প্রতিবাদ জানিয়ে জোসলিন ফিয়োরিনা এই ছবিটি-সহ বিজ্ঞাপন দেন।
১৮৩০ সাল। এক শরতের দিনে ফরাসি শিল্পী ইউজিন দেলাক্রোয়া এঁকেছিলেন ‘লিবার্টি লিডিং দ্য পিপল’। ফরাসি বিপ্লবের সেই ছবি ব্যবহার করা হয়েছিল একটি নাটকের অনলাইন-প্রচারে। অভিযোগ, হঠাৎই বিজ্ঞাপনী প্রচারটিকে ব্লক করে দেয় ফেসবুক।
নাটকটির পরিচালক জোসলিন ফিয়োরিনার কথায়, ‘‘ফেসবুকে বিজ্ঞাপন দেওয়ার মিনিট পঁয়তাল্লিশের মধ্যে ব্লক করে দেওয়া হয়। আর তার পর আমাদের জানানো হয়, ওরকম নগ্ন ছবি দেওয়া যাবে না!’’ ফেসবুক অবশ্য পরে নিজেদের ভুল স্বীকার করে নিয়েছে।
ছবিটি যুদ্ধক্ষেত্রের। মাটিতে ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে রয়েছে দেহ। বাধা টপকে বহু মানুষকে নেতৃত্বে দিচ্ছেন এক নারী। তাঁর হাতে ফ্রান্সের তেরঙা জাতীয় পতাকা। স্বাধীনতার এই প্রতিমূর্তিকে ফ্রান্সের জাতীয় প্রতীক হিসেবে দেখা হয়। বলা হয়, ‘মারিয়ান’। ছবির নারীমূর্তির জামার বুকের অংশ ছেঁড়া। উন্মুক্ত বক্ষের সেই ছবির ‘নগ্নতা’ নিয়ে আপত্তি তুলেছিল ফেসবুক। জোসলিন পরে ফের ওই ছবিটি-সহই বিজ্ঞাপন দেন। শুধু এ বার মহিলার বুকের অংশ একটি ব্যানারে ঢেকে দেন। তাতে লেখা, ‘‘ফেসবুকের কোপে’’। এই বিজ্ঞাপনটি অবশ্য ব্লক করা হয়নি। বরং রবিবার ওই মার্কিন সোশ্যাল মিডিয়ার পক্ষ থেকে ক্ষমা চাওয়া হয়। প্যারিসের ফেসবুক ম্যানেজার এলোদি লার্সি একটি বিবৃতি দিয়ে জানান, ‘‘ফেসবুকে ঠিকই জায়গা পাবে ‘লিবার্টি লিডিং দ্য পিপল’। খবরটা জানার পরেই দ্রুত সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।’’
বিতর্ক: দেলাক্রোয়ার এই ছবিই ব্লক করে দিয়েছিল ফেসবুক।
কোটি কোটি ফেসবুক-ব্যবহারকারীর পেজের বৈধতা মাঝেমধ্যেই খতিয়ে দেখে সংস্থাটি। এলোদি বলেন, ‘‘স্বচ্ছ পরিষেবা বজায় রাখতে এ ধরনের বিজ্ঞাপনী ছবিগুলো কতটা সঙ্গত, তা খতিয়ে দেখা হয়। কখনও-সখনও ভুল হয়ে যায়।’’
কিছু দিন আগেই এক ফরাসি শিক্ষক প্যারিসের কোর্টে ফেসবুকের বিরুদ্ধে মামলা ঠুকেছিলেন। তাঁর অভিযোগ ছিল, গুস্তাভ কুর্বে-র একটি নগ্ন ছবি পোস্ট করায়, তাঁর ফেসবুক-পেজটিকে ব্লক করে দেওয়া হয়েছে। মামলাটি খারিজ করে দেয় কোর্ট। যদিও আদালতের বক্তব্য ছিল, কেন ওই পদক্ষেপ করা হয়েছে, তা না জানিয়ে ‘অন্যায়’ করেছে ফেসবুক।