প্রতীকী ছবি।
অনেক বছর ধরেই আমেরিকার আনাচে-কানাচে প্রবাসী বাঙালিরা মহাসমারোহে দুর্গাপুজো পালন করে আসছেন। গত বছর ছিল ব্যতিক্রম। করোনা ভাইরাসের দাপটে সারা বিশ্বের মতো আমেরিকাও ছিল নিষেধাজ্ঞার ঘোরটোপে আটক। এই বছর কিন্তু এ দেশে ছবিটা অনেকটাই আলাদা। বছরের প্রথমেই জোরকদমে শুরু হয়েছে টিকাকরণ কর্মসূচি। সংক্রমণের মাত্রা যত কমেছে, এখানকার জনজীবন ততই স্বাভাবিক হয়েছে। ওয়াশিংটন ডিসি এলাকার বাঙালিরাও তাই উঠেপড়ে লেগেছেন এই বছর ‘স্বাভাবিক’ ভাবে দুর্গাপুজো উদ্যাপন করতে।
এই এলাকায় চারটি বারোয়ারি পুজো হয়। কিন্তু এ বছর দু’টি বারোয়ারি পুজো হচ্ছে। এ ছাড়া, আছে ওয়াশিংটন কালীবাড়ি আর বেদান্ত সোসাইটির দুর্গাপুজো। কালীবাড়ির পুজোয় দর্শনার্থীদের অনলাইনে আগে থাকতে সময় বুকিং করতে হয়, কোভিড টিকা প্রাপ্তির প্রমাণ দেখিয়ে মাত্র কুড়ি মিনিটের জন্যে মন্দিরে ঢোকার ব্যবস্থা থাকছে। বেদান্ত সোসাইটি পুজো সংক্রান্ত কোনও বিজ্ঞপ্তি এখনও নজরে আসেনি। ‘নর্দার্ন ভার্জিনিয়া বেঙ্গলি অ্যাসোসিয়েশন’ কোভিড বিধি মেনেই বেশ জাঁকজমক করেই পুজোর আয়োজন করছে। চারশো জন পর্যন্ত পুজোপ্ৰাঙ্গণে থাকতে পারবেন। স্থানীয় বাঙালিরাও যেন অপেক্ষাতেই ছিলেন, তাই অনলাইনে রেজিস্ট্রেশন শুরু হওয়ার দিন কয়েকের মধ্যেই বুকিং শেষ! এই পুজোর অন্যতম আকর্ষণ পেট পুজো। আয়োজকেরা এ বছর আয়োজনের কোনও কমতি রাখেননি। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের জন্য দেশ থেকে শিল্পীও আসছেন।
পিছিয়ে নেই ওয়াশিংটন ডিসি এলাকার সব থেকে পুরনো বাঙালি সমিতি ‘সংস্কৃতি’। এ বছর একান্ন বছরে পা দিল এই পুজো। এখানেও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, কোভিডবিধি মেনে চারশো জনের বেশি সমাগম সম্ভব নয়। পুজোপ্ৰাঙ্গণে মেনে চলতে হবে কোভিড সংক্রান্ত সমস্ত সরকারি বিধি। তবে সশরীর পুজোপ্ৰাঙ্গণে উপস্থিত না হতে পারলেও অসুবিধা নেই, ঘরে বসে অনলাইনে সরাসরি দেখা যাবে পুজোর খুঁটিনাটি সব কিছু। সংস্কৃতির পুজোর অন্যতম আকর্ষণ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। প্রতি বছর স্থানীয় বাঙালিরা পুজোয় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান করেন, কলকাতা থেকেও বহু শিল্পীকে আমন্ত্রণ জানানো হয়। এ বছরও তার ব্যতিক্রম হচ্ছে না। তবে ভিড়ে ঠাসা অডিটোরিয়ামে বসে অনুষ্ঠান দেখা সম্ভব নয়। তাই ‘নিউ নর্মালকে’ মেনে নিয়ে সমস্ত অনুষ্ঠান করা হচ্ছে অনলাইনে। স্থানীয় শিল্পীরা ভিডিয়ো তুলে পাঠিয়ে দিচ্ছে সংস্কৃতি কমিটির কাছে। ওয়াশিংটন ডিসি এলাকার বাঙালির ঘরে
ঘরে কলকাতার শিল্পীরাও উপস্থিত হচ্ছেন ‘ভার্চুয়ালি’।
আর মাত্র এক সপ্তাহ! সমস্ত প্রতিকূলতাকে জয় করে আমরা নিশ্চয়ই পারব, মাকে আবার আমাদের মাঝে নিয়ে আসতে।