—ফাইল চিত্র।
ঢাকার ধানমন্ডিতে ‘ভাঙাবাড়ি’-র ঘরে কালো কফিতে চুমুক দিতে দিতে বাংলা গানে বুঁদ তিনি। লালনের গান শুনে কখনও অজান্তেই বাঁ হাতে তাল ঠুকছেন নিজের হাঁটুতে।
কখনও কি গুনগুন গুঞ্জনও! ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাকরঁকে গান শোনাচ্ছেন ‘জলের গান’ ব্যান্ডের রাহুল আনন্দ। হাতের একতারায় সুরের রেশ ধরছেন, লয় রাখছেন পায়ে বাঁধা ঘুঙুরে। লালন, আব্বাসউদ্দিন, আব্দুল হালীম হয়ে প্রতুল মুখোপাধ্যায়ের ‘আমি বাংলায় গান গাই’!
রাহুল ও তাঁর স্ত্রী উর্মিলা শুক্লার বসত ‘ভাঙাবাড়ি’ সরগরম সোমবার সন্ধ্যায়। অতিথিরা বসেছিলেন স্টুডিয়োয়। বাংলার লোকজ সঙ্গীতে টান আছে মাকরঁর। পিয়ানো বাজান শখে। প্রেসিডেন্টের আগ্রহের কথা জেনেই রাহুলের গান শোনার আয়োজন করেছিল ঢাকার ফরাসি দূতাবাস। বাংলাদেশের তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী হাছান মাহমুদ নিয়ে যান তাঁকে। কিন্তু সে জন্য তো বরাদ্দ ছিল ৪০ মিনিট। গানের ভেলায় কখন যেন পেরিয়ে গিয়েছেন পৌনে ২ ঘণ্টা। শিল্পী তাঁকে উপহার দিলেন একতারা, মন দিয়ে দেখে নিলেন বাংলার সেই অমোঘ সঙ্গীতাস্ত্র বাজানোর কারিকুরি।
দিল্লির জি২০ থেকে রবিবার রাতে ঢাকায় পৌঁছন ফরাসি প্রেসিডেন্ট। সে দিনই নৈশভোজে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাঁকে আপ্যায়ন করেন রকমারি ইলিশের পদ, কাচ্চি বিরিয়ানি, লুচি, কাবাব, পাটিসাপটা, রসগোল্লা ও বাংলার মিষ্টি দইয়ে। পর দিন সকালে ৩২, ধানমন্ডি রোডে শেখ মুজিবুর রহমানের বাসভবনে গিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদনের পরে হাসিনার সঙ্গে বৈঠকে বসেন মাকরঁ। বঙ্গবন্ধু-২ কৃত্রিম উপগ্রহের প্রযুক্তি সহযোগিতায় ফরাসি ও বাংলাদেশের সংস্থার মধ্যে একটি চুক্তি ছাড়া বাংলাদেশের পরিকাঠামো উন্নয়নে ১৮ কোটি ৪০ লক্ষ ইউরো ঋণ সাহায্যের বিষয়ে চুক্তি হয় দু’দেশের। বৈঠক সেরে মাকরঁ চলে যান সাভারে, পানসি চড়ে ভেসে বেড়ান তুরাগ নদের জলে। তাঁর সম্মানে বাইচ প্রতিযোগিতা উৎসাহ ভরে
দেখেন। সন্ধ্যায় ওঠেন ফিরতি বিমানে।