প্রতীকী ছবি।
বাঙালিয়ানাকে লালন করায় প্রবাসী বাঙালির অসীম উৎসাহ। বাংলার নানা রীতি-রেওয়াজকে সে খড়কুটোর মতো আঁকড়ে থাকে, আর দুর্গাপুজো তো হিন্দু বাঙালির সব থেকে সেরা উৎসব। দুর্গাপুজো নিয়ে প্রবাসী বাঙালির আবেগ ও রোমাঞ্চ অপরিসীম। প্রবাসে দুর্গাপুজো তাদের কাছে একটা আত্মমর্যাদার ‘ইভেন্ট’। সিডনির বাঙালিও এর বাইরে নয়। দেশ থেকে এত দূরে বসেও বছর বছর দুর্দান্ত দুর্গাপুজো করি বলে আমরা একটা আত্মশ্লাঘাতেও ভুগি।
কিন্তু সেই শ্লাঘাতেই এ বার আলকাতরা লেপে দিয়েছে কোভিড-১৯। জীবনে কোনও বছর দুর্গাপুজোয় যা হয়নি, এ বার সেটাই হবে। ঠাকুরের মুখ দেখতে হবে অনলাইনে! কারণ, এ বার সিডনিতে ভার্চুয়াল দুর্গাপুজো। কিন্তু, কাকেই বা দোষ দেব! অনলাইনে প্রতিমা দেখলে প্রাণটা তো রক্ষা পাবে! সে ভাবেই মনকে বোঝাচ্ছি।
অস্ট্রেলিয়ার সব থেকে জনবহুল শহর সিডনিতে প্রতি বছর ছোট-বড় মিলিয়ে অন্তত ৮টা পুজো হত। এ বার একটিমাত্র পুজো হচ্ছে, তা-ও ‘ভার্চুয়াল’। পুজো হবে এক জন সদস্যের বাড়িতে। তার পরে ফেসবুক লাইভে প্রতিমা দর্শন ও অঞ্জলি। সিডনিতে আর কোনও বারোয়ারি পুজোই হচ্ছে না বলে শুনেছি। এখানকার রামকৃষ্ণ মিশন অবশ্য খুব নিষ্ঠা সহকারে প্রতিবার দুর্গাপুজো করে। এ বারও করছে। তবে এক সঙ্গে ২০ জনের বেশি দর্শনার্থী ঢুকতে দেওয়া হবে না সেখানে। এবং এর মধ্যেই দর্শনার্থী হওয়ার রেজিস্ট্রেশনও শেষ হয়ে গিয়েছে। কোভিড-১৯ পরিস্থিতিতে আমাদের এই প্রদেশে এখনও দেড় মিটার পারস্পরিক দূরত্ব বজায় রাখার নিয়ম জারি রয়েছে। তা ছাড়া, ২০ জনের বেশি জমায়েত নিষিদ্ধ। নিষেধ অমান্য করলে ১১ হাজার অস্ট্রেলিয়ান ডলার (প্রায় ছ’লক্ষ টাকা) জরিমানা বা ছ’মাসের জেল।
কাজেই, ভার্চুয়াল পুজো ছাড়া আর উপায় কী! এখন মনে হচ্ছে দু’মাস পরে সান্টা ক্লজও আসবে সামাজিক দূরত্ব-বিধি মেনে!