সব শর্ত মেনে নেওয়ার পরেও ভারত বিশ্বের পরমাণু শক্তিধর দেশগুলির সবচেয়ে শক্তিশালী জোট নিউক্লিয়ার সাপ্লায়ার্স গ্রুপ (এনএসজি)-এর সদস্য হতে পারেনি শুধু চিনের বাধায়।
কোনও রাখঢাক না রেখে বৃহস্পতিবার এ কথা বলেছেন মার্কিন বিদেশ মন্ত্রকের দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়া সংক্রান্ত বিভাগের প্রিন্সিপাল ডেপুটি অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি অ্যালিস ওয়েলস।
ওয়েলসের কথায়, ‘‘যত বারই ভারতের সামনে এনএসজি-র সদস্য হওয়ার সুযোগ এসেছে, তত বারই ভেটো দিয়েছে চিন। আর তাতেই বার বার এনএসজি-র দরজাটা ভারতের সামনে বন্ধ হয়ে গিয়েছে। অথচ আমরা (আমেরিকা) বার বার জোরালো সমর্থন করেছি ভারতকে।’’
শুধু আমেরিকাই নয়, এনএসজি-র সদস্য পদ পাওয়ার জন্য ভারতকে বার বার জোরালো ভাবে সমর্থন করেছে বেশ কয়েকটি পশ্চিমী দেশ-সহ ৪৮ সদস্যের ওই জোটের বেশির ভাগ রাষ্ট্রই।
আরও পড়ুন- এনএসজি নিয়ে চিনের মন গলাতে চায় ভারত
তার পরেও কেন শুধু চিনের ভেটোয় ভারতের সাধ পূর্ণ হচ্ছে না? ওয়েলস তারও উত্তর দিয়েছেন। বলেছেন, ‘‘এনএসজি জোটের নিয়মটাই হল, কোনও বিষয়ে সব সদস্য একমত না হলে সে ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া সম্ভব হয় না।’’
চিন বার বার বাগড়াটা দিয়ে যাচ্ছে কোন অজুহাত দেখিয়ে?
মার্কিন বিদেশ মন্ত্রকের দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়া সংক্রান্ত বিভাগের প্রিন্সিপাল ডেপুটি অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি ওয়েলস জানিয়েছেন, যত বারই এনএসজি-তে ভারতকে সদস্য হিসেবে নেওয়ার জোরালো দাবি উঠেছে আর সেই দাবি সংখ্যাগরিষ্ঠের সমর্থন জোগাড় করতে সক্ষম হয়েছে, তখনই চিন বলেছে, ভারতকে সদস্যপদ পেতে হলে পরমাণু নিরস্ত্রীকরণ চুক্তি (এনপিটি)-তে সই করতে হবে। ভারত এখনও ওই চুক্তিতে সই করেনি, তার কয়েকটি শর্ত তার পক্ষে মেনে নেওয়া সম্ভব নয় বলে। আর এনপিটি-তে ভারত সই করেনি, এই যুক্তিতেই এনএসজি-তে ভারতের সদসস্যপদ পাওয়ার প্রস্তাবে বার বার ভেটো দিয়ে যাচ্ছে চিন।
আরও পড়ুন- অভিজাত পরমাণু ক্লাবে সদস্য ভারত
ভারতের পাশেই থাকার আশ্বাস আমেরিকার
ওয়েলস এও জানিয়েছেন, এর পরেও আমেরিকা জোর চেষ্টা চালাবে ভারতকে এনএসজি-র সদস্য করানোর। তার জন্য বেজিংকেও বোঝানোর চেষ্টা করা হবে।
তবে এনএসজি-র পূর্ণ সদস্য না হওয়ার জন্য ভারতের যাতে তেমন কোনও অসুবিধা না হয়, সে জন্য ভারতকে ওয়াশিংটন ‘স্ট্র্যাটেজিক ট্রেড অথরাইজেশন (এসটিএ-১)’-এর তালিকায় এনেছে বলে ওয়ে়লস জানিয়েছেন। ওই তালিকায় আসার ফলে, এনএসজি-র সদস্য না হতে পারলেও ভারত সামরিক ক্ষেত্রে আমেরিকার অনেক কাছে চলে এল বলে মনে করছেন প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞরা।