Bangladesh Unrest

এ দেশে থেকে হাসিনার ইউনূস-বিরোধিতা সমর্থন করছে না ভারত! স্ট্যান্ডিং কমিটিকে জানালেন মিস্রী

স্ট্যান্ডিং কমিটির সামনে মিস্রী জানিয়েছেন, ‘যোগাযোগের ব্যক্তিগত মাধ্যম’ ব্যবহার করে ইউনূস সরকারের বিষয়ে বিবৃতি দেন হাসিনা। ভারত তাঁকে এই বিষয়ে কোনও সুযোগ করে দেয়নি।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক

কলকাতা শেষ আপডেট: ১২ ডিসেম্বর ২০২৪ ১৩:২৮
Share:

(বাঁ দিক থেকে) শেখ হাসিনা, মুহাম্মদ ইউনূস এবং বিক্রম মিস্রী। —ফাইল চিত্র।

ভারত থেকেই শেখ হাসিনা বাংলাদেশের মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকারের সমালোচনা করে বিবৃতি দিয়েছেন। কিন্তু আওয়ামী লীগ নেত্রীর সেই বিবৃতিকে সমর্থন করছে না ভারত। বিদেশ সংক্রান্ত সংসদীয় স্ট্যান্ডিং (স্থায়ী) কমিটির মুখোমুখি হয়ে ভারতের এই অবস্থানের কথা স্পষ্ট করেছেন বিদেশসচিব বিক্রম মিস্রী। ‘দ্য হিন্দু’-র একটি প্রতিবেদনে এমনটাই জানানো হয়েছে।

Advertisement

প্রতিবেদন অনুসারে, ঢাকা সফর সেরে গত বুধবার কংগ্রেস সাংসদ শশী তারুরের নেতৃত্বাধীন ওই কমিটির মুখোমুখি হন মিস্রী। সেখানে তিনি বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক ব্যাখ্যা করে জানান যে, বাংলাদেশের মানুষের সঙ্গে সুসম্পর্ক গড়তে চায় নয়াদিল্লি। ‘নির্দিষ্ট কোনও রাজনৈতিক দল’ বা সরকারের সঙ্গে নয়।

বিশেষজ্ঞদের একাংশ মনে করছেন, বাংলাদেশ প্রশ্নে মিস্রীর এই ব্যাখ্যা বিদেশনীতিতে বড় বদলের ইঙ্গিত। কারণ, হাসিনার আওয়ামী লীগ এবং ভারতের সম্পর্ক আগাগোড়াই মজবুত। অগস্টে সে দেশে পালাবদলের পর এই বিষয়টি নিয়ে ভারতকে কটাক্ষও করেছে খালেদা জিয়ার বিএনপি-র মতো আওয়ামী লীগ-বিরোধী দলগুলি। এই আবহে নির্দিষ্ট কোনও রাজনৈতিক দলের কথা বলে মিস্রী হাসিনার দলের দিকেই ইঙ্গিত করলেন কি না, তা নিয়ে আলোচনা শুরু হয়েছে।

Advertisement

‘দ্য হিন্দু’র প্রতিবেদন অনুসারে, স্থায়ী কমিটির সামনে মিস্রী জানিয়েছেন, ‘যোগাযোগের ব্যক্তিগত মাধ্যম’ (প্রাইভেট কমিউনিকেশন ডিভাইস) ব্যবহার করে হাসিনা বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের বিষয়ে ওই বিবৃতি দিয়েছিলেন। ভারত ঐতিহ্য বজায় রেখে হাসিনাকে এ দেশের মাটি থেকে রাজনৈতিক কার্যকলাপ পরিচালনার কোনও সুযোগ দেয়নি বলে জানান বিদেশসচিব। মিস্রী আরও জানান, অন্য দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে ভারত কখনওই হস্তক্ষেপ করে না।

গত সোমবার ঢাকা সফরে বিদেশসচিব পর্যায়ের বৈঠকে যোগ দিয়ে ভারতের এই অবস্থানের কথা বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারকে জানিয়ে এসেছেন বলে দাবি করেন মিস্রী। একই সঙ্গে বাংলাদেশের ‘নিন্দনীয় ঘটনাসমূহ’ নিয়ে উদ্বেগের কথাও ইউনূস প্রশাসনকে জানিয়েছেন বলে উল্লেখ করেন বিদেশসচিব।

দু’দেশের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কে টানাপড়েনের আবহেই সোমবার ঢাকায় বাংলাদেশের পররাষ্ট্রসচিব মহম্মদ জসীম উদ্দিনের সঙ্গে একান্ত বৈঠকে বসেন মিস্রী। প্রতিনিধি পর্যায়ের বৈঠকের আগে দুই দেশের বিদেশসচিব একান্তে বৈঠক সারেন। বৈঠকের পর বাংলাদেশের পররাষ্ট্র দফতরের উপদেষ্টা মহম্মদ তৌহিদ হোসেনের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন মিস্রী। সৌজন্য সাক্ষাতের পর সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে বৈঠকের নির্যাস জানান ভারতের বিদেশসচিব।

সোমবার মিস্রী বলেন, “আমাদের মধ্যে অত্যন্ত খোলামেলা, গঠনমূলক আলোচনা হয়েছে। বাংলাদেশের সঙ্গে ইতিবাচক, গঠনমূলক এবং উভয়ের পক্ষে লাভজনক সম্পর্ক চায় ভারত।” একই সঙ্গে তিনি বলেন, “আমরা সাম্প্রতিক ঘটনাপ্রবাহ নিয়েও আলোচনা করেছি এবং আমি সংখ্যালঘুদের সুরক্ষা এবং উন্নয়ন নিয়ে আমাদের উদ্বেগের কথা জানিয়েছি। আলোচনায় এসেছে সাংস্কৃতিক এবং ধর্মীয় সম্পত্তির উপরে হামলার ঘটনাও।”

সম্প্রতি আমেরিকায় আয়োজিত এক আলোচনাসভায় ভার্চুয়াল মাধ্যমে বক্তৃতা করেন বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, যা নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয়েছিল।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement