মানফ্রেড গেনডিৎসকি। ছবি: সংগৃহীত।
জীবনের ১৩টা বছর কেটে গিয়েছে গরাদের ও পারে, হঠাৎ করে আদালতে নির্দোষ প্রমাণিত হয়ে কী করবেন বুঝে উঠতে পারছেন না মানফ্রেড গেনডিৎসকি। ১৩ বছর আগে খুনের দায়ে জেল হয়েছিল তাঁর, গত শুক্রবার মিউনিখের একটি আদালত তাঁকে নির্দোষ সাব্যস্ত করে বেকসুর খালাস দিয়েছে। ৬২ বছরের মানফ্রেডের অনুচ্চারিত দাবি, তাঁর জীবনের ১৩টি হারানো বছর ফিরিয়ে দেওয়া হোক।
২০০৮ সালে জার্মানির মিসবাখ প্রদেশের রটাখ-এগার্ন শহরের একটি আবাসন দেখভালের কাজ করতেন মানফ্রেড। সেই আবাসনের একটি ফ্ল্যাটের বাথটব থেকে উদ্ধার হয় ৮৭ বছরের এক বৃদ্ধার মৃতদেহ। বৃদ্ধা ছিলেন ওই ফ্ল্যাটেরই বাসিন্দা। তাঁর মাথায় আঘাতের চিহ্ন থাকায় প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের ধারণা হয়, মানফ্রেডই খুন করেছেন বৃদ্ধাকে। প্রতিবেশীদের মুখে বৃদ্ধার সঙ্গে তাঁর বাদানুবাদের কথা শুনে সেই সন্দেহ আরও ঘনীভূত হয়। গ্রেফতার করা হয় তাঁকে। সেই শুরু মানফ্রেডের লড়াই। ২০১৩ সালে তাঁকে যাবজ্জীবন কারাবাস দেয় জার্মানির একটি আদালত। গ্রেফতারি থেকে মামলা পর্যন্ত পুরো সময় জুড়ে তিনি সোচ্চারে জানিয়ে গিয়েছেন, খুন তিনি করেননি। শুক্রবার আদালতের রায়ে তাঁর সততা সুবিচার পেল, মনে করছেন মানফ্রেড।
এই খবরে শোরগোল পড়েছে জার্মানির সংবাদমাধ্যমে। নড়েচড়ে বসেছে পুলিশ ও প্রশাসনও। মিউনিখের আদালতের বিচারপতি জানিয়েছেন, নির্দোষ মানফ্রেডকে অন্যায় ভাবে গ্রেফতার করার ক্ষতিপূরণ হিসাবে তাঁকে চার লক্ষ ডলার ক্ষতিপূরণ দিতে হবে প্রশাসনকে। এর সঙ্গে এই ১৩ বছর ধরে জেলে কাটানো প্রতিটা দিনের জন্য ৮২ ডলার করে দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। পুরো বিচারের সময়টাই মাথা উঁচু করে বসেছিলেন মানফ্রেড। তাঁর আইনজীবী রেজিনা রিক ফরেন্সিক ও কম্পিউটার সিমুলেশন-সহ একাধিক আধুনিক পদ্ধতিতে প্রমাণ দাখিল করেন। সেই সব প্রমাণ খতিয়ে দেখে আদালত মানফ্রেড নির্দোষ এই সিদ্ধান্তে আসে।