প্রথম করোনা আক্রান্তের খোঁজ। প্রতীকি ছবি।
প্রথম নিশ্চিত করোনা সংক্রমিতের সন্ধান মিলল অবশেষে। জানা গিয়েছে, চিনের উহানের একটি খাবারের বাজারে সামুদ্রিক খাবারের বিক্রেতা এক মহিলাই দুনিয়ায় প্রথম করোনা সংক্রমিত, যাঁর সমস্ত উপসর্গই ছিল। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার রিপোর্টে উঠে এসেছিল, এক হিসাবরক্ষকের কথা। এতদিন তাঁকেই দুনিয়ার প্রথম করোনা সংক্রমিত মানুষ হিসেবে মনে করা হচ্ছিল। কিন্তু সাম্প্রতিক গবেষণা বলছে, তা ছিল ভুল।
২০১৯ সালে এই উহান শহর থেকেই প্রথম করোনা সংক্রমণ ছড়ানো শুরু হয়েছিল। তার পর তা গোটা বিশ্ব জুড়ে ছড়িয়ে পড়ে।
এতদিন প্রথম করোনা রোগী হিসেবে যাঁকে ভাবা হয়েছিল, পেশায় হিসাবরক্ষক সেই ব্যক্তি জানিয়েছেন, ৮ ডিসেম্বর তাঁর প্রথম উপসর্গ দেখা দেয়। যদিও তখনও করোনা অতিমারির ছড়িয়ে পড়ার ঢের বাকি।
সাম্প্রতিক গবেষণায় উঠে এসেছে, ১১ ডিসেম্বর উহানের বাজারে সামুদ্রিক খাবার ফেরি করা ওই মহিলা-সহ আরও কয়েকজনের মধ্যে করোনা সংক্রমণের উপসর্গ দেখা দিয়েছিল। আমেরিকার অ্যারিজোনা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মাইকেল ওরোবি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার গবেষণা এবং এই সংক্রান্ত আরও গবেষণাকে গাণিতিক ভাবে বিশ্লেষণ করে নয়া সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছেন।
এ বছর জানুয়ারি মাসে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার বাছাই করা গবেষকরা চিন সফর করেন। সেখানেই তাঁরা ওই হিসাবরক্ষকের সাক্ষাৎকার নেন। তখন জানা যায়, ওই হিসাবরক্ষকের শরীরে ২০১৯ সালের ৮ ডিসেম্বর প্রথম করোনার উপসর্গ দেখা দেয়। এ বছরের মার্চে প্রকাশিত রিপোর্টে তাঁকেই পৃথিবীর প্রথম করোনা সংক্রমিত ব্যক্তি হিসেবে তুলে ধরা হয়। কিন্তু বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পাঠানো দলের অন্যতম সদস্য পিটার ডাসজ্যাক জানাচ্ছেন, তিনি ওরোবির বিশ্লেষণ অধ্যয়ন করেছেন এবং তাতে সন্তুষ্ট। তাঁর মতে ৮ ডিসেম্বরের হিসেবে সত্যিই কোনও গোলমাল ছিল। তিনি বলছেন, ৮ ডিসেম্বর দিনটিকে হিসেবের মধ্যে রাখায় ভুল হয়েছিল। কারণ ওই ব্যক্তিকে নাকি আসল প্রশ্নটাই করা হয়নি— তাঁর প্রথম উপসর্গ কবে দেখা গিয়েছিল। বরং একইরকম উপসর্গ নিয়ে যাঁরা নিকটবর্তী হাসপাতালে যাচ্ছিলেন, সেখানেই তথ্য মিলিয়ে ওই হিসেবরক্ষকের উপসর্গ প্রকাশ পাওয়ার দিন হিসেবে ৮ ডিসেম্বরকে ধরা হয়। এই কারণেই বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার রিপোর্টকে ঠিক বলে মানতে পারছেন না ওই দলেরই সদস্য পিটার। বরং তাঁর অনেক বেশি যুক্তিগ্রাহ্য মনে হয়েছে ওরোবির বিশ্লেষণকে।