Russia Ukraine War

Russia-Ukraine war: নবীনের মৃত্যুর তদন্ত, দেহ আনার আর্জি পরিবারের

দেহ ফিরিয়ে আনার বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী-মুখ্যমন্ত্রী থেকে শুরু করে সকলের কাছে আকুতি জানাচ্ছেন নবীনের প্রৌঢ় পিতা শেখরাপ্পা জ্ঞানগৌড়ার।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

বেঙ্গালুরু শেষ আপডেট: ০৩ মার্চ ২০২২ ০৭:৪৩
Share:

মৃত পড়ুয়া নবীন শেখারাপ্পা জ্ঞানগউধর। ছবি: টুইটার

ইউক্রেনের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর খারকিভের রাস্তায় ভারতীয় ছাত্র নবীন শেখরাপ্পা জ্ঞানগৌড়ারের মৃত্যুর তদন্ত হবে বলে জানাল রাশিয়া। নয়াদিল্লিতে ভাবী রুশ রাষ্ট্রদূত ডেনিস আলিপভ এই খবর জানিয়ে আশ্বাস দিয়েছেন, ইউক্রেনে হামলার মধ্যেও ভারতীয়দের নিরাপত্তার দিকটি বিশেষ করে নজর রাখতে বলা হয়েছে তাদের সেনাবাহিনীকে। নবীনের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন আলিপভ। তবে তাঁর দেহ ফিরিয়ে আনার বিষয়ে স্পষ্ট করে কিছু বলতে পারেননি রুশ কূটনীতিক।

Advertisement

এ দিকে দেহ ফিরিয়ে আনার বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী-মুখ্যমন্ত্রী থেকে শুরু করে সকলের কাছে আকুতি জানাচ্ছেন নবীনের প্রৌঢ় পিতা শেখরাপ্পা জ্ঞানগৌড়ার। মঙ্গলবার তাঁর পুত্রের মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়ার পরে বিকেল চাড়ে চারটে নাগাদ ফোন করেছিলেন নরেন্দ্র মোদী। তার পরে ফোন করেন কর্নাটকের মুখ্যমন্ত্রী বাসবরাজ বোম্মাই। শেখরাপ্পা জানিয়েছেন, “দু’জনের কাছেই আর্জি জানিয়েছি, ছেলের দেহটা ফেরানোর বন্দোবস্ত করুন, যাতে শেষ বারের মতো এক বার দেখতে পারি তাকে।”

কর্নাটকের হাভেরি জেলার চালাগেরি গ্রামের ২১ বছরের নবীন ইউক্রেনের খারকিভ ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজের চতুর্থ বর্ষের ছাত্র ছিল। তাঁর মৃত্যুতে স্বভাবতই ভেঙে পড়েছেন বাবা। কাটা ক্ষতে নুনের ছিটের মতো লেগেছে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী প্রহ্লাদ জোশীর মন্তব্য। মন্ত্রী বলেছেন, “মনে রাখতে হবে, দেশে মেডিক্যালের প্রবেশিকায় পাশ করতে না পেরেই এরা বিদেশে গিয়েছে।” শেখরাপ্পা জানান, অত্যন্ত মেধাবী ছেলে তাঁর। উচ্চমাধ্যমিকে ৯৭ শতাংশ নম্বর পেয়েও নিট-এ ওতরাতে পারেনি। অথচ ছোট থেকে নবীনের চোখে স্বপ্ন, ডাক্তার হবে। দেশে বেসরকারি মেডিক্যাল কলেজে পড়াতে কোটি টাকার উপরে খরচ। সে সামর্থ্য তাঁর কই? ইউক্রেনে শিক্ষার মান যেমন ভাল, এর অর্ধেক খরচে থাকা-খাওয়া সহ পড়া হয়ে যায়। ধার-দোনা করে তাই ছেলেকে পড়তে পাঠিয়েছিলেন।

Advertisement

নবীনের ভাই হর্ষ জানিয়েছেন, রোজ বার তিনেক বাড়িতে ফোন করতেন নবীন। মঙ্গলবার দেড়টার ট্রেন ধরে দেশের পশ্চিম সীমান্তে চলে যাওয়ার কথা ছিল তাঁর। সেখান থেকে রোমানিয়া হয়ে বাড়ি ফেরার চেষ্টা করতেন। ট্রেন ধরতে যাওয়ার আগে কিছু খাবার কিনতেই ভূগর্ভের অস্থায়ী আবাস থেকে বেরিয়ে একটি দোকানের সামনে লাইন দিয়েছিলেন নবীন। ঠিক তার পাশে একটি সরকারি বাড়ি উড়িয়ে দেয় রুশ বাহিনী। হর্ষ জানান, প্রাতরাশের আগে ফোন করেছিলেন নবীন। বাবার সঙ্গে সামান্য কথা হয়। কিছু ক্ষণ পরে আবার ফোন করার কথা থাকলেও সেই ফোন আর আসেনি। হর্ষ জানান, দুপুর ২টোর পরে বাড়ি থেকে নবীনকে ফোন করা হলে তা বেজে যায়। বার চারেক বাজার পরে এক মহিলা ফোন ধরে জানান, এই ফোনের মালিককে মর্গে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। অল্প কিছু ক্ষণ পরেই দিল্লির বিদেশ দফতর ফোন করে নবীনের মৃত্যু সংবাদ দেয় বাড়িতে।

নবীনের মৃত্যুতে আতঙ্ক ছড়িয়েছে খারকিভে তাঁর বন্ধু মহলে। তাঁরা এ দিন নবীনের দেহের ছবি পাঠিয়েছেন। মুখ্যমন্ত্রী বোম্মাইয়ের পরামর্শে তার একটা কপি বিদেশ মন্ত্রককেও পাঠানো হয়েছে। বাড়ির লোক আজও বিদেশ মন্ত্রক এবং ইউক্রেনে ভারতীয় দূতাবাসের কর্তাদের কাছে আর্জি জানিয়েছেন, “দেখুন না, নবীনের দেহটা যদি বাড়িতে পাঠানো যায়!”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement