দক্ষিণ আফ্রিকায় বর্ণবিদ্বেষের বিরুদ্ধে তাঁর লড়াই আজও স্মরণীয়। তবে সময়ের ব্যবধানে সেই মোহনদাস কর্মচন্দ গাঁধীই বিতর্কের কেন্দ্রবিন্দুতে। অন্য কোথাও নয়, সেই আফ্রিকাতেই। বিরোধের উত্তাপ এতটাই যে আক্রায় ঘানা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সরিয়ে দেওয়া হল গাঁধীর মূর্তি। দু’বছর আগে প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায় যার আবরণ উন্মোচন করেছিলেন।
২০১৬-র জুনে মূর্তি প্রতিষ্ঠার পর থেকেই বিতর্কের শুরু। সেপ্টেম্বরে শুরু হয়েছিল ‘গাঁধী মাস্ট ফল’ আন্দোলন। পুরোভাগে ছিলেন অধ্যাপক ও ছাত্ররা। এমন আন্দোলনের যুক্তি কী? প্রতিবাদীদের দাবি, গাঁধী দক্ষিণ আফ্রিকায় ভারতীয়দের অধিকার নিয়ে লড়েছিলেন ঠিকই, কিন্তু তাঁর লেখালেখিতেই ফুটে উঠেছিল জাতিবিদ্বেষের ভাবনা। বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপকদের দাবি, গাঁধী জাতি ব্যবস্থার সমর্থক ছিলেন। তিনি লিখেছিলেন, ভারতীয়েরা কালো আফ্রিকানদের থেকে ‘অনেক অনেক বেশি উচ্চস্তরে’ রয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের খবর জানাতে গিয়ে বুধবার রেডিয়ো ইউনিভার্স মূর্তি সরানোর কথা প্রকাশ করেছে। ছাত্ররা জানিয়েছেন, মঙ্গলবার রাতেই এটি সরানো হয়। যে কর্মীরা মূর্তিটি সরিয়েছেন, তাঁরা জানান, উপরের মহলের আদেশ পেয়েই ওই কাজ করেছেন তাঁরা। ইনস্টিটিউট অব আফ্রিকান স্টাডিজের কলা বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ওবাডেল কামবন বলেন, ‘‘এটা কালো মানুষদের সম্মানের জয়।’’ আর বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র বেঞ্জামিন মেনসার মন্তব্য, ‘‘গাঁধী মূর্তি সরানো ঘানার মানুষের জন্য বিরাট জয়। বারবার এটি মনে করিয়ে দিচ্ছিল, আমরা কত নিচু স্তরে রয়েছি।’’ এক ছাত্রীর মন্তব্য, ‘‘অনেক আগেই মূর্তি সরানো উচিত ছিল। কূটনীতির সঙ্গে এর কোনও যোগ নেই।’’
আরও পড়ুন: ব্রাসেলসে ব্রেক্সিট বৈঠক, আস্থা ভোটে জিতলেও স্বস্তি নেই টেরেসার
আফ্রিকায় গাঁধীকে নিয়ে এমন প্রতিবাদ অবশ্য নতুন নয়। ২০০৬-এ জোহানেসবার্গে একই অভিযোগকে সামনে রেখে বিক্ষোভ হয়েছিল।