ইউজারদের দীর্ঘ দিনের চাহিদা এ বার মেটাতে চলেছে ফেসবুক। ‘লাইক’ বাটনের পাশাপাশি এ বার একটা ‘ডিজলাইক’ বাটনও ইউজারদের হাতে তুলে দিচ্ছে সে। আর দিচ্ছে সহানুভূতি প্রকাশের জন্যও কয়েকটা বাটন।
ফেসবুকের বাটন নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় অনেক দিন ধরেই একটা রসিকতা প্রচলিত ছিল। সেই রসিকতা বলত, ‘লাইক’ তো ঠিক আছে, কিন্তু তার সঙ্গেই মতামত জাহির করার জন্য আরও অনেকগুলো বাটন থাকা উচিত ফেসবুকে। সেই রসিকতা ধরলে, ‘লাইক’-এর মতোই একটা ‘ডিজলাইক’ বাটন থাকা উচিত ফেসবুকে। সেই ‘ডিজলাইক’-এরও আবার অনেকগুলো রকমফের শিগগির যোগ করা উচিত। তার মধ্যে একটা হতে পারে খুব বিস্ফোরক মন্তব্য, একটা হতে পারে গালাগালি, একটা হতে পারে নেহাতই নির্বিকার ভাব— এই রকম আর কী! দাবিটা অক্ষরে অক্ষরে মেনে না নিলেও ফেসবুক অন্তত ‘ডিজলাইক’-এর কথাটা গুরুত্ব দিয়ে ভেবেছে।
তা, ফেসবুক-কর্তা মার্ক জুকারবার্গ কী বলছেন এই বাটন নিয়ে?
“লোকজন অনেক দিন ধরেই একটা ডিজলাইক বাটন আনার চাহিদা জানিয়ে এসেছে। ব্যাপারটা নিয়ে আমরা ভাবনা-চিন্তা করেছি। তার পর অবশেষে একটা নয়, অনেকগুলো ডিজলাইক অপশন আনার সিদ্ধান্ত নিয়েছি”— বলছেন জুকারবার্গ।
ঠিক এই জায়গাতে এসে কি খটকা লাগছে? অনেকগুলো ‘ডিজলাইক’ অপশন দিয়ে কী হবে?
সেই যুক্তিও মজুত আছে জুকারবার্গের ভাণ্ডারে। তাঁর বক্তব্য, সব পোস্টকে তো আর সরাসরি ‘ডিজলাইক’ বলে উড়িয়ে দেওয়া যায় না। তারও রকমফের আছে। তা ছাড়া, ফেসবুক আর যা-ই হোক, একজনের পোস্টকে হেয় করে উড়িয়ে দেওয়ার সুযোগ ইউজারদের হাতে তুলে দেবে না। “ধরুন, একটা প্রাকৃতিক বিপর্যয় বা কারও স্বজন হারানোর পোস্ট— সেটাকে তো আর আপনি লাইক করতে পারেন না! আবার, সেটা ডিজলাইক করাও যাবে না”, বলছেন জুকারবার্গ। তাহলে? অনুভূতি প্রকাশের জন্য মাঝামাঝি অনেকগুলো বাটন এনে দিচ্ছে ফেসবুক। পাশাপাশি, আর একটা ব্যাপারও বোধহয় কাজ করছে এই অনেকগুলো সহানুভূতি প্রকাশের অপশন আনার ব্যাপারে।
ফেসবুক তো আদতে ভার্চুয়াল সমাজ। সমাজে, বাস্তব জগতে সব কিছুকে কি আপনি অপছন্দ বলে এক ফুঁয়ে উড়িয়ে দিতে পারেন? ইচ্ছে থাকলেও সেটা সব সময় সম্ভব হয় না। অপছন্দ, রাগ, ক্ষোভ, ঘৃণা— এ গুলো মনে চেপে রেখে চারপাশের অন্যান্য মানুষের ব্যবহারের সঙ্গে তাল মিলিয়ে, বুদ্ধিমানের মতো জাহির করতে হয় নিজের মতামত। সেই মতামতের মধ্যে অনেকটা জায়গা জুড়ে থাকে সহানুভূতিও। সেটাকেই বলে সামাজিকতা, বিচক্ষণতাও!
ফেসবুকেই বা তার ব্যতিক্রম হবে কেন?
ব্যাপারটা কি আপনি ‘ডিজলাইক’ করছেন? কতটা? ভেবে দেখুন তো, এখনই যদি আপনি অনেকগুলো ‘ডিজলাইক’ অপশন পেয়ে যেতেন ফেসবুকে, তাহলে আনন্দবাজার-এর ফেসবুক পাতাতেও সঠিক ভাবে জানাতে পারতেন আপনার পছন্দ-অপছন্দের বহরটা!
নেই যখন, কী আর করা! আর কেউ কথা না রাখলেও জুকারবার্গ ঠিক রাখেন। বলেছেন যখন, তখন কিছু দিনের মধ্যেই ফেসবুকে চলে আসবে ‘ডিজলাইক’ করার হরের সুযোগ। আপাতত না-হয় অপেক্ষাই চলুক!