেলে হামজা
শনিবারে কড়া নিরাপত্তার মধ্যে লাহৌরের শীর্ষ আদালতে নিয়ে আসা হয় ওই পাঁচ জনকে। সেই সময় আদালত চত্বরের বাইরে হাফিজের বহু সমর্থক। পাক অভ্যন্তরীণ মন্ত্রকের অভিযোগকে নস্যাত্ করে হাফিজ পাল্টা দাবি করেন, কাশ্মীরিদের হয়ে আওয়াজ তোলার কারণেই তাঁকে আটক করা হয়েছে। সইদ বলেন, “সরকার যে অভিযোগ তাঁর বিরুদ্ধে তুলছে, সেটা আগে কখনও প্রমাণিত হয়নি। কাশ্মীর নিয়ে পাক সরকারের দুর্বল নীতি এবং কাশ্মীরের আজাদি নিয়ে সরব হওয়ায় আমি ও আমার সংগঠনকে শিকার বানানো হচ্ছে।” সইদ আরও জানান, কাশ্মীরিদের হয়ে আওয়াজ তুলতেই তাঁকে গৃহবন্দি করা হয়। যদিও হাফিজের সেই বক্তব্যকে খারিজ করেছে পাক অভ্যন্তরীণ মন্ত্রক।
পাক অভ্যন্তরীণ মন্ত্রকের এক আধিকারিক অবশ্য হাফিজের আটকের ব্যাপারে অন্য তথ্য দিয়েছেন। তাঁর মতে, রাষ্ট্রপুঞ্জ এবং আন্তর্জাতিক মহলের চাপে পড়েই হাফিজকে আটক করতে বাধ্য হয়েছে পাকিস্তান। গত ৩০ জানুয়ারি পঞ্জাব সরকার সন্ত্রাস-বিরোধী আইনে হাফিজ ও তাঁর চার সহযোগীকে গৃহবন্দি করেছিল। ৩০ এপ্রিল তাঁদের গৃহবন্দির সময় আরও ৯০ দিন বাড়ায় পঞ্জাব সরকার।
সইদ ও তাঁর সহযোগীরা আদালতে একটি পিটিশন দাখিল করেন। সেখানে বলা হয়, কোনও রকম আইনি নোটিস ছাড়াই তাঁদের আটক করা হয়েছে। আরও বলা হয়, আমেরিকা ও ভারতকে সন্তুষ্ট করতে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে জামাত-উদ দাওয়ার নেতাদের আটক করা হয়েছে।
হাফিজ সইদ ও তাঁর সংগঠনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিলে তার ফল ভুগতে হবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছিল মার্কিন প্রশাসন। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, কার্যত সেই চাপে পড়েই আটক রাখা হয়েছে হাফিজকে।