মলদ্বীপের প্রেসিডেন্ট মহম্মদ মুইজ়্জ়ু।
মলদ্বীপের প্রেসিডেন্ট মহম্মদ মুইজ়্জ়ুকে ভারত সম্পর্কে ‘গোঁ ধরে না থাকার’ পরামর্শ দিয়েছেন তাঁর পূর্বসূরি ইব্রাহিম সোলি। তাঁর বার্তা, “দেশকে আর্থিক সঙ্কট থেকে বার করে আনার জন্য একগুঁয়েমি না করে পড়শি দেশগুলির সঙ্গে কথা বলা উচিত মুইজ়্জ়ুর।” তিনি আরও বলেছেন, “কিছু সংবাদমাধ্যমে বলছে, ঋণ পুনর্গঠনের জন্য মুইজ়্জ়ু কথা বলেছেন ভারতের সঙ্গে। কিন্তু দেশের অর্থনীতির এই হাল তো ভারত থেকে নেওয়া ঋণের জন্য তৈরি হয়নি।”
চিনের থেকে নেওয়া বিপুল ঋণের জালে মলদ্বীপের এই অবস্থা বলে সাক্ষাৎকারে দাবি করেছেন সোলি। তিনি জানান, ভারতের থেকে মলদ্বীপ ৮০০ কোটি রুফিয়া (প্রায় ৪৩০০ কোটি ভারতীয় টাকা) ঋণ নিয়েছে। তার পরিশোধের শর্তও তুলনামূলক সহজ। এ দিকে, চিনের থেকে নেওয়া ঋণের অঙ্কটা তার দ্বিগুণেরও বেশি, ১৮০০ কোটি রুফিয়া (ভারতীয় মুদ্রায় প্রায় ৯৭২৬ কোটি টাকা)।
২০১৩ থেকে ২০১৮ পর্যন্ত প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট আবদুল্লা ইয়েমিন মলদ্বীপে কুর্সিতে ছিলেন। মানবাধিকার লঙ্ঘিত হওয়ার অভিযোগে পশ্চিমের বিভিন্ন দেশ ঋণ দিতে অস্বীকার করলে তিনি চিনের শরণ নেন। এবং তখনই মলদ্বীপে পরিকাঠামো উন্নয়নে বিপুল বিনিয়োগ করেছিল চিন। দেশের ঘাড়ে এখন সেই ঋণেরই বিপুল অঙ্কের বোঝা। কারাগারে বন্দি ইয়েমিনের পথে হেঁটে মুইজ়্জ়ুর সরকার এখন তার ফল হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছে বলেও কটাক্ষ করেছেন ডেমোক্র্যাটিক পার্টির নেতা সোলি। সোলির মতে, এই সমস্ত কারণেই সুর নরম করে ভারতীয় সাহায্যকে ‘অগ্রগণ্য’ বলে সম্প্রতি সাক্ষাৎকারে বলতে হয়েছে মুইজ়্জ়ুকে।
ভারতপন্থী সোলির আমলে মালের সঙ্গে নয়াদিল্লির সম্পর্ক ভাল ছিল। ভারত-বিরোধিতায় ভর করে নির্বাচনে জিতে গত নভেম্বরে ক্ষমতায় আসার পরে জানুয়ারিতেই চিন সফরে যান মুইজ়্জ়ু। কিন্তু কট্টর চিনপন্থী মলদ্বীপের বর্তমান প্রেসিডেন্ট এখনও পর্যন্ত পা দেননি ভারতে। চিনে গিয়ে বেশ কিছু চুক্তি সেরে ফিরে ভারতের বিরুদ্ধে ক্রমশ সুর চড়াতে থেকেছেন তিনি। মলদ্বীপ থেকে ভারতের সেনা সরিয়ে নিতেও নির্দেশ দিয়েছেন। তাদের কথা মতো আগামী ১০ মে-র মধ্যে ভারতীয় সেনা ফিরিয়ে নেওয়া হবে বলে জানিয়েছে নয়াদিল্লি। সেই প্রক্রিয়াই বর্তমানে চলছে। তবে মুইজ়্জ়ু সরকারের বক্তব্য, ভারতের সঙ্গে চলা সমস্ত প্রকল্প আরও পোক্ত করতে চায় তারা। শুধু বিদেশি কোনও সেনা তারা মলদ্বীপের মাটিতে থাকতে দেবে না।