(বাঁ দিক থেকে) শেখ হাসিনা এবং দীপু মনি। —ফাইল চিত্র।
ক্ষমতার পালাবদলের পর বাংলাদেশের প্রাক্তন শাসকদল আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের গ্রেফতারির পালা চলছে ধারাবাহিক ভাবে। এ বার প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জমানার মন্ত্রী তথা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক দীপু মনিকে গ্রেফতার করল পুলিশ।
ঢাকা মহানগর পুলিশের তরফে এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, সোমবার স্থানীয় সময় রাত ৮টার সময় বারিধারা এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয় মনিকে। যদিও ঠিক কোন অভিযোগে তাঁকে গ্রেফতার করা হয়েছে, সে বিষয়ে পুলিশ কিছু জানায়নি। তবে গ্রেফতার নেত্রীকে গোয়েন্দা বিভাগের (ডিবি) হেফাজতে রাখা হয়েছে বলে জানানো হয়েছে। প্রসঙ্গত হাসিনা জমানায় বাংলাদেশে বিদেশ, শিক্ষা, সমাজ কল্যাণের মতো গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রকের দায়িত্বে ছিলেন মনি।
কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলন ঘিরে সৃষ্টি হওয়া প্রবল অশান্তি এবং হিংসার আবহে গত ৫ অগস্ট প্রধানমন্ত্রী পদে ইস্তফা দিয়ে বাংলাদেশ ছেড়েছিলেন হাসিনা। তার তিন দিন পর, ৮ অগস্ট নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ মুহাম্মদ ইউনূসকে প্রধান উপদেষ্টা করে গড়া হয় অন্তর্বর্তী সরকার। এর পরে হাসিনা সরকারের কোনও মন্ত্রীকে গ্রেফতারের খবর প্রথম এসেছিল ১৩ অগস্ট। সে দিন প্রাক্তন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক এবং প্রধানমন্ত্রী থাকাকালীন হাসিনার বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্টা, পূর্ণমন্ত্রীর মর্যাদাপ্রাপ্ত সলমন এফ রহমানকে ঢাকার সদরঘাট এলাকা থেকে গ্রেফতারের কথা জানিয়েছিল ঢাকা মহানগর পুলিশ।
পরে তাঁদের বিরুদ্ধে কোটা সংস্কার আন্দোলন চলাকালীন ঢাকা কলেজের সামনে সংঘর্ষে দোকানদারের মৃত্যুর ঘটনায় নিউমার্কেট থানায় খুনের মামলা দায়ের করা হয়েছিল। এর পর ১৪ অগস্ট প্রাক্তন ডেপুটি স্পিকার শামসুল হক টুকু, প্রাক্তন ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনায়েদ আহ্মেদ পলক এবং ছাত্রলীগের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাধারণ সম্পাদক তনভীর হাসান সৈকতকে গ্রেফতার করা হয়।
গত ১৬ আগস্ট গ্রেফতার করা হয় সেনাবাহিনী থেকে সদ্য বরখাস্ত মেজর জেনারেল জিয়াউল আহসানকে। তিনি হাসিনা জমানায় টেলিযোগাযোগ নজরদারির জাতীয় সংস্থা ন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন মনিটরিং সেন্টারের (এনটিএমসি) মহাপরিচালক ছিলেন। এঁদের সকলকেই নিউমার্কেট থানার ওই হত্যা মামলায় গ্রেফতার দেখানো হয়েছে বলে ‘প্রথম আলো’য় প্রকাশিত খবরে দাবি। ১৬ অগস্ট রাতে ঠাকুরগাঁওয়ের বাড়ি থেকে প্রাক্তন জলসম্পদ মন্ত্রী তথা আওয়ামী লীগের নেতা রমেশচন্দ্র সেনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তাঁর বিরুদ্ধেও একটি খুনের মামলা রুজু করা হয়েছে।