চিনে ভূমিকম্পে মৃত অন্তত ১৭৫

বাইরে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন মা লিয়া। হঠাৎই জানলা দিয়ে দেখলেন হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়ল উল্টো দিকের দোতলা বাড়িটা। তাঁর পায়ের তলায় মাটিও যে কাঁপতে শুরু করেছে, তা ততক্ষণে টের পেয়ে গিয়েছেন লিয়া। রবিবার স্থানীয় সময় বেলা সাড়ে চারটে নাগাদ ভূমিকম্পে হঠাৎই নড়ে ওঠে দক্ষিণপশ্চিম চিনের ইউনান প্রদেশের ঝাওতং শহর এবং সংলগ্ন এলাকা।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

বেজিং শেষ আপডেট: ০৪ অগস্ট ২০১৪ ০২:৩৯
Share:

কেউ আটকে আছে কি? ভূকম্পে বিধ্বস্ত বাড়িতে খোঁজ কিশোরদের। চিনের ইউনান প্রদেশে। ছবি: রয়টার্স

বাইরে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন মা লিয়া। হঠাৎই জানলা দিয়ে দেখলেন হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়ল উল্টো দিকের দোতলা বাড়িটা। তাঁর পায়ের তলায় মাটিও যে কাঁপতে শুরু করেছে, তা ততক্ষণে টের পেয়ে গিয়েছেন লিয়া।

Advertisement

রবিবার স্থানীয় সময় বেলা সাড়ে চারটে নাগাদ ভূমিকম্পে হঠাৎই নড়ে ওঠে দক্ষিণপশ্চিম চিনের ইউনান প্রদেশের ঝাওতং শহর এবং সংলগ্ন এলাকা। রিখটার স্কেলে যার মান ছিল ৬.১। প্রাণ হারান অন্তত ১৭৫ জন। আহতের সংখ্যা প্রায় পনেরোশ’। মুহূর্তের মধ্যে ওলটপালট হয়ে যায় গোটা শহর। খেলনা বাড়ির মতো ভেঙে পড়ে কয়েক হাজার ঘর-বাড়ি, অফিস, দোকানপাট। এক স্থানীয় বাসিন্দার কথায়, “গাড়ি চালাতে চালাতে মনে হল অশান্ত সমুদ্র দিয়ে নৌকায় ভেসে চলেছি।” যুদ্ধের পরে রণক্ষেত্রের চেহারা নেয় শহরটি।

মার্কিন ভূতাত্বিক সংস্থা জানিয়েছে, ভূমিকম্পের উপকেন্দ্রটি ঝাওতং শহরের ২৩ কিলোমিটার দক্ষিণপশ্চিমে লংতৌসানে।

Advertisement

স্থানীয় প্রশাসন সূত্রে খবর, গুঁড়িয়ে গিয়েছে ১২ হাজার ঘর বাড়ি। ক্ষতিগ্রস্ত ৩০ হাজারের বেশি। বন্ধ হয়ে গিয়েছে যানবাহন, বিদ্যুৎ সরবরাহ, যোগাযোগ ব্যবস্থা। নিজে প্রাণে বাঁচলেও আত্মীয়দের খোঁজে হন্নে হয়ে ঘুরছেন অনেকেই। যেমন মা লিয়া। “লংতৌসান টাউনশিপে থাকে আমার ভাইয়ের পরিবার। ওরা কেউই ফোন ধরছে না। আশা করি সুরক্ষিতই রয়েছে ওরা”, কপালে দুশ্চিন্তের ভাঁজ তাঁর।

ভূমিকম্পের কিছুক্ষণের মধ্যেই শুরু হয়ে গিয়েছে উদ্ধারকাজ। লংতৌসান টাউনশিপের প্রশাসনিক কর্তা চেন গুয়ং বলেছেন, “বহু বাড়ি ভেঙে পড়েছে। বিশেষত পুরনো বসতবাড়িগুলি। আমরা মৃত এবং আহতদের সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ করার চেষ্টা করছি।” ৩৯২ জন উদ্ধারকারীর দল এবং ১২টি পুলিশ কুকুর পাঠানো হয়েছে ঘটনাস্থলে।

ভূমিকম্পের আগে ধস নেমে লংতৌসান টাউনশিপে যাওয়ার প্রধান রাস্তাটি প্রায় বন্ধ হয়ে যাওয়ায় উদ্ধারকাজে সমস্যা দেখা গিয়েছে। ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্তদের সহায়তার জন্য ২ হাজার তাঁবু, ৩ হাজার ফোল্ডিং খাট, ৩ হাজার লেপ এবং ৩ হাজার পোশাক পাঠানো হয়েছে। উদ্ধারকাজে সহায়তাকারী মা হাও নামে এক কলেজ পড়ুয়া বলেছেন, “বহু দেহ ধ্বংসস্তুপের তলায় চাপা পড়ে রয়েছে। ভেঙে পড়া সিমেন্টের চাঙড়ের তলা থেকে বার করা হয়েছে ৪০ জন আহতকে। কিন্তু মৃতদেহের দিকে নজর দেওয়ার সময় নেই আমাদের। আগে জীবিতদের সাহায্য করা প্রয়োজন।” আজই ভূমিকম্প হয় ভারত নেপাল সীমান্তেও।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement