শিকারির গুলি খেয়ে হাঁটু মুড়ে মাটিতে নেমে এসেছে পাহাড়ের মতো শরীরটা। পাশে বন্দুক হাতে উল্লাসের ভঙ্গিতে জার্মান শিকারি। এই ছবি সোশাল সাইটে আসতেই নিন্দায় সোচ্চার পরিবেশ ও পশুপ্রেমীরা। ক্ষোভ ছড়িয়েছে অন্যান্য মহলেও।
গত ৩০ বছর ধরে সে-ই ছিল আফ্রিকার সবচেয়ে বড় হাতি। জিম্বাবোয়ের গোনারঝৌ ন্যাশনাল পার্কে সে দিনই প্রথম দেখা গিয়েছিল তাকে। সেই শেষ দেখা।
এখন তার অস্তিত্ব শুধুই সোশাল সাইটে, ছবি হিসেবে।
জিম্বাবোয়ের গোনারঝৌ ন্যাশনাল পার্কের লাগোয়া এলাকায় অর্থের বিনিময়ে শিকারের অনুমতি মেলে। সম্প্রতি ৬০ হাজার ডলার খরচ করে সেখানে হাতি শিকারের অনুমতি নেন ওই জার্মান শিকারি। স্থানীয় এক অভিজ্ঞ শিকারিকেও তিনি সঙ্গে নেন। পারিশ্রমিকের বিনিময়ে বিদেশি শিকারিদের বড় বড় পশু জঙ্গলে খুঁজে পেতে সাহায্য করেন এই সব স্থানীয় লোকজন। গোনারঝৌ ন্যাশনাল পার্কের লাগোয়া এলাকায় আফ্রিকা মহাদেশের সবচেয়ে বড় হাতিটিকে খুঁজে পেতে তিনিই জার্মান শিকারিকে সাহায্য করেন বলে শোনা যাচ্ছে। তবে, এই চাঁদমারির আয়োজকদের তরফে জার্মান শিকারি বা তাঁর স্থানীয় সহকারীর নাম প্রকাশ করা হয়নি।
যে হাতিটিকে শিকার করা হয়েছে, তার বয়স ৪০ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে। বিশাল পাহাড়ের মতো চেহারা নিয়ে উঠে দাঁড়ালে তার দাঁত দু’টি মাটিতে ঠেকত। রহস্যজনকভাবে শিকারের দিনই দক্ষিণ জিম্বাবোয়ের গোনারঝৌ ন্যাশনাল পার্কের কাছে প্রথমবার দেখা গিয়েছিল হাতিটিকে। ওই এলাকার বাসিন্দারা আগে কখনও হাতিটিকে দেখেননি। গত ৩০ বছরে এর চেয়ে বড় হাতি আফ্রিকা মহাদেশের আর কোথাও দেখা যায়নি। তবে কি নিজের এলাকা ছেড়ে প্রথম দিনই বাইরে বেরিয়েছিল সে? আর সেই দিনেই কি নিষ্ঠুর শিকারির নিশানায় প্রাণ গেল তার? নানা প্রশ্ন উঠছে নানা মহলে।
মাস তিনেক আগেই সিসিল নামে একটি সিংহকে শিকারের খবর প্রকাশ্যে আসায় তোলপাড় হয়েছিল বিশ্ব জুড়ে। এক মার্কিন দন্ত চিকিৎসক শখের শিকারে গিয়ে হংগে অভয়ারণ্যে একটি সিসিল নামে সিংহ শিকার করেন। তার পরেও জার্মান শিকারির হাতে জিম্বাবোয়েতে এভাবে মরতে হল আফ্রিকার বৃহত্তম হাতিটিকে! বিস্মিত সব মহলই।