গাজ়া অভিমুখে ইজ়রায়েলি বাহিনী। ছবি: রয়টার্স।
তিন ঘণ্টার সময়সীমা শেষ। গাজ়ায় স্থলপথ ধরে ‘অপারেশন’ শুরু করতে ইজ়রায়েলি প্রশাসনের সবুজ সঙ্কেতের অপেক্ষায় প্রহর গুনছে সে দেশের সেনা। রবিবার গাজ়া ভূখণ্ডের তুলনামূলক নিরাপদ স্থানে চলে যাওয়ার জন্য সেখানকার বাসিন্দাদের অনুরোধ জানায় ইজ়রায়েলের সেনা। কার্যত গাজ়াবাসীকে প্রাণ হাতে নিয়ে পালিয়ে যাওয়ার জন্য সময়সীমা বেঁধে দেওয়া হয়। বিকেল সাড়ে ৩টেয় সেই সীমা শেষ হয়েছে। এই সময়সীমা পেরোনোর পরেই তারা গাজ়া ভূখণ্ডে সর্বাত্মক হামলা চালাতে চলেছে বলে জানিয়েছিল ইজ়রায়েলি সেনা। তাই এর পরের পরিণতি নিয়ে আশঙ্কিত নানা মহল।
ইজ়রায়েলি ডিফেন্স ফোর্সের তরফে রবিবার বলা হয়, “গাজ়া ভূখণ্ডের বাসিন্দা এবং উত্তর গাজ়ার বাসিন্দাদের আমরা আগেই অনুরোধ করেছিলাম যে, নিরাপত্তার কারণেই আপনারা দক্ষিণ দিকে সরে যান। আমরা এখন জানাতে চাই যে, সকাল ১০টা থেকে ১টা পর্যন্ত আমরা ওই অঞ্চলে কোনও দমনমূলক পদক্ষেপ করব না। এই সময়ের মধ্যে অনুগ্রহ করে আপনারা গাজ়ার উত্তরাংশ থেকে দক্ষিণ দিকে সরে যান।” গাজ়ার উত্তরাংশ থেকে দক্ষিণে যাওয়ার যে ‘করিডর’, তা সুরক্ষিত এবং নিরাপদ রাখার ব্যাপারে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল ইজ়রায়েলি সেনা। তবে বেঁধে দেওয়া সময়সীমা শেষ হয়ে যাওয়ায় এই প্রতিশ্রতি রক্ষার কোনও দায় তাদের রইল না।
ইজ়রায়েলি প্রশাসনের একটি সূত্র মারফত জানা গিয়েছে, পরবর্তী পদক্ষেপ নিয়ে জরুরি আলোচনায় বসেছেন সে দেশের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু-সহ অন্য শীর্ষ আধিকারিকেরা। সেই বৈঠকের পরেই সেনার কাছে হামলা শুরু করা কিংবা না করার বিষয়ে বার্তা পৌঁছবে। তবে সেনার তরফে প্রস্তুতি সেরে রাখা হয়েছে। প্রশাসনের উচ্চমহল থেকে কেবল সবুজ সঙ্কেতটুকুই আসা কেবল বাকি। শনিবারই গাজ়া সীমান্তের একটি সেনাঘাঁটিতে গিয়ে নেতানিয়াহু সেনাকর্মীদের জিজ্ঞাসা করেছিলেন, তাঁরা পরবর্তী পদক্ষেপের জন্য প্রস্তুত কি না। তার পর রবিবারের এই সক্রিয়তা থেকে গাজ়ায় ইজ়রায়েলি হামলা নিয়ে সতর্ক প্রায় সব পক্ষই। তবে হামাসের পরবর্তী পরিকল্পনা নিয়ে এখনও স্পষ্ট ভাবে কিছু জানা যায়নি।
ইজ়রায়েল প্রশাসন সূত্রে আগেই জানা গিয়েছিল, খুবই ঘিঞ্জি এবং জনবহুল এলাকা হওয়ার কারণে কেবল আকাশপথে হামলা করে গাজ়াকে নিয়ন্ত্রণে আনা যাচ্ছে না। তাই গাজ়ায় এ বার স্থলপথেও হামলা চালাতে চাইছে তারা। হামাসকে জনবিচ্ছিন্ন করতে প্যালেস্তিনীয়দের দক্ষিণে পাঠিয়ে সশস্ত্র গোষ্ঠীটির মূল ঘাঁটি, গাজ়ার উত্তরাংশে হামলা চালাতে চাইছে ইজ়রায়েল।