প্রাক্তন টুইটারকর্মীর বিরুদ্ধে আর্থিক দুর্নীতি, জালিয়াতি এবং একটি বিদেশি সরকারের বেআইনি এজেন্ট হওয়ার দায়ও চেপেছে। প্রতীকী ছবি।
বহুমূল্য ঘড়ি ও লক্ষ লক্ষ টাকার ঘুষের বিনিময়ে সৌদি আরবের গুপ্তচরবৃত্তির দায়ে টুইটারের এক প্রাক্তন কর্মীকে কারাদণ্ড দিল আমেরিকার আদালত। আমেরিকার ওই নাগরিককে সাড়ে ৩ বছরের জন্য জেলে পাঠিয়েছে সান ফ্রান্সিসকোর ফেডারেল কোর্ট। বৃহস্পতিবার এই খবর জানিয়েছেন আমেরিকার বিচার বিভাগের আধিকারিকেরা।
আমেরিকার সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, প্রায় ৭ বছর আগে টুইটারের কর্মী থাকাকালীন সৌদি আরবের কাছে এই মাইক্রো ব্লগিং সাইটের ব্যবহারকারীদের গোপন তথ্য বিক্রি করেছিলেন আহমেদ আবৌআম্মো। যা সৌদি সরকারের কাছে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ছিল। এই প্রাক্তন টুইটারকর্মীর বিরুদ্ধে আর্থিক দুর্নীতি, জালিয়াতি এবং একটি বিদেশি সরকারের বেআইনি এজেন্ট হওয়ার দায়ও চেপেছে। যদিও আদালতে আহমেদের আইনজীবীর দাবি, সৌদির আধিকারিকদের কাছ থেকে বহুমূল্য উপহার নেওয়া ছাড়া আর কিছুই করেননি তাঁর মক্কেল।
এই মামলায় গত অগস্টে দোষী সাব্যস্ত হয়েছিলেন ৪৫ বছরের আহমেদ। ২০১৫ সালে টুইটারের কাজ ছেড়ে তিনি আমেরিকার সিয়াটলে অ্যামাজ়নের একটি শাখায় যোগ দেন। অভিযোগ, টুইটারে কাজ করার সময় সৌদি আরবের যুবরাজ এক ঘনিষ্ঠের কাছ থেকে ১ লক্ষ ডলার (ভারতীয় মুদ্রায় প্রায় ৮২ লক্ষ ৮০ হাজার টাকা) নিয়েছিলেন। সেই সঙ্গে ৪০ হাজার ডলারের একটি ঘড়িও উপহার পান তিনি। ভারতীয় মুদ্রায় প্রায় ৩৩ লক্ষ ১২ হাজার টাকা। যদিও এ বিষয়ে টুইটার কর্তৃপক্ষের কাছে কিছুই জানাননি তিনি।
আহমেদের আইনজীবীর দাবি, সৌদির সংস্কৃতিতে বহুমূল্য উপহার দেওয়ার রেওয়াজ রয়েছে। এবং সেগুলি উপহার হিসাবেই গ্রহণ করেছিলেন আহমেদ। যদিও আমেরিকার আইনজীবী কলিন স্যাম্পসন জানিয়েছেন, টুইটার ব্যবহারকারীদের বেনামি অ্যাকাউন্টগুলির পিছনে আসলে কারা রয়েছেন, সেই ব্যক্তিদের শনাক্তকরণ-সহ তাঁদের গোপন তথ্য সংগ্রহ করে তা সৌদির যুবরাজের ঘনিষ্ঠকে দিয়েছিলেন অভিযুক্ত। তাঁর পাল্টা দাবি, বিভিন্ন প্রমাণ থেকে বোঝা যাচ্ছে যে, সৌদির যুবরাজের ঘনিষ্ঠের কাছে নিজের পদকে বিক্রি করেছিলেন অভিযুক্ত।
আহমেদ ছাড়াও টুইটারের আর এক কর্মী তথা সৌদির নাগরিক আলি আলজাবারার বিরুদ্ধেও একই অভিযোগ উঠেছে। তবে এই মামলায় ১১টির মধ্যে ৬টি অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন আহমেদ। আগামী বছরের মার্চের শেষে তাঁর সাজার মেয়াদ শুরু হবে বলে জানিয়েছে আদালত।