crime

জার্মানিতে হানা বন্দুকবাজের, হত মা-সহ ১০

প্রত্যক্ষদর্শীদের বয়ান শুনে বোঝা যায় একাই দু’টি জায়গায় তাণ্ডব চালিয়েছে বন্দুকবাজ। সারা রাত তল্লাশি অভিযানের পরে শেষ রাতে প্রকাশ্যে আসে টোবিয়াসের পরিচয়। আজ ভোরেই তার ফ্ল্যাটে হানা দেয় পুলিশ। 

Advertisement

 সংবাদ সংস্থা

ফ্রাঙ্কফুর্ট শেষ আপডেট: ২১ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ০৪:৪৯
Share:

ছবি: রয়টার্স।

অতি দক্ষিণ চরমপন্থী এক বন্দুকবাজের গুলিতে মৃত্যু হল ন’জনের। পরে নিজের মাকেও গুলি করে হত্যা করে আত্মঘাতী হয় ওই আততায়ী। বুধবার রাতে জার্মানির হানাউ শহরের ঘটনা। জার্মান চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেল জানিয়েছেন, জাতিবিদ্বেষের ফলেই এই হামলা। সাম্প্রতিক কালে জার্মানিতে এত বড় মাপের বন্দুক হামলার ঘটনা ঘটেনি। নিহতেরা প্রায় সকলেই অভিবাসী এবং অধিকাংশই তুরস্কের নাগরিক।

Advertisement

কাল রাত ১০টা। প্রথমে ‘মিডনাইট’ নামে একটি হুকা বারে ঢুকে এলোপাথাড়ি গুলি চালায় বছর তেতাল্লিশের ওই ব্যক্তি। স্থানীয় সংবাদমাধ্যম জানাচ্ছে, তার নাম টোবিয়াস আর। সে জার্মান নাগরিক। ‘মিডনাইট’ থেকে বেরিয়ে সে ‘এরিনা বার অ্যান্ড কাফে’ নামে আর একটি পানশালায় ঢোকে। বন্দুক নিয়ে সেখানে বেশ কিছু ক্ষণ তাণ্ডব চালানোর পরে নিজের বাড়ি ফিরে যায় সে। খবর যায় পুলিশে। তারা প্রথমে ভেবেছিল আততায়ী হয়তো একাধিক। প্রত্যক্ষদর্শীদের বয়ান শুনে বোঝা যায় একাই দু’টি জায়গায় তাণ্ডব চালিয়েছে বন্দুকবাজ। সারা রাত তল্লাশি অভিযানের পরে শেষ রাতে প্রকাশ্যে আসে টোবিয়াসের পরিচয়। আজ ভোরেই তার ফ্ল্যাটে হানা দেয় পুলিশ।

সেখানে গিয়ে প্রথমে বছর বাহাত্তরের এক বৃদ্ধার গুলিবিদ্ধ দেহ উদ্ধার করে পুলিশ। তারা জানতে পারে নিহত বৃদ্ধা টোবিয়াসের মা। পরে সেই ফ্ল্যাট থেকেই টোবিয়াসের দেহ উদ্ধার হয়। প্রাথমিক তদন্তের পরে পুলিশের ধারণা, মাকে হত্যা করে নিজেকে গুলি করেছে টোবিয়াস।

Advertisement

কেন এ ভাবে গুলি করে এতগুলো মানুষকে খুন করল টোবিয়াস, তার ব্যাখ্যাও দিয়েছে পুলিশ। তারা জানিয়েছে, অভিবাসীদের হত্যা করতেই ওই বার দু’টিতে ঢুকেছিল সে। অপরাধের অবশ্য কোনও অতীত-রেকর্ড ছিল না টোবিয়াসের। তবে সে যে অতি দক্ষিণ চরমপন্থায় বিশ্বাসী, তা তার বিভিন্ন অনলাইন পোস্ট থেকে জানা গিয়েছে। তার আগ্নেয়াস্ত্রটির লাইসেন্স ছিল। গাড়ি থেকে উদ্ধার হয়েছে প্রচুর ম্যাগাজ়িন।

বিষয়টি নিয়ে আজ বার্লিনে সংবাদমাধ্যমের কাছে মুখ খুলেছেন চ্যান্সেলর ম্যার্কেল। জানিয়েছেন, জাতিবিদ্বেষের কারণেই যে এই হামলা, তা স্পষ্ট। ‘‘জাতিবিদ্বেষ হল বিষ। ঘৃণা হল বিষ। আর আমাদের মানতে হবে এই বিষ আমাদের সমাজেই রয়েছে আর বহু অপরাধের জন্য দায়ী,’’ বলেছেন ম্যার্কেল। তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিচেপ তায়িপ এর্ডোয়ান জানিয়েছেন, নিহতদের মধ্যে অন্তত পাঁচ জন তাঁর দেশের নাগরিক। তাঁর আশা, জার্মান সরকারের যথাযথ তদন্তে হামলার প্রকৃত উদ্দেশ্য উঠে আসবে।

কালকের ঘটনার পরে হানাউ জুড়ে আতঙ্ক ছড়িয়েছে। ফ্রাঙ্কফুর্ট থেকে এই শহর মাত্র ২৫ কিলোমিটার দূরে। এক লক্ষ মানুষের বাস। ছিমছাম এই শহরে অপরাধ হয় হাতে গোনা। কাল এত বড় মাপের হামলায় আতঙ্কিত শহরবাসী। ক্যান লুকা ফ্রিজেনা নামে এক মহিলার বাবা একটি পানশালার মালিক। হামলার সময়ে তিনি সেখানেই উপস্থিত ছিলেন। সঙ্গে ছিল ফ্রিজেনার এক ছোট ভাই। ফ্রিজেনা বললেন, ‘‘ওদের দু’জনেরই আঘাত লেগেছে। ওরা কাঁদছিল, আতঙ্কে রয়েছে এখনও। আমরা সবাই গোটা ঘটনায় স্তম্ভিত।’’ জার্মানির অস্ত্র আইন এমনিতেই খুব কড়া। কালকের হামলার পরে সেই আইনে আরও রাশ টানার কথা ভাবা হচ্ছে বলে জানিয়েছে স্থানীয় প্রশাসন।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement