মেটা হবে মূল কর্পোরেট সংস্থা। ছবি: রয়টার্স।
ফেসবুক থাকছে ফেসবুক নামেই। সামাজিক মাধ্যম হিসেবে যে অ্যাপটির বিশ্ব জোড়া বাজার, সেটি আগের মতোই থাকছে। তবে এর মালিক সংস্থা হচ্ছে মেটা। বিদ্বেষ ও ভুয়ো খবর ছড়ানো, ব্যক্তি পরিসরের তথ্য চুরির মতো অজস্র অভিযোগের মুখে ফেসবুকের এই ‘রিব্র্যান্ডিং’-এর কথা গত কাল ঘোষণা করেছেন মার্ক জ়াকারবার্গ। মেটা হবে মূল কর্পোরেট সংস্থা। তার অধীনে থাকবে ফেসবুক, হোয়াটসঅ্যাপ, মেসেঞ্জার অ্যাপ। সংস্থার মূল নজর থাকবে, মেটাভার্স-এ। বিনোদনের এ এক কৃত্রিম দুনিয়া। যেখানে নিজস্ব অবতারে মায়ার জগতে বিচরণ করবে মানুষ, খুঁজে পাবে নিজের পছন্দ মতো আনন্দ।
বিশ্বের নানা দেশে ফেসবুকের ভুমিকা নিয়ে যে সব প্রশ্ন উঠেছে, হচ্ছে সমালোচনা, গত কাল ভার্চুয়াল রিয়েলিটি সংক্রান্ত কনফারেন্স ‘কানেক্ট’-এ সে সবের জন্য ক্ষমা চাওয়া বা দুঃখপ্রকাশের পথেই হাঁটেননি মার্ক। বরং উৎসাহের সঙ্গে জানিয়েছেন, সংস্থার বৃহত্তর লক্ষ্যকে সামনে আনতেই এই নাম বদল।
ব্যবসার খাতিরে সংস্থার নাম বদল নতুন কিছু নয়। নেতিবাচক প্রচার ঝেড়ে ফেলতে বা সংস্থার অন্যান্য পণ্য-পরিষেবার কথা তুলে ধরতে অনেক নামী সংস্থাই এক বা একাধিক বার এমনটা করেছে। যেমন গুগল। জন্মেছিল ‘ব্যকরাব’ নামে। ১৯৯৮-এ গুগল নাম নেওয়ার পরে সার্চ ইঞ্জিনের পরিচয় হিসেবে এটি এতই জনপ্রিয় হয়ে ওঠে যে, তাদের বাকি ব্যবসা আড়ালে থেকে যাচ্ছিল। সে জন্য গুগল ও তাদের অন্য সব ব্যবসার মালিক সংস্থা হিসেবে গড়া হয়েছে অ্যালফাবেট। এর পরে
তাদের ব্যবসা বেড়েছে পাঁচ গুণ। ‘অ্যাপল কম্পিউটার’, নামের দ্বিতীয় অংশ ছেঁটে বাজারে আনে মোবাইল ফোন। পায় বিশ্বজোড়া কদর। এখন আইফোনই তাদের সবচেয়ে বেশি ব্যবসা দেয়। ‘ডানকিন ডোনাট’ নামের দ্বিতীয় শব্দ বাদ দিয়ে তাদের মেনুর বাকি খাবার ও পানীয়কে প্রচারে এনে ব্যবসা বাড়িয়েছে। ‘কেন্টাকি ফ্রায়েড চিকেন’ ছোট করে ‘কেএফসি’ হয়েছে, ফ্রায়েড তথা ভাজা শব্দটি স্বাস্থ্যসচেতনতার হাল ধারণার সঙ্গে খাপ খায় না বলে। ওজন কমানোর চেয়ে স্বাস্থ্যসম্মত খাবার খাওয়ার ঝোঁক বেড়েছে দেখে ‘ওয়েট ওয়াচার’ সংস্থাটি স্রেফ ‘ডব্লিউডব্লিউ’ নামে ব্যবসা করছে। একই ভাবে নেতিবাচক প্রচার থেকে দূরে থাকতে মার্লবোরো সিগারেটের প্রস্তুতকারী ফিলিপ মরিস ২০০১ থেকে নাম নিয়েছে আল্ট্রিয়া গ্রুপ।
মার্কের কাছে এত দিন ছিল ‘ফেসবুক ফার্স্ট’। এ বার হবে ‘মেটা ফার্স্ট’। তাঁর দাবি, “আগামী দিনে তাদের ‘মেটাভার্স’-এর ভার্চুয়াল রিয়েলিটির বিনোদনে মজবেন মানুষ। এটাই হতে চলেছে বিশ্বের সবচেয়ে বড় কম্পিউটিং প্ল্যাটফর্ম। আগামী দিনে ডলারের স্রোত বইবে এই খাতেই।”