চিলের রিসার্চ স্টেশন। ছবি রয়টার্স।
পৃথিবীর ‘শেষ প্রান্তে’ও পৌঁছে গেল নভেল করোনাভাইরাস। এই প্রথম সংক্রমণ ধরা পড়ল দক্ষিণ মেরুতে। সেখানে চিলের রিসার্চ স্টেশনের অন্তত ৩৬ জন কর্মীর দেহে সংক্রমণ ধরা পড়েছে।
আর আজই ব্রিটেনের স্বাস্থ্যমন্ত্রী ম্যাট হ্যানকক জানালেন, করোনার আরও একটি নতুন প্রকারভেদ বা স্ট্রেনের সন্ধান মিলেছে তাঁদের দেশে। সম্প্রতি যে স্ট্রেনটির খোঁজ মেলার পরেই ব্রিটেনের সঙ্গে যোগাযোগ ছিন্ন করেছে বহু দেশ, এটি তার চেয়েও বেশি ছোঁয়াচে। এর উৎস দক্ষিণ আফ্রিকা। ব্রিটেনে এই স্ট্রেনে আক্রান্ত দু’জনের সন্ধান মিলেছে, যাঁরা সম্প্রতি দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে ফেরেন। হ্যানকক বলেছেন, ‘‘দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে ফিরেছেন, এমন সবাই যেন অবিলম্বে আইসোলেশনে যান।’’ তিনি জানান, ব্রিটিশ স্ট্রেনের চেয়েও বেশি পরিবর্তিত হয়েছে দক্ষিণ আফ্রিকান স্ট্রেনটি। এ দিকে, ব্রিটেনের সঙ্গে আলোচনার পরে ফ্রান্স আজ সকাল থেকে সীমান্ত খুলেছে। চালকদের করোনা পরীক্ষা করা হবে, এই শর্তে ব্রিটিশ ট্রাকগুলিকে আসতে দেবে ফ্রান্স। তবে এত দিন ধরে ট্রাকের সারি জমেছে প্রায় আট কিলোমিটার ধরে। বন্দরের কাছে গাড়ি পার্কিংয়ের জায়গায় করোনা পরীক্ষার শিবিরগুলি করা হচ্ছে। তাই যানজট লেগে রয়েছে।
দক্ষিণ মেরুতে করোনা নিয়ে আজ চর্চা চলেছে দিনভর। অ্যান্টার্কটিকায় মূলত দু’টি ঋতু। গ্রীষ্ম ও শীত। যে-হেতু পৃথিবীর দক্ষিণ গোলার্ধে অবস্থিত, তাই অক্টোবর থেকে ফেব্রুয়ারি মাস এখন গরম। জানুয়ারিতে তাপমাত্রা সব চেয়ে বেশি থাকে— শূন্য ডিগ্রি সেলসিয়াসের কাছাকাছি। এই বরফের চাদরে ঢাকা দক্ষিণ মেরুতে বিভিন্ন দেশের ৩৮টি রিসার্চ স্টেশন রয়েছে। অন্তত হাজারখানেক মানুষ কাজ করেন। শীতটা বেশ সতর্কতা মেনে চলা হয়েছিল, যাতে কোনও ভাবেই ভাইরাস প্রবেশ করতে না-পারে। বাইরে থেকে বরফের রাজ্যে আসা-যাওয়া বন্ধ রাখা হয়েছিল। বন্ধ ছিল পর্যটন। কিন্তু শীত কমতেই কিছুটা শিথিল হয় কড়াকড়ি। বাইরে থেকে ঢোকা-বেরোনোর অনুমতি দেওয়া হয়। তাতেই সম্ভবত বিপত্তি। চিলের সশস্ত্র বাহিনী জানিয়েছে, তাদের ‘বার্নার্ডো ও’হিগিনস বেস’-এর ৩৬ জন সংক্রমিত হয়েছেন। এঁদের মধ্যে ২৬ জন সেনা, ১০ জন সাধারণ মানুষ। এই ১০ জন রিসার্চ স্টেশনে রক্ষণাবেক্ষণের কাজে যুক্ত ছিলেন। প্রত্যেককে আলাদা করে রাখা হয়েছে। কারও বাড়াবাড়ি হওয়ার খবর নেই।
আমেরিকায় দৈনিক আক্রান্ত হচ্ছেন দু’লক্ষের কাছাকাছি। মোট সংক্রমিত এ দেশে ১ কোটি ৮৬ লক্ষ ছাড়িয়েছে। মৃত ৩ লক্ষ ৩০ হাজার। আজ বিদায়ী প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প টুইট করে ৯০ হাজার কোটি ডলারের করোনা ত্রাণ প্যাকেজ তিন গুণ বাড়ানোর কথা বলেছেন। এই মর্মে কংগ্রেসে আবেদনও জানিয়েছেন। যদিও আগাগোড়া এ ব্যাপারে আগ্রহ না-দেখিয়ে শেষ বেলায় তাঁর এই ভোলবদলে অবাক অনেকেই।