—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
‘আড্ডা’র দুর্গাপুজো পড়ল এ বার পঞ্চম বছরে। ব্রিটেনে ‘আড্ডা’ই প্রথম পুজো, যা কলকাতার মতো প্যান্ডেলে হয়। লন্ডন থেকে একটু দূরে, বার্কশায়ারের এই ছোট্ট শহরে ‘আড্ডা’র যাত্রা শুরু ২০১৩ সালে। সে বছরই হয় সরস্বতী পুজো, ২০১৬ সাল থেকে শুরু হয় কালীপুজো ও ২০১৯ থেকে দুর্গাপুজোর আয়োজন করছেন এখানকার বাঙালিরা।
প্যান্ডেল ছাড়াও বহির্বিশ্বে বাঙালির কৃষ্টি ও স্থাপত্য দেখানোর জন্য প্রতি বছর এক বিশেষ উদ্যোগ নেওয়া হয়। তৈরি করা হয় ‘আড্ডা গেট অব জয়’। বাংলার শিল্পীরা এই ফটক তৈরি করেন, যা বসানো হয় পুজোর প্যান্ডেলের মুখে। গত কয়েক বছর ধরে এখানে অগ্রদ্বীপ বর্ধমানের কাঠের পুতুল, পশ্চিম মেদিনীপুরের নয়াগ্রামের পটচিত্র, দক্ষিণ দিনাজপুরের কুশমান্ডির বাঁশের মুখোশ, শান্তিনিকেতনের শোলার কাজ ও পুরুলিয়ার ছৌ মুখোশের ব্যবহার করে এই ফটক বানানো হয়। এ বারের বিশেষ আকর্ষণ চন্দননগরের আলোকসজ্জা।
এই পুজো বিখ্যাত তার খাওয়াদাওয়ার জন্য। কলকাতা ও বাংলার জনপ্রিয় পদগুলি ছাড়াও নানা ভারতীয় খাবারদাবারও পাওয়া যায়। লুচি, কচুরি, কাঠি রোল, মোগলাই পরোটা, কষা মাংস, চাউমিন, চিলি চিকেন, বিভিন্ন ধরনের চপ— সব ধরনে রসনা তৃপ্তির ব্যবস্থা থাকবে। আড্ডার অন্যতম আকর্ষণ বাংলাদেশের খাবার। তাই কলকাতার বিরিয়ানি সঙ্গে টক্কর নিতে ঢাকার কাচ্চি বিরিয়ানিও থাকবে। পাওয়া যাবে পদ্মার ইলিশ ও নানা মাছের পদও। মিষ্টিতে থাকবে রাবড়ি, রসগোল্লা, পান্তুয়া, রসমালাই ইত্যাদি।
আড্ডায় গত বছর ২০,০০০ মানুষ সমাগমের পরে এ বছর আরও দর্শনার্থীও আসছেন, শুধু ব্রিটেনই নয়, পার্শ্ববর্তী নানা দেশ থেকেও। এই পুজোর আরও একটি আকর্ষণ হল বিজয়া সম্মিলনী যা ‘বিজয়ার আড্ডা’ নামে খ্যাত। দেশ থেকে নানা শিল্পী এসে এই আড্ডা জমিয়ে রাখেন।
আড্ডার প্যান্ডেল সজ্জায় থাকে পুরো ভারতের উপস্থিতি। আমরা এই ভারতীয় ঐতিহ্য পরবর্তী প্রজন্মের মধ্যে ছড়িয়ে দিতে
বদ্ধপরিকর। এ বছর শিশুদের জন্য থাকছে অন্যতম আকর্ষণ বাংলার গ্রামীণ মেলা। নাগর দোলা থেকে নানা ভাজাভুজি এই মেলাকে আকর্ষণীয় করে তুলবে।
এ বাবেই ছোট-বড় সকলে মিলে পুজোর ক’টা দিন আড্ডা-মুখরিত হয়ে উঠবে।