হতাশ: ভবিষ্যৎ অজানা। উদ্ধারকারী জাহাজ ‘লাইফলাইন’-এ এক নাইজিরীয় শরণার্থী। ছবি: সোশ্যাল মিডিয়া
রাতটা শরণার্থীদের জন্য পাঠানো উদ্ধারকারী জাহাজেই কাটালেন পাঁচ জন। না, তাঁরা আশ্রয়ের খোঁজে ইউরোপে আসা শরণার্থী নন। ইউরোপের তিনটি দেশের পার্লামেন্টের সদস্য।
২৩৪ জন শরণার্থী এবং ১৭ জন নাবিক নিয়ে ভূমধ্যসাগরে পাঁচ দিন ধরে আটকে রয়েছে উদ্ধারকারী জাহাজ ‘লাইফলাইন’। লিবিয়ার উপকূল থেকে এই সব শরণার্থীকে উদ্ধার করে জাহাজটিতে তুলেছে জার্মানির একটি বেসরকারি ত্রাণ সংস্থা ‘সি ওয়াচ’। এখন দক্ষিণ ইউরোপের ছোট্ট দ্বীপরাষ্ট্র মালটা-র উপকূল থেকে ৩৮ কিলোমিটার দূরে মাঝসমুদ্রে রয়েছে জাহাজটি। যথেষ্ট খাবার ও জল থাকলেও জাহাজের অনেক শরণার্থীই খুব অসুস্থ। তাই মালটা বা আর একটু দূরের ইতালির উপকূলে নোঙর ফেলতে চাইছেন জাহাজের ক্যাপ্টেন। কিন্তু অনুমতি মিলছে না।
মালটা প্রশাসনের দাবি, ইতিমধ্যেই তারা খাবার ও পানীয় জল পাঠিয়ে দিয়েছে জাহাজে। আফ্রিকার সব থেকে কাছে থাকার সুবাদে ইউরোপে ঢোকার রাস্তা হিসেবে মালটা-কেই বারবার ব্যবহার করেন শরণার্থী। এটা সমানে চলতে দেওয়া যায় না। অন্য দিকে, ইটালির নব্যনির্বাচিত কট্টরপন্থী স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মাত্তেও সালভিনি শরণার্থীদের বিষয়ে অত্যন্ত কড়া নীতি নিয়ে চলেছেন। দিন কয়েক আগেই একই অবস্থা হয়ে়িছল শরণার্থীদের আর একটি জাহাজ ‘অ্যাকুয়েরিয়াস’-এর। সেই জাহাজটিকেও নোঙর ফেলতে দেয়নি ইটালি। শেষ পর্যন্ত স্পেনে যেতে হয় ‘অ্যাকুয়েরিয়াস’কে।
আরও পড়ুন: তাইল্যান্ডে গুহাবন্দি কিশোর ফুটবল দল
পাঁচ দিন ধরে টালবাহানা চলার পরে রবিবার রাতে ‘লাইফলাইন’-এ আসেন জার্মানির তিন, পর্তুগালের এক এবং স্পেনের পার্লামেন্টের এক জন সদস্য। উদ্দেশ্য, তাঁদের উপস্থিতি যদি মালটা বা ইটালি সরকারকে কোনও ভাবে প্রভাবিত করতে পারে।
‘লাইফলাইন’-এ বসেই ইউরোপীয় এমপি-রা বিভিন্ন দেশের সঙ্গে আলোচনা চালাচ্ছেন, যাতে অবিলম্বে কোনও না কোনও দেশ জাহাজটিকে নোঙর ফেলার অনুমতি দেয়। জানা গিয়েছে, ‘লাইফলাইন’-এর শরণার্থীদের মধ্যে বেশির ভাগই কম বয়সি পুরুষ। ৭৭ জনের বয়স ১৮ বছরের নীচে। তা ছাড়া, চারটি শিশু এবং ১৪ জন মহিলা রয়েছেন। জার্মান গ্রিন পার্টির এমপি মানুয়েল সারাৎসিন জাহাজ থেকে টুইট করে জানিয়েছেন, অনেক শরণার্থীর অবস্থা অত্যন্ত শোচনীয়। তাঁদের অবিলম্বে চিকিৎসার প্রয়োজন। ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে চিকিৎসার ব্যবস্থা না হলে বেশ কয়েক জনের প্রাণসংশয়ও হতে পারে বলে জানিয়েছেন মানুয়েল।
এমপিদের আবেদনে কে সাড়া দেয়, সে দিকেই তাকিয়ে শরণার্থীরা।