এই হামলায় কি আইএস বিরোধী অভিযানে পিছু হটবে ফ্রান্স?

এক বছর কাটার আগেই আবার সন্ত্রাসবাদী হামলার নিশানায় ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিস। এ বারের হামলা আরও ব্যাপক এবং মারাত্মক। এই হামলা গোটা বিশ্বকে ভাবিয়ে তুলেছে, কেন বারবার শিল্পকলার এই শহরই আক্রমণের নিশানা হচ্ছে। এর পিছনে অনেকগুলি কারণ থাকার সম্ভাবনা। বিশ্লেষণে বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ।

Advertisement

শান্তনু চক্রবর্তী

শেষ আপডেট: ১৪ নভেম্বর ২০১৫ ১৭:২৬
Share:

ফরাসি প্রেসিডেন্ট।

(লেখক কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের প্রফেসর এবং ওই বিশ্ববিদ্যালয়েরই ইনস্টিটিউট অব ফরেন পলিসি স্টাডিজের অ্যাকাডেমিক কমিটির আহ্বায়ক।)

Advertisement

এক বছর কাটার আগেই আবার সন্ত্রাসবাদী হামলার নিশানায় ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিস। এ বারের হামলা আরও ব্যাপক এবং মারাত্মক। এই হামলা গোটা বিশ্বকে ভাবিয়ে তুলেছে, কেন বারবার শিল্পকলার এই শহরই আক্রমণের নিশানা হচ্ছে। এর পিছনে অনেকগুলি কারণ থাকার সম্ভাবনা।

Advertisement

গত সেপ্টেম্বর মাস থেকেই ইসলামিক স্টেট (আইএস) বিরোধী কোয়ালিশনের অন্যতম সদস্য হিসেবে ফরাসি বিমানবাহিনী সিরিয়ায় আইএস-এর ঘাঁটিগুলিতে বোমাবর্ষণ করে চলেছে। সেপ্টেম্বরের শেষেই ফ্রান্সের এক মাত্র যুদ্ধবিমান বহনকারী জাহাজ ‘শার্ল দ্য গল’কে পারস্য উপসাগরে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। আইএস-এর বিরুদ্ধে অভিযানকে আরও জোরদার করার লক্ষ্যে। তাই এই জঙ্গি হামলার ঘটনা ফ্রান্সকে তা থেকে বিরত করার জন্যে ঘটানো হতে পারে। তবে এটা দেখার বিযয়, এতে ফরাসি সরকার শেষ পর্যন্ত পিছিয়ে আসে, নাকি আরও বেশি করে আইএস বিরোধী অভিযানে সামিল হয়।

প্রভাব পড়বে ইউরোপের উদ্বাস্তু সমস্যার ওপর?

আরও যেটা দেখার, তা হল- এই হামলার প্রভাব ইউরোপ উদ্বাস্তু সমস্যা এবং অভিবাসন নীতির উপর কতটা পড়ছে। পশ্চিম এশিয়া, উত্তর আফ্রিকা এবং আফগানিস্তানে সন্ত্রাসকবলিত এলাকা থেকে আসা উদ্বাস্তুর ক্রমবর্ধমান সংখ্যা এবং তাঁদের ইউরোপে আগমন আদতে ইউরোপীয় ইউনিয়নের মধ্যে ও তার সদস্য দেশগুলির দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কে ফাটল ধরিয়েছে। বেশির ভাগ শরণার্থীরই শেষ গন্তব্য জার্মানি। বেআইনি শরণার্থীদের ফ্রান্সের সীমান্ত এলাকা দিয়ে ইউরোপের অন্যান্য গন্তব্যে পারাপার না আটকাতে পারায় ব্রিটেন-সহ ইউরোপের বিভিন্ন দেশ কিন্তু বারবার ফ্রান্সকেই দায়ী করেছে।

কিছু দিন আগেই একটি প্রতিবেদনে দেখা গিয়েছে যে, ফ্রান্সের ক্যালে সীমান্ত এলাকায় কী ভাবে হাজার হাজার শরণার্থী বেআইনি ভাবে সুরক্ষা বাহিনীর সামনে দিয়েই সীমান্ত পার হয়ে যাচ্ছে। এই ঘটনার পর ফ্রান্স এবং ইউরোপের বিভিন্ন মহলে শরণার্থীদের আশ্রয় দেওয়ার বিরোধী গোষ্ঠী হয়তো আরও শক্তিশালী হয়ে উঠবে।

ইউরোপের অন্যান্য দেশের মতো ফরাসি জাতীয় রাজনীতিও হয়তো এর প্রভাবমুক্ত হবে না।

ফ্রান্সের দক্ষিণপন্থী দল ন্যাশনাল ফ্রন্ট পার্টি ইতিমধ্যেই তাদের শক্তি বাড়িয়েছে। অন্যান্য রাজনৈতিক দলগুলিও এই সুযোগে কোণঠাসা করতে পারে ফরাসি রাষ্ট্রপতি ওলাদঁকে। অর্থনৈতিক অবনতির পরিপ্রেক্ষিতে এমনিতেই দুর্বল বলে প্রতিপন্ন রাষ্ট্রপতি ওলাদঁ এখন ঘুরে দাঁড়াতে পারেন কি না, সেটাই দেখার বিষয়।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement