আট মাস হয়ে গিয়েছে ইন্টারনেট দাপিয়ে বেড়াচ্ছে র্যানসামওয়্যার ‘নোটপেত্যা’। নাকানিচোবানি অবস্থা একাধিক সংস্থার। প্রায় পঙ্গু দশা বিভিন্ন দেশের সরকারি ওয়েবসাইটের। যদিও এত দিন এ নিয়ে প্রকাশ্যে মুখ খোলেনি ব্রিটেন-আমেরিকা কেউই। বৃহস্পতিবার অবশেষে, হোয়াইট হাউসের পক্ষ থেকে সাইবার-হামলার কথা স্বীকার করে নেওয়া হল। তাদের দাবি, নোটপেত্যা তৈরি করেছে ক্রেমলিন। একই দাবি তুলেছে, ব্রিটেন-ডেনমার্কও।
এ দিন বিবৃতি দিয়ে হোয়াইট হাউস জানিয়েছে, ‘‘২০১৭ সালের জুন মাসে সব চেয়ে ভয়ঙ্কর সাইবার হামলা চালিয়েছে রুশ সেনাবাহিনী।’’ বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, ‘‘কোটি কোটি ডলার ক্ষতির মুখে পড়েছে ইউরোপ, এশিয়া ও আমেরিকার বিভিন্ন দেশ। ইউক্রেনে অচলাবস্থা টিকিয়ে রাখতে ওই দেশকে হাতিয়ার করেছে রাশিয়া। কিন্তু আসলে যে ওরা জড়িত, সেটা স্পষ্ট। এর জন্য আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে ভুগতে হবে ক্রেমলিনকে।’’ আসলে ইউক্রেন থেকেই প্রথম ছড়িয়েছিল র্যানসামওয়্যারটি। স্বাভাবিক ভাবেই আঙুল উঠেছিল তাদের দিকে।
ওই দিন সকালে আমেরিকার আগেই প্রায় এক বিবৃতি দিয়েছে ব্রিটেন ও ডেনমার্কের সরকার। ব্রিটিশ প্রতিরক্ষা সচিব গেভিন উইলিয়ামসন বলেন, ‘‘আইনের বই ছিঁড়ে ফেলে দিয়েছে রাশিয়া। এর সঠিক জবাব দেবে ব্রিটেন।’’
র্যানসামওয়্যার হল এমন এক ধরনের ম্যালওয়্যার, যা নিশানায় ঢুকে একের পর এক ফাইল আন্তর্জাল থেকে উড়িয়ে দিতে পারে। হ্যাকারদের দাবি মতো অর্থ (র্যানসাম) না মেটালেই নিশ্চিহ্ন হয়ে যায় টার্গেট-ফাইল। সেই থেকে নাম ‘র্যানসামওয়্যার’। বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, অন্তত দু’হাজার নোটপেত্যা ছেড়ে দেওয়া হয়েছিল নেট-দুনিয়ায়। হ্যাকারদের নিশানায় ছিল ইউক্রেন। এমনিতেই রুশ সমর্থনপ্রাপ্ত বিচ্ছিন্নতাবাদীদের দাপটে টালমাটাল অবস্থা দেশটার। বিশেষ করে মস্কো ২০১৪ সালে ক্রিমিয়া আত্মসাৎ করার পর থেকেই ইউক্রেনের সঙ্গে তাদের সম্পর্ক আরও খারাপ। ইউক্রেনের সঙ্গে ব্যবসায়িক সূত্রে যুক্ত ব্রিটেনের ‘রেকিট বেঙ্কিস্টার’, ওলন্দাজ সংস্থা ‘টিএনটি’ ও ড্যানিশ জাহাজ প্রস্তুতকারী সংস্থা ‘মারেস্ক’ ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়েছে নোটপেত্যার হামলায়। ১২০ কোটি ডলারেরও বেশি খোয়াতে হয়েছে ওই সংস্থাগুলিকে।