(বাঁ দিকে) আততায়ী টমাস ম্যাথু ক্রুক এবং ডোনাল্ড ট্রাম্প (ডান দিকে)। ছবি: সংগৃহীত।
স্বভাবশান্ত ছেলেটা কী ভাবে এই কাজ করে ফেললেন, তা বুঝতেই পারছেন না ট্রাম্পকে লক্ষ্য করে গুলি চালানো তরুণের পরিবার। ওই আততায়ীর বাবা ম্যাথু ক্রুক আমেরিকার সংবাদমাধ্যম সিএনএন-কে জানিয়েছেন, কী ভাবে তাঁদের ছেলে এই কাজ করল, তা বোঝার চেষ্টা করছেন। প্রশাসনিক আধিকারিকদের সঙ্গে কথা না বলা পর্যন্ত তিনি সবিস্তারে কিছু বলতে চান না বলেও জানান। তরুণটির মামাও এখনও ধোঁয়াশায় রয়েছেন।
তবে ট্রাম্পের সভায় হামলা চালানো ওই তরুণ টমাস ম্যাথু ক্রুককে যাঁরা ছোটবেলা থেকে চেনেন, তাঁরা জানিয়েছেন, ছোট থেকেই একা থাকতে ভালবাসতেন তিনি। স্কুলে তার কয়েক জন সহপাঠী সিএনএন-কে জানিয়েছেন, কারও সঙ্গেই মিশতে চাইতেন না ম্যাথু। রাজনীতিতেও তাঁর কোনও রকম উৎসাহ ছিল না। এই স্বভাবের জন্য ক্লাসের অন্য সহপাঠীরা তাঁকে উত্ত্যক্ত করতেন বলে জানানো হয়েছে। এক সহপাঠীর কথায়, “আমি তো ভাবতেই পারছি না ম্যাথু এই কাজ করেছে। ওর মতো শান্ত, মুখচোরা ছেলে এটা করল কী ভাবে?”
জানা গিয়েছে, ম্যাথুর বাবা এবং মা দু’জনেই আচরণ সংক্রান্ত কাউন্সেলিং করে থাকেন। তাঁদের পুত্রের মধ্যেও আচরণগত কোনও পরিবর্তন, তাঁরা লক্ষ করেছিলেন কি না, তা নিয়ে কৌতূহল তৈরি হয়েছে। যদিও এখনই বিস্তারিত ভাবে মুখ খুলতে চায়নি তরুণের পরিবার।
আগামী ৫ নভেম্বর আমেরিকার প্রেসিডেন্ট নির্বাচন। ট্রাম্প রিপাবলিকান দলের প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী। শনিবার তাঁর প্রচারসভা ছিল পেনসিলভেনিয়ায়। সেখানেই ঘটে বন্দুকবাজের এই হানা। হঠাৎ পর পর তিনটি গুলির শব্দ শোনা যায়। কথা বলতে বলতে আচমকা ডান কানে হাত দেন ট্রাম্প। কিছু যে ঘটেছে, বুঝতে পেরে মুহূর্তে নিচু হয়ে বসে পড়েন পিছনে দাঁড়িয়ে থাকা সমর্থকেরা। ট্রাম্প নিজেও কানে হাত দিয়েই বসে পড়েন। মঞ্চেই পোডিয়ামের আড়ালে তাঁকে ঘিরে দাঁড়িয়ে ছিলেন নিরাপত্তারক্ষীরা। কিছু ক্ষণ পরে তাঁকে ধরে আস্তে আস্তে তোলা হয়। ট্রাম্প উঠে দাঁড়ান। দেখা যায়, তাঁর ডান কান থেকে রক্ত গড়িয়ে পড়ছে। মুখেও রক্ত লেগে রয়েছে।
তদন্তকারী সংস্থা এফবিআই জানায়, হামলাকারী বছর কুড়ির এক তরুণ। পুলিশ ও নিরাপত্তারক্ষীদের গুলিতে নিহত হন তিনি। তাঁর ছোড়া গুলিতে আরও এক ট্রাম্প সমর্থকের মৃত্যু হয়। দু’জন গুরুতর জখম হন। এফবিআই-এর তরফে জানানো হয়, পেনসিলভেনিয়ার বেথেল পার্কের বাসিন্দা ক্রুক। যেখানে ট্রাম্পের মঞ্চ বাঁধা হয়েছিল, তার থেকে ১৩০ গজ (১১৯ মিটার) দূরে একটি উঁচু ছাদ থেকে ট্রাম্পকে লক্ষ্য করে একাধিক গুলি ছুড়েছিলেন তিনি। সঙ্গে সঙ্গেই সতর্ক হয়ে যান সিক্রেট সার্ভিস কাউন্টার-স্নাইপার দলের সদস্যেরা। তাঁরা ক্রুককে লক্ষ্য করে পাল্টা গুলি ছোড়েন। তাতেই মৃত্যু হয় তরুণের।