—প্রতীকী চিত্র।
বর্ষার মরসুমে যখন চর্চার কেন্দ্রে থাকার কথা ইলিশের, তখন দেশে আলোচনায় সাপের উপদ্রব, বিশেষ করে চন্দ্রবোড়া! স্থানীয় সূত্রের খবর, গ্রামাঞ্চলে সাপে কাটার সংখ্যা এতটাই বেড়েছে যে সচেতনতা বাড়ানোয় উদ্যোগী হয়েছেন খোদ স্বাস্থ্যমন্ত্রী। হাসপাতাল ও স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলিতে যথেষ্ট অ্যান্টি ভেনম মজবুত রাখার নির্দেশও দিয়েছেন তিনি। তবে এরই মাঝে জনসাধারণের মধ্যে সাপ নিয়ে আতঙ্ক ও গুজবের ফলে ওই সরীসৃপগুলিরও যেন প্রাণসঙ্কট! সমাজমাধ্যমে যেমন ফুটে উঠছে নানা গ্রামে চন্দ্রবোড়ার উপস্থিতির ছবি, তেমন ভাবেই প্রকাশ্য আসছে বহু সাপ মেরে ফেলার ঘটনাও। স্বাভাবিক ভাবেই উদ্বিগ্ন পরিবেশ বিশেষজ্ঞ-সহ আরও অনেকে।
সম্প্রতি ব্রিটেনের এক প্রথম সারির সংবাদমাধ্যম তাদের রিপোর্টে বাংলাদেশে সাপের উপদ্রব নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। রিপোর্টে দাবি করা হয়েছে যে, সাপের ছোবলে প্রতি বছর অন্তত ৭ হাজার মানুষের মৃত্যু হয় বাংলাদেশে। আর দেশে বেশির ভাগ সর্পদষ্টের জন্য রাসেলস ভাইপার অর্থাৎ চন্দ্রবোড়া সাপকেই দায়ী করা যায়। তবে সময়ে হাসপাতালে ভর্তি করে ও দ্রুত অ্যান্টি ভেনম দিয়ে সাপে কাটা মানুষের অধিকাংশেরই প্রাণে বাঁচানো সম্ভব ।
এই রিপোর্ট প্রকাশ্যে আসার পরেই অবশ্য তৎপর হয়ে উঠেছে দেশের স্বাস্থ্য মন্ত্রক। স্বাস্থ্যমন্ত্রী সামন্তলাল সেন নির্দেশ দিয়েছেন যে সব হাসপাতাল ও স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলিতে যথেষ্ট অ্যান্টি ভেনম মজুত রাখতে হবে। মানুষকেও সাপের ছোবলের বিষয়ে অবগত হতে হবে ও যত দ্রুত সম্ভব সাপে কাটা ব্যক্তিকে হাসপাতালে নিয়ে যেতে হবে। প্রসঙ্গত, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু) বলে, সাপের ছোবলে মৃত্যু বিশ্বের সব চেয়ে অবহেলিত ‘ট্রপিক্যাল ডিজ়িজ়’গুলির মধ্যে একটি।
অপর দিকে, সাধারণত চন্দ্রবোড়া সাপ শুষ্ক এলাকায় মিললেও ২০০২ সালে এটি বাংলাদেশে ‘বিলুপ্তপ্রায়’ ছিল বলে জানা যায়। তবে সাম্প্রতিক কালে ফের দেশের কমপক্ষে ২৫টি জেলায় সেগুলির দেখা মিলছে। খাদ্য হিসাবে মূলত ইঁদুরের উপরে নির্ভরশীল এই সরীসৃপের বেশি দেখা মিলছে বসতি এলাকাগুলিতে। আর এমনই কিছু ছবি-ভিডিয়ো ইতিমধ্যে ছড়িয়ে পড়ছে সমাজমাধ্যমে, যার পরিণাম হচ্ছে মারাত্মক। কোথাও কোনও ভিন্ন প্রজাতির সাপকে মেরে ফেলার ঘটনা প্রকাশ্যে আসছে, কোথাও আবার কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সাহায্যে কোনও জায়গার ছবি বিকৃত করে বসিয়ে দেওয়া হচ্ছে চন্দ্রবোড়ার ছবি। ভাইরাল হওয়া এই সব ছবি-ভিডিয়োর ফলে বিভ্রান্তি ও আতঙ্কের আবহ সৃষ্টি হচ্ছে এলাকাগুলিতে।