কিমের ভোটে জিতবেন কিমই

আজ উত্তর কোরিয়ায় ভোট ছিল। যে বিচ্ছিন্ন পরমাণু শক্তিধর দেশটিকে ‘ডেমোক্র্যাটিক পিপলস রিপাবলিক অব কোরিয়া’-ও বলা হয়। শাসক কিম জং উনের ‘ওয়ার্কার্স পার্টি’ বরাবরই দেশ নিয়ন্ত্রণ করে।

Advertisement

 সংবাদ সংস্থা

পিয়ংইয়্যাং শেষ আপডেট: ১১ মার্চ ২০১৯ ০২:০০
Share:

কিম জং উন। ছবি: এএফপি।

ভোট হয় প্রতি পাঁচ বছর অন্তর। নিয়ম করে। কিন্তু জয়ী হন এক জনই।

Advertisement

আজ উত্তর কোরিয়ায় ভোট ছিল। যে বিচ্ছিন্ন পরমাণু শক্তিধর দেশটিকে ‘ডেমোক্র্যাটিক পিপলস রিপাবলিক অব কোরিয়া’-ও বলা হয়। শাসক কিম জং উনের ‘ওয়ার্কার্স পার্টি’ বরাবরই দেশ নিয়ন্ত্রণ করে। তবে ভোটটা হয় ‘সুপ্রিম পিপলস অ্যাসেমব্লি’-র বিধি মেনে। লাল ব্যালট পেপারে নামটা শুধু পিয়ংইয়্যাংয়ের ‘একচ্ছত্র অধিপতি’-রই থাকে। তা ছাড়া, প্রতি ব্যালট বক্সে কিমের বাবা দ্বিতীয় কিম জন ইল এবং দাদু কিম ইল সাংয়ের বড় বড় ছবি।

মজার কথা, প্রতি বুথের কাছে একটি করে করে পেন্সিল থাকে। যদি কোনও ভোটার প্রার্থীকে ভোট দেবেন না বলে সিদ্ধান্ত নেন, তা হলে তিনি সেই নাম কেটে দিতে পারেন। ব্যবস্থা থাকলেও নাম কাটার জন্য পেন্সিলটা তুলে নিতে আজ পর্যন্ত কাউকে দেখা যায়নি।

Advertisement

উত্তর কোরিয়ার সংবাদ সংস্থা কেসিএনএ-র দাবি, গত বার ৯৯.৯৭ শতাংশ ভোট পড়েছিল। যাঁরা প্রবাসী অথবা সাগরে কাজে রয়েছেন, তাঁরাই শুধু ভোটে আসতে পারেননি বলে সংবাদ সংস্থার দাবি। তবে ১০০ শতাংশ ভোট পড়েছিল এক জনের নামেই, তিনি কিম জং উন। বিশেষজ্ঞদের মতে, বিশ্বে আর কোনও দেশ এমন ভোটপ্রক্রিয়া দেখেছে কিনা সন্দেহ। উত্তর কোরিয়ার নির্বাচনী অফিসার কো কিয়ং হাক বলেছেন, ‘‘আমাদের সমাজ এমন ভাবে তৈরি যে প্রতি নাগরিক এক জনকেই মাথায় রেখে ভোটকেন্দ্রে আসেন। তিনি আমাদের শ্রদ্ধেয় নেতা কিম জং উন। ভোটদান প্রতি নাগরিকের দায়িত্ব। কোনও নাগরিক প্রার্থীকে অস্বীকার করতে পারেন না।’’ শাসক দলের মুখপত্রেও একই সুর। সেখানকার সম্পাদকীয়তে রয়েছে, ‘‘দল এবং আমাদের নেতার প্রতি সম্মতিসূচক ভোট দেবেন সবাই।’’

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, একটা ভোট হচ্ছে, অথচ সেখানে কোনও লড়াইয়ের ব্যাপারই নেই। ভোটটা শুধু রাজনৈতিক নিয়ম, বোঝানোর চেষ্টা জনতার রায় মেনেই সব কিছু হচ্ছে। ‘কোরিয়া রিস্ক গ্রুপ’-এর আন্দ্রেই লাঙ্কভ বলেছেন, ‘‘একটা গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে সরকারকে বৈধতা দেওয়ার চেষ্টা। অথচ পিছনে কাজ করছে অদ্ভুত এক প্রাতিষ্ঠানিক নিষ্ক্রিয়তা।’’ তাঁর মতে, ‘‘সোভিয়েত যুগের কমিউনিস্ট দেশগুলিতে সাধারণ নির্বাচন হত। তবে শাসক দল নিয়ম করে দলীয় সম্মেলন ডাকার বিষয়ে ততটা গুরুত্ব দিত না। উত্তর কোরিয়াও এই ধরনের সম্মেলন এড়িয়ে চলছে গত ৩০ বছর ধরে। বাকি কমিউনিস্ট দেশগুলিকেই অনুকরণ করছে উত্তর কোরিয়া।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement